Advertisement
১৭ মে ২০২৪
CAG and Tea Board

গবেষণা করেনি চা পর্ষদ, প্রকাশ সিএজি রিপোর্টে

চলতি বছরে আবহাওয়ার কারণেই চায়ের উৎপাদন ব্যাপক ভাবে মার খাচ্ছে। শুধু চলতি বছরই নয়, গত কয়েক বছরে একই পরিস্থিতি চলছে দেশের নানা প্রান্তে।

আবহাওয়া পরিবর্তনই চা শিল্পে গত কয়েকবছর ধরে প্রধান সমস্যা। কড়া রোদে জ্বলে যাচ্ছে চা পাতা।

আবহাওয়া পরিবর্তনই চা শিল্পে গত কয়েকবছর ধরে প্রধান সমস্যা। কড়া রোদে জ্বলে যাচ্ছে চা পাতা। জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে তোলা ছবি।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১৮
Share: Save:

ঠিক ১১ বছর আগে, সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি লোকসভায় পেশ করা রিপোর্টে জানিয়েছিল, আবহাওয়া বদলের সঙ্গে যুঝতে চা পর্ষদ তথা টি বোর্ডকে গবেষণা করতে হবে। তার পরে এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও, চা পর্ষদ সে গবেষণা করার সময় পায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএজি-র রিপোর্টে। সম্প্রতি চা পর্ষদর ভূমিকা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশ করেছে সিএজি। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত টি বোর্ডের পদক্ষেপ, নীতির মূল্যায়ন করা হয়েছে। সেখানে আবহাওয়ার পরিবর্তন নিয়ে টি বোর্ডের সক্রিয়তার কোনও প্রমাণ সিএজি পায়নি বলে দাবি করা হয়েছে।

চলতি বছরে আবহাওয়ার কারণেই চায়ের উৎপাদন ব্যাপক ভাবে মার খাচ্ছে। শুধু চলতি বছরই নয়, গত কয়েক বছরে একই পরিস্থিতি চলছে দেশের নানা প্রান্তে। চা বিষয়ে যে কোনও সভা-আলোচনাতেই বর্তমানে আবহাওয়া নিয়ে চর্চা চলছে। সিএজি পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছে, ১১ বছর আগে, ২০১২ সালে, লোকসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছিল।

‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, ‘‘খামখেয়ালি আবহাওয়াই আমাদের কাছে সব চেয়ে বড় বিপদ। কখনও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, কখনও হচ্ছেই না। কখনও চড়া রোদ, কখনও আবার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া। এর জেরে, চা গাছের সমস্যা হচ্ছে। পাতা-কুঁড়ি ভাল হচ্ছে না। এ ভাবে চললে চা শিল্প বাঁচানোই সমস্যার হয়ে উঠবে।’’

সিএজি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের আবহাওয়ার পরিবর্তন বোঝা যাচ্ছে অনাবৃষ্টি বা খরা পরিস্থিতি দেখে। দেশের বেশ কিছু প্রান্তে একটি সময়ে অনাবৃষ্টি বা খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত প্রায় দেড় দশক ধরে সে পরিস্থিতির মেয়াদ লম্বা হয়ে চলেছে। তার প্রভাব সরাসরি পড়ছে চা গাছে। চলতি বছরেও খরা পরিস্থিতি তথা দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে চা গাছের পাতা শুকিয়ে বা পুড়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতি সামলাতে পারে নির্দিষ্ট গবেষণা। দেশে যে ধরনের চায়ের চাষ হয়, তা ব্রিটিশ আমলের। সেই আবহাওয়া এখন আর নেই। সে কারণে চা গাছের প্রজাতি বদলানো প্রয়োজন বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। তার জন্য দরকার গবেষণা।

টি বোর্ডের বাণিজ্যিক প্রসার বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কিছু দিন আগে, নাগরাকাটার চা গবেষণা কেন্দ্রে একটি আলোচনা সভা হয়েছিল। সেখানে আবহাওয়া বদলের সঙ্গে চাষের পদ্ধতি বদলানো নিয়ে আলোচনা হয়।’’

ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বহু ছোট চাষি চা চাষে এগিয়ে আসছেন। দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়তে পারত। কিন্তু বাধ সেধেছে আবহাওয়া। আশা করি, চা পর্ষদ এ দিকে যথাযথ নজর দেবে।’’

টি বোর্ডের সদস্য পুরজিৎ বক্সীগুপ্ত বলেন, ‘‘চা শিল্প অদ্ভুত সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন কমছে, চাহিদাও কমছে। এর নেপথ্যে আবহাওয়ার বদল। টি বোর্ডের পরের সভায় এ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Tea Garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE