Advertisement
E-Paper

Bengal Polls: ‘নির্ভয়ে ভোট’, শুনে হাসছেন ভোটারেরা

নিশ্চিন্তে ভোট দেওয়ার কথা বলতেই বর্ধমান শহরের এক এক ভোটদাতা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বললেন, ‘‘২০১১-র পরে, আমাদের এলাকার অনেকেই ভোট দিতে পারেননি।''

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০৮:০৮
 বর্ধমানে টহল।

বর্ধমানে টহল। —নিজস্ব চিত্র

নিশ্চিন্তে ভোট দেওয়ার কথা বলতেই বর্ধমান শহরের এক এক ভোটদাতা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বললেন, ‘‘২০১১-র পরে, আমাদের এলাকার অনেকেই ভোট দিতে পারেননি।’’ টহল চলাকালীন জওয়ানদের কাছে রায়নার এক বৃদ্ধার ক্ষোভ, “শেষ কবে ভোট দিয়েছি, মনে করতে পারছি না।’’ মঙ্গলকোটের এক বাসিন্দার আক্ষেপ, ‘‘ভোট দিতে গিয়ে শুনেছি ভোট পড়ে গিয়েছে।’’ বর্ধমানের পিরবাহারাম, কাটোয়া, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, মেমারি, রায়না, খণ্ডঘোষ এবং পূর্বস্থলী-সহ পূর্ব বর্ধমানের ‘সন্ত্রস্ত’ এলাকায় টহল দিতে গিয়ে ভোটারদের ‘নিরাপত্তাহীনতার’ এমন ছবিই তাঁদের কাছে অনেক ভোটদাতা তুলে ধরেছেন বলে দাবি আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের একাংশের।

‘নিজের ভোট নিজে দিন’— এই বার্তা দিতে বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে বাহিনী। ‘নির্ভয়ে’ ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বাহিনীর সঙ্গে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশকর্তারা। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তাঁদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ‘নির্ভয়ে’ ভোট দেওয়ার কথা শুনে কেউ ‘মুচকি হেসেছেন’, কেউ পাশ কাটিয়েছেন। কেউ আবার চুপ থাকছেন। তবে অনেক ভোটদাতা ‘ক্ষোভ’ উগরে দিয়েছেন। যদিও জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, ‘‘আমাদের রাজ্যে গণতন্ত্র রয়েছে বলেই ভোটাররা মুখ খুলতে পারছেন। ভোটাররা নির্ভয়েই ভোট দেবেন।’’

কয়েকটি এলাকায় আধা-সামরিক বাহিনীর সঙ্গে পথে নেমেছেন জেলাশাসক মহম্মদ এনাউর রহমান এবং পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। গলসির মতো যে সব এলাকায় ধারাবাহিক ‘অশান্তি’ হয়েছে, সে সব জায়গায় প্রশাসনের ওই দুই শীর্ষকর্তা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে টহল দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় ছ’কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী রয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, “টহলদারির ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হচ্ছে। জিপিএস চালু রেখে ছবি তোলা হচ্ছে। সেই ছবি প্রতিদিন নিয়ম করে নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে তোলা হচ্ছে।’’

আধিকারিকদের দাবি, বেশিরভাগ জায়গাতেই ভোটাররা জানিয়েছেন, তাঁরা ‘সন্ত্রস্ত’ নন। ভোটের আগে অশান্তি পাকাতে পারে, এমন লোকজনদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। কিন্তু অতীতে ভোটের দিনের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ উঠতেই মুখ বেজার করছেন ভোটারদের একাংশ। শান্তিতে ভোট দেওয়ার আহ্বান শুনে কেতুগ্রাম, রায়না, জামালপুর, মঙ্গলকোট-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাসিন্দারা কার্যত ‘রে রে’ করে উঠেছেন বলে জানাচ্ছেন জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক।

শক্তিগড়ের হাটগোবিন্দপুর এলাকায় চায়ের দোকানে বসে এক জওয়ান জানতে চেয়েছিলেন, সেখানে ভোট কী ভাবে হয়। জবাবে এক মহিলা বলেন, “সে কথা সকলেই জানেন। ভরা বাজারে কেউ মুখ খুলে কি বিপদ ডেকে আনবে?’’

বর্ধমান শহরের ইছালাবাদ, গোদা, পিরবাহারাম, রেল কলোনির মতো ‘সন্ত্রস্ত’ জায়গার বেশ কয়েকজন ভোটার জওয়ানদের জানিয়েছেন, ২০১১-র পরে তাঁরা ভোট দিতে পারেননি। তবে এ বার অনেক আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসায় তাঁদের আশা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা ভোট দিতে পারবেন। পুলশের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছে, সুরক্ষায় কোথাও কোনও ‘ফাঁক’ রাখা হচ্ছে না। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ‘সন্ত্রস্ত’ এলাকায় প্রায় হাজারখানেক ভোটারের বাড়ি গিয়েছে বাহিনী। তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কমিশনে সেই মর্মে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক দিন ৩৬টি এলাকায় বাহিনী টহল দিচ্ছে।

West Bengal Assembly Election 2021
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy