‘চরিত্রহীন’ অপবাদ দিয়ে এক বধূকে মারধর করে চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতার। এ বার শাসক দলের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে বলে দাবি করলেন ওই নির্যাতিতা। আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের একটি গ্রামের বাসিন্দা বধূ ও তাঁর স্বামীর অভিযোগ, তৃণমূলের চাপেই ঘটনার পাঁচদিন পরেও পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি। তাই তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও তাঁদের নিরাপত্তার দাবিতে তাঁরা পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
ওই বধূর স্বামীর অভিযোগ, “তৃণমূলের কয়েকজন নেতা অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তৃণমূলের লোকজন আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। ছ’জনের নামে অভিযোগ জানালেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তারা অবাধে গ্রামে ঘুরেও বেড়াচ্ছে। এর পর আমরা গ্রামে থাকতে পারব কি না জানিনা।” আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর নিরাপত্তার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। অভিযুক্ত সবাইকে গ্রেফতার করার জন্য তল্লাশি চলছে।”
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এই অভিযোগ তুলে ওই বধূকে সালিশি সভায় চরিত্রহীন অপবাদ দিয়ে চুল কেটে মারধরের অভিযোগ ওঠে একদল গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে। স্ত্রী’কে বাঁচাতে গেলে ওই বধূর স্বামীকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরদিন বুধবার গ্রামের দুই পুরুষ ও ছয় মহিলার নামে কুমারগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। ওই দম্পতির অভিযোগ, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক থাকায় ঘটনার পরেই তাদের বাঁচাতে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা আসরে নেমেছেন। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এলাকার তৃণমূল নেতা মিহির নার্জিনারি বলেন, “ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। অভিযুক্তদের বাঁচানোর কোনও প্রশ্নই নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকির অভিযোগও সঠিক নয়। ওই পরিবারের পাশে আমরা আছি। এই ঘটনায় যারা অভিযুক্ত এবং যারা হুমকি দিচ্ছেন তাদের সবাইকে পুলিশ গ্রেফতার করুক সেটা চাই।” তাঁর পাল্টা দাবি, “এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বাদ দিয়ে নির্দোষ কয়েকজনের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত দোষীরা যাতে প্রত্যেকেই শাস্তি পান সেটা যাতে দেখা হয় পুলিশের কাছে সে আর্জি জানাব।” এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মনোজ বর্মনও বলেন, “খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দিয়েছি। অভিযুক্ত সকলের শাস্তি হোক এটাই চাই।” অভিযুক্তদের বাঁচানো ও আড়াল করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “ওই দম্পতি কে কেউ হুমকি দিচ্ছে বলে আমার জানা নেই। যদি কেউ হুমকি দিয়ে থাকে তদন্ত করে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy