পারিবারিক বিবাদের জেরে ছেলে ও মেয়েকে বিষ খাইয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বাবা। বুধবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ওই ব্যক্তির দু’বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির নাম বিশ্বদীপ সরকার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিশ্বদীপের বাবা উত্তম সরকার ও ছয় বছর বয়সী দিদি রিতু রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার ধনকল গ্রাম পঞ্চায়েতের নসিরহাট এলাকায়।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই ব্যক্তি তাঁর দুই ছেলেমেয়েকে বিষ খাইয়ে খুনের চেষ্টা করে নিজে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। কোনও অভিযোগ না হওয়ায় আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে কোনও অভিযোগ পেলে বা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনে খুনের মামলা দায়ের করা হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তমবাবু ও তাঁর স্ত্রী ললনদেবী দিল্লিতে দিনমজুরির কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁরা সেখানেই বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করেন। মাস দুয়েক আগে ললনদেবী ছেলে বিশ্বদীপ ও মেয়ে রিতুকে নিয়ে কালিয়াগঞ্জের নসিরহাট এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে আসেন। কয়েকদিন পর শ্বশুর ভুদেববাবু ও শাশুড়ি ভালোমতিদেবীর কাছে দুই ছেলেমেয়েকে রেখে দিল্লিতে ফিরে যান ললনদেবী।
সন্তানদের কাছছাড়া করা নিয়েই উত্তমবাবুর সঙ্গে তাঁর গোলমাল শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। সেই গোলমাল চরমে উঠলে ললনদেবী বাপের বাড়িতে চলে যান। দু’ সপ্তাহ আগে উত্তমবাবু দুই ছেলেমেয়েকে নিতে নসিরহাটে নিজের বাড়িতে আসেন। ললনদেবীকে একাধিকবার ফোন করে বাড়িতে ডাকলেও তিনি আসেননি বলে অভিযোগ। বুধবার রাতে উত্তমবাবু প্রথমে ছেলে বিশ্বদীপ তারপর মেয়ে রীতুকে তরল কীটনাশক খাইয়ে খুনের চেষ্টা করেন। পরে নিজে ওই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
পাশের ঘর থেকে তাঁদের গোঙানির আওয়াজ শুনে উত্তমবাবুর বাবা ভুদেববাবু সেখানে গিয়ে দেখেন তাঁর ছেলে ও দুই নাতি নাতনি ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছটফট করছে। প্রতিবেশীদের সাহায্যে তিনি ছেলে ও দুই নাতি নাতনিকে উদ্ধার করে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভুদেববাবু বলেন, ‘‘উত্তমের সঙ্গে ওর স্ত্রীর ললনের কিছুদিন ধরে গোলমাল লেগে ছিল। সেই কারণেই, উত্তম ওইদিন ছেলে মেয়েকে খুনের চেষ্টা করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে আমাদের সন্দেহ। নাতিকে হারালাম। পুলিশে আর অভিযোগ জানিয়ে কী হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy