Advertisement
১৯ মে ২০২৪

শুভেচ্ছা বনাম কুপনের তরজা

একটি দলের বিরুদ্ধে নববর্ষের শুভেচ্ছার চিঠি বিলি করার সময় ভোটের প্রচার করার নালিশ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলকে সাহায্য করার আবেদন জানিয়ে চাঁদা তোলার।

এই কুপন ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

এই কুপন ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪৯
Share: Save:

একটি দলের বিরুদ্ধে নববর্ষের শুভেচ্ছার চিঠি বিলি করার সময় ভোটের প্রচার করার নালিশ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলকে সাহায্য করার আবেদন জানিয়ে চাঁদা তোলার।

মালবাজার বিধানসভায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল বনাম সিপিএম জোটের। তারই মধ্যে দুই দল পরস্পরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলি তুলেছে। বামেদের নালিশ, তৃণমূল পরিচালিত মালবাজার পুরসভা বাড়ি বাড়ি খামে করে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠাচ্ছে। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সঙ্গে লেখা রয়েছে “উন্নয়নের পথে প্রগতির সাথে”। দলটিতে পুরকর্মীদের এক দু’জনকে যেমন দেখা যাচ্ছে, তেমনই দলের কর্মীরাও রয়েছেন। সিপিএমের অভিযোগ, পুরসভার শুভেচ্ছা কার্ড বিলির নাম করে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলকর্মীরা।

তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম চাঁদার কুপন বিলি করছে। শাসক দলের দাবি, সিপিএম আসলে কৌশলে নিজেদের প্রতি সহানুভূতি বাড়ানোরই চেষ্টা করছে। তৃণমূলের আরও দাবি, নির্বাচনের ঠিক আগে পকেট ভরতেই সিপিএম এই কৌশল নিয়েছে।

১৯৫২ সালের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাস থেকে মালবাজারে বামেরা কখনো হারেনি। কিন্তু বামেদের রক্তচাপ বাড়িয়ে গত লোকসভাতে শুধু মালবাজার পুরএলাকাতেই প্রায় ২৫০০ ভোটে এগিয়ে যায় তৃণমূল। এরপর গত ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশ থেকেই মালবাজারের সিপিএম বিধায়ক বুলু চিক বরাইক তৃণমূলে যোগ দেন। এ বারে সেই বুলুই তৃণমূলের প্রার্থী।

তৃণমূলের দাবি, এই অবস্থায় মানুষের আবেগকে কাজে লাগাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলের দৈন্যদশার কথা প্রচার করে কুপন দিয়ে চাঁদা তোলার কৌশল নিয়েছে সিপিএম। তবে সিপিএমের মালবাজার জোনাল কমিটির সম্পাদক মিন্টু রায় বলেন, ‘‘আমরা গরিব মেহনতি মানুষদের নিয়ে দল করি। আমাদের তৃণমূলের মতো অগাধ অর্থ নেই। সে জন্যেই এই কুপন বিলি, এতে তো কোনও অন্যায় নেই।’’ সিপিএমের জলপাইগুড়ির জেলা কমিটির নেতা চানু দে-র কথায়, ‘‘মানুষের থেকে ভোট চাইছি আবার টাকাও চাইছি, যে যেমন পারছেন দিচ্ছেন। কারণ আমাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই।’’

তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের প্রচার করার জন্যে মালবাজার পুরসভা কার্ড ছাপিয়েছে। পুরসভার সেই কার্ড যুব তৃণমূলের নেতাদের দিয়ে বিলি করানো হচ্ছে। এটা অন্যায়। নববর্ষের আড়ালে পুরসভা এ কাজ করতে পারে না।’’

সিপিএমের এই অভিযোগ উড়িয়ে মালবাজারের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা জানান, প্রতি বছরই নববর্ষে পুরসভা শুভেচ্ছা জানায়। তৃণমূল পুরসভার ক্ষমতায় আসার আগে অন্য দলের পুরবোর্ডও শুভেচ্ছা কার্ড বিলি করেছে। তাই এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই বলেই তাঁরা মনে করেন। পুরসভার কার্ড নিয়ে যুব তৃণমূলের কেউ যাচ্ছেন না বলেও পাল্টা দাবি করেছেন জলপাইগুড়ি যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, যেখানে যুব তৃণমূল নিজেরাই কার্ড ছাপিয়ে বিলি করতে পারে, সেখানে তাঁরা কেন পুরসভার কার্ড নিয়ে যাবে? তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএম পরাজয় নিশ্চিত জেনে আগামী ৫ বছরের জন্যে তহবিল গড়তেই কুপন নিয়ে টাকা সংগ্রহে নেমেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 mamata bandopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE