শিলিগুড়িতে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে শিলিগুড়িতে নবাগতদের গুরুত্ব দিয়ে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দল সূত্রের খবর, কংগ্রেস ও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে গত দু’বছরের মধ্যে যাঁরা যোগ দিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। সোমবার বিকালে জলপাইগুড়ি থেকে দিলীপবাবু শিলিগুড়ি পৌছে হিলকার্ট রোডের জয়মণি ভবনে দলীয় নেতা, কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানেই সদ্য নির্বাচিত নতুন জেলা সভাপতি অরুণ প্রসাদ সরকারকে রেখেই নতুন জেলা কমিটির ঘোষণা করা হয়। কমিটির সহ সভাপতি থেকে সাধারণ সম্পাদক, যুব সভাপতি থেকে সম্পাদক বহু পদেই কংগ্রেস, তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতানেত্রীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি পদে সঙ্ঘ পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্টদেরও রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলার পর্যবেক্ষক হিসাবে বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীই আছেন।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বলেছেন, ‘‘নতুন বা পুরানো বলে কিছু নেই। সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে, চলতে হবে। বিজেপি শিলিগুড়িতে একটি অবস্থানে পৌঁছেছে, তাকে আরও জোরদার করার কথা বলা হয়েছে।’’
এদিন দলের তরফে যে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে সহ সভাপতি হিসাবে পুরানো বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা কংগ্রেসের সবিতা অগ্রবাল রয়েছেন। তেমনই তিনজন সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে রাখা হয়েছে প্রাক্তন যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরীকে। তেমনই, ছাত্র পরিষদের একসময় শহরের সভাপতি অমিত তালুকদার বা যুব কংগ্রেস নেতা কানাই পাঠককে সম্পাদক করা হয়েছে। প্রাক্তন তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা দীপঙ্কর আরোরাকে বিজেপির জেলার যুব মোর্চার সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গেই মহিলা মোর্চার সভানেত্রী হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী বাণী পাল। আইনজীবী অখিল বিশ্বাসকে সম্পাদকমণ্ডলীতে আমন্ত্রিত হিসাবে রাখা হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেও শিলিগুড়িতে বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। মোদী হাওয়ায় সেই সময় কংগ্রেস ও তৃণমূলের একঝাঁক তরুণ নেতানেত্রী বিজেপিতে নাম লেখান। ওই দলগুলিতে তাঁরা ঠিকঠাক মর্যাদা পাচ্ছিলেন না বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন। তারপরে পুরসভা ভোটে দু’টি আসন ছাড়াও মহকুমা পরিষদ ভোটে কিছু এলাকায় বিজেপি ভাল ফল করে। কিন্তু জেলা নেতৃত্বদের একাংশ সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে ফল আরও ভাল হত বলে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়। দলের মধ্যে কিছু কিছু প্রশ্নে সঠিকভাবে আন্দোলন করা নিয়েও প্রশ্নও ওঠে দলে। প্রকাশ্যে কেউ কোনও কথা না বলেও দলের জেলার সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া শিলিগুড়িতে দলের কাজকর্ম আরও জোর দিয়ে দেখা শুরু করেন। মূলত তরুণ নেতৃত্বকে সঙ্গে সাংসদ সংগঠনের কাজকর্ম করতে থাকেন। এরই মধ্যে অন্য জেলার সঙ্গে জেলা সভাপতি রথীন বসুকে সরিয়ে শহরের প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর অরুণ প্রসাদ সরকারকে জেলা সভাপতি করা হয়। হাকিমপাড়া জেলা অফিসের বদলে হিলকার্ট রোডে নতুন জেলা অফিস চালুও করা হয়।
এদিন দলের রাজ্য সভাপতি জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে আমরা একাই লড়ব। জোটের কোনও বিষয় নেই। এরকম প্রস্তাবও নেই। আর সিপিএম, কংগ্রেস যে জোটের কথা শোনা যাচ্ছে সেই দুই দলকেই মানুষ রাজ্যে সরকার হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজ্যের সর্বত্র কী করছে, তা ভাবা যায় না। ১৮ জানুয়ারি মালদহে নীতিন গডকড়ীর সভা, ২২ জানুয়ারিতে বারাসতে এবং ২৫ জানুয়ারি হাওড়ায় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ-এর সভা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy