Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মেডিক্যালে তাণ্ডব জুনিয়র ডাক্তারদের

মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বিরুদ্ধেই এ বার হাসপাতালের ভেতরে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ সুপারের ঘরে দাবি জানাতে গিয়ে ভাঙচুর, নথিপত্র তছনছের পাশাপাশি ডেপুটি সুপার বিশ্বনাথ দাসকে মারধর করে বলেও অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ভর্তি করা হয়েছে।

ভাঙচুরের পর লন্ডভন্ড সুপারের ঘর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

ভাঙচুরের পর লন্ডভন্ড সুপারের ঘর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০১:৫১
Share: Save:

মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বিরুদ্ধেই এ বার হাসপাতালের ভেতরে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ সুপারের ঘরে দাবি জানাতে গিয়ে ভাঙচুর, নথিপত্র তছনছের পাশাপাশি ডেপুটি সুপার বিশ্বনাথ দাসকে মারধর করে বলেও অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনার পর মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার যুগল কর বলেন, “অনভিপ্রেত ঘটনা। প্রত্যেক হাসপাতালেই কিছু সুবিধা-অসুবিধা থাকে। কিন্তু কোনও কিছুর প্রতিবাদ করা মানে কাউকে মারধর করা নয়।” জুনিয়র ডাক্তাররা অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র ডাক্তার শুধু বলেন, “আমরা কথা বলতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডেপুটি সুপার উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাই গোলমাল বাধে। তবে এমন ঘটনা না ঘটলেই ভাল হত।”

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বচসা বাধে। পরিস্থিতি গড়ায় হাতাহাতিতে। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, চিকিত্‌সকেরা সময়মতো না আসায় যথাযথ পরিষেবা মেলে না। সংশ্লিষ্ট চিকিত্‌সক কেন সময়ে রোগীকে দেখতে আসেননি তা নিয়ে রোগীর পরিজনেরা প্রশ্ন তুললে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। পরে পুলিশি মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাত থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নিরাপত্তার দাবি তোলেন তাঁরা। সেই দাবি নিয়েই বৃহস্পতিবার দুপুরে জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধিদল হাসপাতালের অধ্যক্ষ তমালকান্তি ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে হাসপাতাল সুপার যুগল করের সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁরা। সুপার এ দিন হাসপাতালে ছিলেন না। জুনিয়র ডাক্তাররা তখন ডেপুটি সুপার বিশ্বনাথ দাসের কাছে অভিযোগ জানাতে যান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোড়াতেই বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। অভিযোগ, বচসা চলাকালীনই বিশ্বনাথবাবুর উপর চড়াও হন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁকে মারধর করা হয়। সেই সঙ্গে ডেপুটি সুপারের ঘরের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় জেরক্স, ফ্যাক্স মেশিন, সিসিটিভি। বিশ্বনাথবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে হেনস্থা হতে হয় হাসপাতালের কর্মী অচিন্ত্য পাঠককে। জুনিয়র ডাক্তাররা ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর ডেপুটি সুপারকে উদ্ধার করা হয়।

প্রহৃত ডেপুটি সুপার বিশ্বনাথ দাস।

হাসপাতালে এসেছিলেন মেডিক্যালের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি। তিনি বলেন, “কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার গুন্ডামি করেছে। এ সব বরদাস্ত করা হবে না।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অবধেশ পাঠক বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হবে।” মারধর ও গোলমালে অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ তমালকান্তি দাসও। তিনি বলেন, “জুনিয়র চিকিত্‌সকদের কর্মবিরতি তোলার অনুরোধ জানিয়েছি। দ্রুত কাজে যোগ না দিলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অবশ্য কাজে ফেরেননি জুনিয়র চিকিত্‌সকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vandalise medinipur medical junior doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE