Advertisement
১৭ মে ২০২৪
skin

সোরিয়াসিস নিয়ে ভুল ধারণা কাটিয়ে এই সব মানলেই থাকবেন সুস্থ

সোরিয়াসিসের প্রকৃতি ও তা কব্জায় রাখার উপায় বাতলালেন বিশেষজ্ঞ।

সোরিয়াসিসে খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনে কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখলেই সুস্থ জীবন কাটাতে পারেন রোগী। ছবি: আইস্টক।

সোরিয়াসিসে খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনে কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখলেই সুস্থ জীবন কাটাতে পারেন রোগী। ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ১২:১১
Share: Save:

ত্বকের বেশ কিছু অসুখের সঙ্গে মনের সম্পর্ক গভীর। জিনগত কারণ ছাড়াও মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তাও কিছু কিছু ত্বকের সংক্রমণকে উস্কে দেয়। সোরিয়াসিস তার মধ্যে অন্যতম। এই অসুখে শরীরের বিভিন্ন অংশে গোল গোল ও এবড়োখেবড়ো চাকার মতো দাগ তৈরি হয় ও সেখানকার ত্বক থেকে মাছের আঁশের মতো খোসা উঠতে থাকে। জায়গাটা খসখসে হয়ে যায় ও চুলকাতে থাকে। ধীরে ধীরে এই অসুখে আক্রান্ত স্থানের রং বদল হয়। লালচে হয় কখনও, কখনও একটু কালচে ছোপের মতো দেখায়। কারও ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থান একটু ফুলে যায়। কারও ক্ষেত্রে চামড়া ফেটে রক্ত বা পুঁজও বেরতে পারে। তবে বাড়াবাড়ি না হলে এমনটা হয় না।

সাধারণত, চামড়ার নীচের স্তর থেকে উপরে উঠে আসতে কোষ ২৮ দিন মতো সময় নেয়। কিন্তু সোরিয়াসিসের বেলায় এই সময় কমে ৪-৫ দিনে চলে আসে। তাই কোষগুলি পূর্ণতা পায় না এবং সিলভারি স্কেল তৈরি করে। বিশেষ করে হাত-পায়ের তালু, কনুই, হাঁটু, মাথার ত্বক এই অসুখে আক্রান্ত হয়। অনেক সময় নখেও নানা বিকৃতি দেখা যায়।

ত্বক বিশেষজ্ঞ কৌশিক কুমার লাহিড়ির মতে, সোরিয়াসিস নিয়ে আজও কিছু ভুল ধারণা আমাদের রয়েছে। সোরিয়াসিসের প্রকৃতি ও তা কব্জায় রাখার উপায় বাতলালেন তিনি। কৌশিকবাবুর মতে, ‘‘সোরিয়াসিস নিয়ে অনেকেরই ভয়, এটি সংক্রামিত ভেবে। এ ধারণা একেবারেই বুল। এই অসুখ ছোঁয়াচে নয়। এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, রক্তের আদানপ্রদান, যৌন সম্পর্ক কোনও ভাবেই এই অসুখ ছড়ায় না। তবে এ অসুখ একেবারে নির্মূলও হয় না। কিন্তু কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকে সম্পূর্ণ।

আরও পড়ুন: বর্ষায় এটুকু যত্ন নিয়ে রাখলেই পুজোয় চুলের ফ্যাশনে এগিয়ে আপনিই!

লিভারের নানা সমস্যা থেকেও ত্বকের অসুখ বাড়ে। তাই যে কোনও ত্বকের অসুখেই কিছুটা খাওয়াদাওয়ার বিধিনিষেধ থাকে। সোরিয়াসিসে খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনে কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়। সে সব মেনে চললেই আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবন কাটাতে পারেন রোগী।

চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই সাজান জীবনযাপনের ছক।

সোরিয়াসিস হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এঁদের ক্ষেত্রে নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল খুব ভাল কাজে আসে। স্নানের আগে সারা শরীরে মেখে নিন এই দুই তেলের যে কোনও একটি। ত্বক কখনও শুকনো রাখা যাবে না। তবে গ্লিসারিন এড়িয়ে চলুন। বাজারচলতি ত্বক উজ্জ্বল করার ক্রিম, লোশন একেবারেই চলবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যবহার করতে হবে ময়শ্চারাইজার। স্টেরয়েড আছে এমন কোনও উপকরণ সরাসরি ত্বকের লোশন বা ক্রিম লাগাবেন না। অ্যালার্জি আছে এমন কোনও খাবার না খাওয়াই ভাল, এতে ত্বকের প্রদাহ বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন: ডায়েটে নেই একটুও স্ট্রবেরি? অজান্তেই এ সব ক্ষতি করছেন

বাইরে থেকে ফিরে ভাল করে হাত-পা ধুয়ে ময়শ্চারাইজার লাগাতে হবে। বর্ষায় জমা জল পায়ে লাগলেও ভাল করে পা পরিষ্কার করতে হবে। চামড়ার দ্রব্য অনেক সময় ত্বকের পক্ষে ভাল হয় না। তাই সোরিয়াসিসের রোগী খাঁটি চামড়ার জুতো বা ব্যাগ ব্যবহার না করে চামড়া মিশ্রিত ফোম, পাট বা অন্য উপাদানের জিনিস ব্যবহার করুন। হাত-পায়ের ত্বকে অসুখের প্রভাব থাকলে খুব গাঢ় রঙের জুতো বা ব্যাগ না ব্যবহার করাই ভাল। সাবান ও শ্যাম্পুও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যবহার করতে হবে। অসুখ নিয়ন্ত্রণে আসার পর অনেকে ওসুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। এমন করলে রোগীর শরীরে ক্ষতি তো হয়ই, উল্টে রোগ আবার বেড়ে যেতে পারে। তাই ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। শীতকালে অসুখের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তাই শীতে খাওয়াদাওয়া ও ত্বকের যত্নে বাড়তি সতর্ক হতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE