Follow us on

Download the latest Anandabazar app

© 2021 ABP Pvt. Ltd.

Advertisement

২৫ এপ্রিল ২০২৪ ই-পেপার

Sandesh: সন্দেশের সন্দেশ, ৫ প্রতিষ্ঠান যেগুলি পরিচিত কলকাতার সন্দেশ রাজধানী হিসেবে

রোমিয়ো-জুলিয়েট, লায়লা-মজনু কিংবা দাঁতে-বিয়াত্রিচকে স্বচ্ছন্দে টেক্কা দিতে পারে বাঙালির মিষ্টি প্রীতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:৩০
ছবি: সংগৃহীত

সেরা সন্দেশ
ছবি: সংগৃহীত

বাঙালির মতো মিষ্টান্নবাদী জাতি পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। বাংলার মিষ্টির ইতিহাসে আলেকজান্ডার, রসগোল্লার কিন্তু মঞ্চে আগমন বেশ পরে। বরং তার আগে দীর্ঘদিন অচ্ছুত ছিল ছানার মিষ্টি। সেই তুলনায় সন্দেশ প্রাচীনতর। সন্দেশ আর রসের মিষ্টির এই টক্কর কার্যত ভোলা ময়রা আর অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির দ্বন্দ্বের মতোই। রসের মিষ্টির সমর্থকদের খানিক কুপিত করে সন্ধান রইল কলকাতার এমন কয়েকটি মিষ্টি প্রতিষ্ঠানের যাঁদের ‘ভেনঘর’ যুগের পর যুগ কার্যত বন্দি করে রেখেছে বাঙালিকে—

Advertisement
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।
ছবি: সংগৃহীত


১| গিরিশচন্দ্র দে অ্যান্ড নকুড়চন্দ্র নন্দী
কলকাতার সন্দেশের ইতিহাসে এই প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম প্রধান একটি অংশ। উত্তর কলকাতার এই প্রতিষ্ঠানের সূচনা ১৮৪৪ সালে, গিরিশচন্দ্র দে-র কন্যার সঙ্গে জনাইয়ের নকুড়চন্দ্র নন্দীর বিবাহের সূত্রে। অভিষেক-ঐশ্বর্যর বিবাহ থেকে হিলারি ক্লিন্টনের জন্য পাঠানো উপহারের তালিকা, এই প্রতিষ্ঠানের সন্দেশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দীর্ঘ ইতিহাস। এখানকার গোলাপী প্যাঁড়া নাকি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর অত্যন্ত প্রিয় ছিল। এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বিশেষত্ব হল যে এঁরা কেবল সন্দেশ তৈরিতেই নিবেদিতপ্রাণ।

ঠিকানা: ৫৬, রামদুলাল সরকার স্ট্রিট, হেদুয়া, হাতিবাগান, কলকাতা। বেথুন কলেজের কাছেই এই মিষ্টির দোকান।
সেরার সেরা: এখানকার পারিজাত এবং জলভরা সন্দেশ একবার চেখে দেখতেই হবে।

২| ভীমচন্দ্র নাগ
১৮২৬ সালে পরাণচন্দ্র নাগ প্রতিষ্ঠা করেন এই মিষ্টির দোকানটি। খোলার দিন থেকেই বউবাজার এলাকায় তো বটেই, কলকাতার অন্যান্য বনেদি এলাকাতেও ভীম নাগের মিষ্টির জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। ১৮৫৬ সালে লেডি ক্যানিংয়ের জন্মদিনে বানানো ভাজা মিষ্টিই পরবর্তীকালে লেডিকেনি নামে বিখ্যাত হয়। দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময় নাকি এই দোকান থেকে তিন মণ মিষ্টি নৌকায় করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল মন্দিরে। স্বয়ং রবি ঠাকুরও ভীম নাগের সন্দেশ বেজায় পছন্দ করতেন।
ঠিকানা ৫, নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, বউ বাজার মার্কেটের কাছেই।
সেরার সেরা: সন্দেশের কথা বলতে গেলে এখানকার কড়া পাকের সন্দেশের জুড়ি মেলা ভার। ভীম নাগের ‘আবার খাবো সন্দেশ’ও কিন্তু বেশ জনপ্রিয়।

৩। বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক
গণেশচন্দ্র মল্লিক কোন্নগর থেকে কলকাতা আসেন ১৮৮০ সালে। প্রায় তিন বছর অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর ভবানীপুরে প্রতিষ্ঠা করেন মূল দোকানটি। বর্তমানে অনেকগুলি শাখা রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। মূলত কড়া পাক ও নলেন গুড়ের সন্দেশ থেকেই ছড়িয়ে পড়ে এই প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি। আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এখানকার ‘গুলি সন্দেশ’ বিশেষ পছন্দ করতেন। গণেশচন্দ্র মল্লিকের ভাই বলরাম মল্লিক ও পুত্র রাধারমণ মল্লিক পরবর্তীকালে এই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যান।

ঠিকানা: ২, পদ্মপুকুর রোড, ভবানীপুর, কলকাতা। এছড়াও কসবা, নিউ আলিপুর, প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোড, পার্ক স্ট্রিট এবং বালিগঞ্জেও এই প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে।
সেরার সেরা: এখানকার কড়াপাকের জলভরা সন্দেশ না খেলেই নয়! সেই সঙ্গে চেখে দেখতে পারেন গুড় তবক ও আম সন্দেশও।

৪। নবকৃষ্ণ গুঁই
কলকাতা শহরের ইতিহাসের সঙ্গে যে-যে মিষ্টির দোকানের নাম জড়িয়ে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল এই দোকান। এঁরা নানা স্বাদের ঐতিহ্যশালী বাঙালি মিষ্টি যেমন বিক্রি করেন, তেমনই ফিউশন মিষ্টিরও হদিশ মিলবে এখানে।
ঠিকানা: ৯ বি, নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট, বউবাজার, কলকাতা।
সেরার সেরা: রোজ ক্রিম সন্দেশ।

৫। কে সি দাস
সবার শেষে যে প্রতিষ্ঠানটির কথা না বললে অপরাধ হবে সেটি অবশ্যই কে সি দাস। কমলকুমার মজুমদারের ছড়া, ‘বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস/ রসগোল্লার কলম্বাস।’ কিন্তু রসগোল্লা আর রসমালাইতেই যদি থেমে থাকেন তাহলে মোটেও সুবিচার হয় না। কারণ এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেদো সন্দেশন কাঁঠাল সন্দেশ কিংবা আতা সন্দেশের নামও। আর রয়েছে ‘আবার খাবো সন্দেশ’। কথিত আছে, একবার কাশিমবাজারের মহারানি স্বর্ণময়ী দেবী নতুন ধরনের মিষ্টি খেতে চেয়েছিলেন। নবীনচন্দ্রের কাছে তার বরাত যায়। নবীনচন্দ্র নতুন এক প্রকারের মিষ্টি তৈরি করেন, যা খেয়ে মহারানি স্বর্ণময়ী বলেছিলেন, ‘আবার খাবো’। সেই থেকে মিষ্টিটি ‘আবার খাবো’ নামে জনপ্রিয় হয়।
ঠিকানা: ১১ এ, এসপ্লেনেড ইস্ট, নিউ মার্কেটের সিগনালের কাছেই।

Advertisement