Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Cooch Behar

প্রশান্ত খুনে আঙুল উদয়নের দিকে

প্রশান্ত খুনে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের অবশ্য দাবি, তাঁরা রহস্য উন্মোচনের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন।

প্রশান্ত রায় বসুনিয়া খুনের তদন্তে এসে দিনহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি কল্যাণ গুরুংয়ের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। নিজস্ব চিত্র

প্রশান্ত রায় বসুনিয়া খুনের তদন্তে এসে দিনহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি কল্যাণ গুরুংয়ের সঙ্গে কথা বলছেন কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ , সুমন মণ্ডল 
কোচবিহার, দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৯:০৯
Share: Save:

কোচবিহারের দিনহাটার বিজেপি নেতা প্রশান্ত রায় বসুনিয়া খুনের ঘটনায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের দিকে আঙুল তুললেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। সোমবার তিনি প্রশান্তর বাড়িতে যান। সেখানেই তিনি দাবি করেন, উদয়ন গুহর অঙ্গুলিহেলনে ও নির্দেশে ওই খুন হয়েছে। উদয়ন পাল্টা বলেন, ‘‘ওঁকে কোনও কমিশনের চেয়ারম্যান নয়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি মনে হচ্ছিল। আসলে, যারা ওঁকে ওই পদে বসিয়েছেন, তাঁদের খুশি করতেই এমন মন্তব্য করেছেন। এ সব কথার কোনও গুরুত্ব নেই।’’ তাঁর পরিদর্শনের সময়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার হাজির না থাকায়, তাঁদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অরুণ। কোচবিহার পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা অবশ্য দাবি করেন, তফসিলি কমিশনের পরিদর্শনের সময়ে, সেখানে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে হাজির থাকতে হবে, এমন আইন নেই।

ঘটনা হল, প্রশান্ত খুনে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের অবশ্য দাবি, তাঁরা রহস্য উন্মোচনের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার এ দিন বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছি। তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। খুব দ্রুত অগ্রগতি জানানো হবে।’’

শুক্রবার দুপুরে দিনহাটার পুঁটিমারিতে ঘরে ঢুকে প্রশান্তকে গুলি করে খুন করে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, ওই সময়ে প্রশান্ত ছাড়াও বাড়িতে তাঁর মা, বাবা এবং এক মামাতো ভাই ছিলেন। প্রশান্তের বাবা অসুস্থ। গুলির শব্দে তাঁর মা ও ভাই ঘরে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে প্রশান্ত। মামাতো ভাই সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেন, ঘরে ছুটে যাওয়ার পরে তিনি বুঝতে পারেন, জানালার পাশ দিয়ে কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। ওই ঘটনায় তৃণমূলের বারো জনের নামে এফআইআর হয়েছে।

জাতীয় তফসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন দুপুরে ওই বাড়িতে পৌঁছন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘পরিবারের কাছে জেনেছি, রাজবংশী সম্প্রদায়ের একটি ছেলের সঙ্গে পেরে না ওঠায়, এখানকার বিধায়ক ও মন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনে কিছু দুষ্কৃতী ও পঞ্চায়েত প্রধান মিলে তাঁকে খুন করিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ক্ষমতায় আসার আগে, কোনও ঘটনা ঘটলে ছুটে যেতেন। আর দেড় মাসের মধ্যে ছ’টি খুন হল, কোথাও তিনি যাননি। কারণ, তিনি রাজনীতির বাইরে কিছু চিন্তা করেন না। গত দেড় মাসে ছ’বার জাতীয় কমিশনকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসতে হল। এটা দুঃখের বিষয়।’’

অরুণের আর এক দাবি, ‘‘ভারতীয় আইনে কমিশনের তদন্তের সময়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে উপস্থিত থাকতে হয়। কিন্তু ছয় জায়গার কোথাও কেউ ছিলেন না। এখানে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক আর নয়। তাঁদের দিল্লিতে ডাকা হবে। যদি না যান, সমন পাঠানো হবে। তার পরেও না এলে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে। আমার সঙ্গে অসহযোগিতা করলেন। কমিশনকে অসম্মান করলেন। তা নিয়েও এফআইআর হবে।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘এই কমিশন নতুন কিছু নয়। গত দু’বছরে ১৫১ বার কমিশন এসেছে রাজ্যে। আসলে ভোটে জিততে না পেরে, রাজ্যকে ছোট করে দেখানোর উদ্দেশ্যেই এই কমিশন পাঠানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar Dinhata Udayan Guha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE