প্রতীকী চিত্র
পুজোর আর কয়েকটা দিন মাত্র বাকি। উমা আসছেন। বাঙালির মনে আর হেঁশেলে জাঁকিয়ে বসতে চাইছে উৎসবের আমেজ। কেনাকাটা, ঠাকুর দেখা, আড্ডা– এ সবের মাঝে পেটপুজো না হলে চলে নাকি? কব্জি ডুবিয়ে ভাত, সঙ্গে গরম গরম ইলিশ বা পাবদার তেল ঝাল— এ যেন এক অন্য রকম ভাললাগা।
নদীর টাটকা পাবদা মাছ আর সর্ষের তেল— এই জুটির কদর বাঙালির কাছে অনন্য। পদের খুঁটিনাটি বড়ই সহজ, অথচ স্বাদে দুর্দান্ত। প্রথমে মাছ ভাল করে ধুয়ে হলুদ-নুনে মাখিয়ে রাখতে হয় খানিকটা সময়। এ বার কড়াইয়ে ফোড়ন দেওয়া হয় সর্ষের তেলে। কালোজিরে, কাঁচালঙ্কা, আর সামান্য আদা বাটা মিশে উঠলে রান্নাঘর ভরে যায় সেই চেনা ঘ্রাণে।
তেল ঝালের প্রস্তুতিও খুব বেশি জটিল নয়। প্রথমে পাবদা মাছ ভাল করে পরিষ্কার করে, নুন-হলুদ মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তার পরে গরম সর্ষের তেলে সাবধানে ভেজে তুলে রাখুন, কারণ পাবদা মাছ খুব নরম। এর পরে ওই তেলেই কালো জিরে আর কাঁচালঙ্কার ফোড়ন দিয়ে দিন। একটু নেড়েচেড়ে আদা বাটা, হলুদ, আর সামান্য লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে নিন।
চাইলে টোম্যাটো বা হালকা ঝালের জন্য শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো দেওয়া যেতে পারে। সব মশলা কষানো হলে সামান্য জল দিয়ে ঝোল তৈরি করুন। ঝোল ফুটে উঠলে তাতে ভাজা মাছগুলো হালকা হাতে ছেড়ে দিন। পাবদা মাছ খুব তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়, তাই বেশি ক্ষণ ফোটানোর দরকার নেই। সবশেষে উপর থেকে ধনে পাতা কুচি ছড়িয়ে দিন। যাঁরা এই পদের আসল স্বাদ উপভোগ করতে চান, তারা রান্নার একেবারে শেষে কয়েক ফোঁটা কাঁচা সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিতে পারেন। এই সামান্য তেলটুকু যেন স্বাদে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। অনেক বাড়িতেই বেগুন ভেজে বা বড়ি দিয়ে ফোড়ন বাড়ানো হয়।
পাবদার ঝোলের আর এক বিশেষত্ব—এতে পেঁয়াজ-রসুনের বাড়তি ঝামেলা নেই। ফলে মাছের স্বাদটাই আলাদা করে ধরা দেয়। ঝোলের সঙ্গে যখন ভাত মাখা হয়, তখনই বোঝা যায় এর আসল মাহাত্ম্য।
পুজোর ভোগে লুচি, খিচুড়ি থাকতেই পারে। কিন্তু দুপুরে সবার মন ভরাতে চাইলে গরম ভাতের পাশে দিন পাবদা তেল ঝাল। তুঙ্গে উঠবে আনন্দ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।