Follow us on

Download the latest Anandabazar app

© 2021 ABP Pvt. Ltd.

Advertisement

১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ই-পেপার

Street foods of Kolkata: অতিমারি কেড়ে নিয়েছে খাবারে রুচি? কলকাতার রাস্তার খাবার ফের এনে দেবে আপনার জিভে জল

এই শহর মুখরোচক খাবারের একাধিক বিকল্পে ভরপুর। অথচ সংক্রমণের ভয় আর মুখের অরুচি, সব মিলিয়ে কী খাবেন না খাবেন তা নিয়ে ধন্দ কাটতে চায় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১০:৪১

কেউ বলেন পানিপুরি, কেউ বলেন গোলগাপ্পা

অতিমারি কলকাতার মানুষকে যে ভাবে কাবু করে ফেলেছে তাতে আমাদের মধ্যে অনেকেরই খাবারে রুচি চলে গিয়েছে একেবারে। বাঙালির মতো ভোজনলোলুপ জাতির পক্ষে এই অবস্থা কতটা কষ্টকর তা অনুমান করা যেতে পারে। এই শহরেই কয়েক পা অন্তর অন্তর রয়েছে বিভিন্ন স্বাদের একাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান। অথচ একে সংক্রমণের ভয়, তার উপর মুখের অরুচি, সব মিলিয়ে কী খাবেন না খাবেন তা নিয়ে ধন্দ কাটতে চায় না। কলকাতার বিশ্ববিখ্যাত স্ট্রিটফুড বা রাস্তার খাবার কিন্তু আপনার মুশকিল আসান করতে পারে নিমেষেই। মুখে রুচি আনতে এবং বাঙালির খাদ্যপ্রেমিক তকমা বজায় রাখতে এই শহরের নানা রাস্তার বিবিধ খাবারে মঝে মধ্যে পেটপুজো করতেই পারেন আপনি। তবে অতিমারির সাম্প্রতিক ছায়া সরে গেলেই এই অভিযান বাঙালির জন্য সুবিধাজনক।

ফুচকা
কেউ বলেন পানিপুরি, কেউ বলেন গোলগাপ্পা। তবে কলকাতার মানুষ এই খাবারকে চেনে আদি অকৃত্রিম ফুচকা নামেই। ভিতরে মশলা মাখা আলুর সঙ্গে তেঁতুলজল দেওয়া ফুচকা নিঃসন্দেহে আজও কলকাতার সেরা স্ট্রিটফুড। এখন তো চাটনি ফুচকা, দই ফুচকা, মাংস ফুচকা এমনকি আইসক্রিম ফুচকা এই শহরের ফুচকাপ্রেমীদের পাতে জায়গা করে নিয়েছে। দেশের অনেক নামী-দামি রেস্তঁরায় এখন বিভিন্ন প্ল্যাটারেও মেলে কলকাতার ফুচকা। কিন্তু প্রিয় মানুষদের সঙ্গে আড্ডা মারতে মারতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার আনন্দ বাঙালি ছাড়া কেউই অনুভব করতে পারবেন না। কলকাতা শহরে বিবেকানন্দ পার্ক, বাসন্তী দেবী কলেজের সামনে, দক্ষিণাপণের সামনে, ট্রায়াঙ্গুলার পার্কের কাছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে, রাসেল স্ট্রিটে, নিউ আলিপুরের রয়েছে এই শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী ফুচকার দোকান।

Advertisement
এই শহরেই কয়েক পা অন্তর অন্তর রয়েছে বিভিন্ন স্বাদের একাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান।

এই শহরেই কয়েক পা অন্তর অন্তর রয়েছে বিভিন্ন স্বাদের একাধিক মুখরোচক খাবারের দোকান।


ঘটিগরম
চানাচুর, লেবুর রস, মশলা এবং পেঁয়াজের এই আশ্চর্যজনক সংমিশ্রণটি বাঙালিদের আজন্মের পরিচিত একটি খাবার যার নাম হল ঘটিগরম। কলকাতার অলিতেগলিতে বিকেলের পর দূর থেকে ঘটিগরমওয়ালাকে আসতে দেখা যেত, শুনতেও পাওয়া যেত ঝুমঝুমে ঘণ্টার শব্দে। পাড়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঘটিগরম খাওয়ার প্রতিযোগিতাও হত এই কিছু দিন আগে পর্যন্তও। কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটের ঘটিগরম এই শহরের বাসিন্দাদের বিশেষ প্রিয়। এ ছাড়া ট্রেনে প্রায়ই নিত্যযাত্রীদের সান্ধ্যকালীন জলখাবার হিসেবে ঘটিগরম এখনও কলকাতার মানুষকে আকৃষ্ট করে রেখেছে। এই শহরে এলে অন্তত এক বার আপনাকে চেখে দেখতেই হবে জিভে জল আনা এই খাবারটি।

তেলেভাজা
কলকাতার রাস্তায় এখনও পর্যন্ত যে খাবারের জনপ্রিয়তা এত টুকুও টাল খায়নি তা হল চপ কিংবা তেলেভাজা। আমিষ কিংবা নিরামিষ এই দুই রকম তেলেভাজাই বাঙালির অত্যন্ত প্রিয়। এখন তো বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানেও মূল খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন মুখরোচক তেলেভাজা ব্যবহার হয়। মাছ কিংবা মাংসের চপের পাশাপাশি আলু, মোচা, আম, ক্যাপসিকামের চপ আমরা উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার রাস্তার ধারের বিভিন্ন দোকানে পাই। নানা দোকানে বিভিন্ন ধরণের মশলার সংমিশ্রণে এই কাটলেট এবং চপগুলি টমেটো সস, কাসুন্দি বা পুদিনার চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। মুচমুচে ভাজার মধ্যে মনভরানো বিভিন্ন ধরনের পুর এই তেলেভাজার বৈশিষ্ট্য। স্বাস্থ্য নিয়ে প্রবল খুঁতখুঁতে না হলে মাঝেমধ্যে কলকাতার তেলেভাজার স্বাদগ্রহণ আপনি করতেই পারেন। কলেজ স্ট্রিট, গিরিশ পার্ক, গড়িয়াহাট, কালীঘাট, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো এই বিষয়ে হতে পারে আপনার গন্তব্য।

কলকাতার রাস্তায় এখনও পর্যন্ত যে খাবারের জনপ্রিয়তা এত টুকুও টাল খায়নি তা হল তেলেভাজা

কলকাতার রাস্তায় এখনও পর্যন্ত যে খাবারের জনপ্রিয়তা এত টুকুও টাল খায়নি তা হল তেলেভাজা


কাঠি রোল
পাতলা পরোটা কিংবা রুমালি রুটি তরকারি এবং মাংসের টুকরোর সঙ্গে সস, স্যালাড আর মশলা দিয়ে রোল করা এই খাবারটি কলকাতার খাদ্যরসিকদের বিশেষ আদরের। এই কাঠি রোলগুলি ১৯৩০ সাল নাগাদ কলকাতার একটি রেস্তঁরায় তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের পাতে মুখরোচক কিছু তুলে দেওয়ার জন্য তৈরি হত বলে জানা যায়। এ ছাড়াও বিলিতি সেই সব মানুষজন কবাব খাওয়ার সময় হাতের ব্যবহার না করে কাঁটা-চামচ ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন বলে নাকি এই কাঠি রোল বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে অল্প সময়েই। উৎপত্তির পরে, কাঠি রোল বাঙালিদের তো বটেই, পেট আর মন ভরিয়েছে সারা ভারতের মানুষের। কলকাতার রাস্তায় আজও এই কাঠি রোল ভোজনরসিকদের প্রিয়। পার্ক স্ট্রিট, ডেকার্স লেন, ধর্মতলা , ভবানিপুর, লেক মার্কেট কাঠি রোলপ্রেমীদের তীর্থস্থান বলা চলে।

সিঙ্গাড়া
সারা দেশে সুপরিচিত সামোসার বাঙালি সংস্করণ হল সিঙ্গাড়া। কলকাতার প্রায় সব মিষ্টির দোকানে দিনের মধ্যে কোনও একটা সময় গরম গরম সিঙ্গাড়া ভাজা হয় এবং সেই সময় দোকানে ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। নিরামিষ সিঙ্গাড়ার মধ্যে থাকে আলু কিংবা মটর অথবা ফুলকপির পুর। সিঙ্গাড়ার আমিষ সংস্করণে মাংসের কিমার স্টাফিং আপনার জিভে জল এনে দিতে বাধ্য। অতিমারি কবলিত এই সময়ে কড়াই থেকে নামানো গরম সিঙ্গাড়া আমাদের অত্যন্ত প্রিয় জলখাবার হয়ে উঠেছে।

Advertisement