Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মা-ছেলের রহস্য মৃত্যু কেষ্টপুরে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা বিজয়লক্ষ্মী রেড্ডি (২৬) ও তাঁর চার বছরের শিশুপুত্রকে বাগুইআটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকেই খবর পায় থানা। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।

সোনুদের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

সোনুদের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

কেষ্টপুরে মা ও ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এই জোড়া মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছুই জানায়নি পুলিশ। রবিবার রাত পর্যন্ত হয়নি কোনও অভিযোগও। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে রহস্যের জট খোলার চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা বিজয়লক্ষ্মী রেড্ডি (২৬) ও তাঁর চার বছরের শিশুপুত্রকে বাগুইআটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকেই খবর পায় থানা। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
মৃতার স্বামী সোনু রেড্ডিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বয়ানে অসঙ্গতি দেখা দেওয়ায় তাঁকে আটক করে পুলিশ। পাশাপাশি, ওই বাড়ির এক পরিচারককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। যদিও মা ও ছেলের মৃত্যু কী ভাবে হল, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ পুলিশ। বলা হয়েছে, ময়না-তদন্তের পরেই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, সোনুর পরিবার সচ্ছল ছিল। বাড়ির অন্দর ও বাইরের সাজই তার যথেষ্ট পরিচয় দেয়। তাঁদের আদি বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশে হলেও এর আগে হাওড়ায় থাকত ওই পরিবার। সেখান থেকেই বছর আড়াই আগে কেষ্টপুরে আসেন তাঁরা। বছর ৩২-এর সোনু সাবমার্সিবল পাম্পের ব্যবসা করেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ওই বাড়িতে সোনু ও তাঁর স্ত্রী-পুত্র ছাড়াও থাকতেন সোনুর বাবা ও এক মহিলা আত্মীয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ঘটনার পর থেকে সোনুর বাবা ও সেই মহিলা আত্মীয়কে আর এলাকায় দেখা যায়নি। পুলিশ জানায়, মৃতা বিজয়লক্ষ্মীর বাড়িও অন্ধ্রপ্রদেশে। সেখানে তাঁর পরিজনেদের কাছে খবর গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার কিছু আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। ঘরে গিয়ে দেখেন বিছানায় শুয়ে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পুত্র। দু’জনের মুখ থেকেই গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। এর পরে দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মা ও ছেলেকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সাধারণত সোনু বাড়ি ফিরতেন অনেক রাতে।
শনিবার সন্ধ্যায় তাঁকে হন্তদন্ত হয়ে ফিরতে দেখা যায়। এর পরেই একটি গাড়িতে প্রথমে স্ত্রীকে নিয়ে বেরোন তিনি। একটু পরে গাড়ি ফের বাড়ির সামনে আসে। তখন ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানেই রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সোনু কি স্ত্রী ও পুত্রের অসুস্থতার খবর পেয়েই বাড়ি ফিরেছিলেন? সেই সব প্রশ্নের এখনও সদুত্তর মেলেনি বলেই জানাচ্ছে পুলিশ। তবে সূত্রের খবর, মৃত্যুর নেপথ্যে বিষক্রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময়ে বাড়িতে সোনুর বাবা এবং পরিচারক ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে সোনুর সেই মহিলা আত্মীয় তখন বাড়িতে ছিলেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

পুলিশ জানায়, মৃতার ঘর থেকে বিছানার চাদর, গ্লাস-সহ বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হতে পারে।

পরিবারের মধ্যে কোনও গোলমাল ছিল কি না, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। তার জন্য একে একে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ওই বাড়ির সব সদস্যকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kestopur Mysterious Death কেষ্টপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE