Follow us on

Download the latest Anandabazar app

© 2021 ABP Pvt. Ltd.

Advertisement

২৫ এপ্রিল ২০২৪ ই-পেপার

‘মুম্বই-হায়দরাবাদের বিরিয়ানি খেয়ে প্রায় কেঁদে ফেলেছিলাম’

কলকাতার যে দিকটা মন ছুঁয়ে যায় তা হল এই শহরে বাজেট অনুযায়ী খাবার পাওয়া যায়। এক জন দিনমজুরও নিজের উপার্জনে পেট ভরে খেতে পারেন। অন্য দিকে, ভোজন

রণিতা দাস
কলকাতা ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:৩১
ফাইল চিত্র।

অভিনেত্রী রণিতা দাস।
ফাইল চিত্র।

কলকাতার মানুষ বিভেদের বেড়াজাল মানেন না। এখানে কোনও পার্বণ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে আবদ্ধ নয়। বরং, যে কোনও উৎসবে সর্বজনীন অংশগ্রহণ দেখা যায়। এই জিনিসটা আমার খুব ভাল লাগে। মুম্বইয়ে দেখেছি গণপতি উৎসব হতে। ওটাই ওখানকার প্রধান উৎসব। বাকি পার্বণের কিন্তু সর্বজনীন রূপ নেই।

এ তো গেল শহরের উৎসবমুখর দিক। কলকাতার আরও যে দিকটা মন ছুঁয়ে যায় তা হল এই শহরে সকলের বাজেট অনুযায়ী খাবার পাওয়া যায়। এই শহরে এক জন দিনমজুরও নিজের উপার্জনে পেট ভরে খেতে পারেন। আবার অন্য দিকে, ভোজনবিলাসীদের জন্যও হাজির রকমারি স্বাদের খাবার।

আমি তো খেতে খুব ভালবাসি। তা ছাড়া খিদে পেলে আমার মাথার ঠিক থাকে না। খিদে সহ্য করে কাজ করে যাওয়া আমার একদম পোষায় না। খিদে পেলে মেজাজও তিরিক্ষি হয়ে যায়। আর পছন্দ অপছন্দের দিক থেকে বলতে পারি, নিরামিষ আমি একদম খেতে পারি না। নিদেনপক্ষে ডিম আমার চাই-ই।

Advertisement

তবে আর একটা শহরে গেলে আমি নিরামিষও খেয়ে থাকতে রাজি। সেটা হল চণ্ডীগড়। ওদের লস্যি আর পরোটার স্বাদ মুখে লেগে থাকে। তবে মুম্বই আর হায়দরাবাদের খাবার খেয়ে আমি হতাশ। হায়দরাবাদের বিরিয়ানি খেয়ে আমি প্রায় কেঁদে ফেলেছিলাম। মুম্বইয়ে তো বিরিয়ানি খাওয়া নিয়ে বেশ মজার ঘটনা হয়েছিল। নামী হোটেলের বিরিয়ানি কিছুটা মুখে দিয়ে আমি বলে ফেলেছিলাম, ‘‘এটা বিরিয়ানি? নাকি মাংসের ঝোল দিয়ে মাখা ভাত?’’ ওমা! দেখি পাশে দাঁড়ানো ওয়েটার একগাল হেসে বলছেন, ‘‘ঠিক বলেছেন ম্যাডাম। এখানে এ রকম করেই বিরিয়ানি রান্না করে। আমি কত বার বলেছি। কিন্তু শুনতে চায় না।’’ পরে জেনেছিলাম, আদতে মেদিনীপুরের ওই যুবক মুম্বই যাওয়ার আগে কলকাতাতে বেশ কিছু দিন বিরিয়ানি তৈরির কাজ করতেন। আমি তো বলব এই দুই শহরের বড় হোটেলের বিরিয়ানিও হার মানবে কলকাতার ফুটপাতের বিরিয়ানির কাছে।

কলকাতার মিষ্টিও তুলনাহীন। বিশেষ করে উত্তর কলকাতার মিষ্টির আমি ভক্ত। উত্তর কলকাতার ছেলের সঙ্গে ১০ বছরেরও বেশি প্রেম করছি তো। পুঁটিরামের আইসক্রিম সন্দেশ, ছানার মুড়কির স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। নোনতা খাবারের মধ্যে পুঁটিরামের ডাল কচুরি এবং কালিকার চপ আমার খুব প্রিয়। তবে উত্তর কলকাতার খাবার যেমন সুস্বাদু, এলাকাগুলি কিন্তু বেশ অপরিষ্কার। অনেকেই এখনও বাড়ির আবর্জনা রাস্তার যেখানে সেখানে ফেলে দিতে অভ্যস্ত। এই অভ্যাসটা চলে গেলে কলকাতা আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

আমি তো এমনিতেই খুব ঘরকুনো। কলকাতা ছেড়ে গেলে ক’দিন পরেই হোমসিক হয়ে পড়ি। একটা সময় টানা মুম্বইয়ে থাকতাম। সে সময় এমন অবস্থা হয়েছিল, বাড়ির গাছের আম খেতে বিমানে করে কলকাতায় আসতাম! আসলে মায়ের অনুরোধ ফেলতে পারতাম না। ফেরার সময় মা ব্যাগ বোঝাই করে বাড়ির গাছের আম দিয়েও দিতেন। এই জিনিসগুলো তো কলকাতার বাইরে পাব না। আপাতত তো কলকাতাতেই আছি। জানি না, ভবিষ্যতে অন্য কোনও শহরে থিতু হব কি না। যদি অন্য শহরে থাকিও, কলকতাকে খুব মিস করব, এটা নিশ্চিত।

Advertisement