কিংবদন্তী অভিনেতা উত্তম কুমার যে ভোজনরসিক ছিলেন, এ কথা প্রায় সকলেরই জানা। তাঁর পছন্দের খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের পদ ছিল, যার মধ্যে মাংসের পদগুলি ছিল তাঁর বিশেষ প্রিয়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানা যায়, খুব সাধারণ খাবারও পছন্দ করতেন এই কালজয়ী অভিনেতা। তাঁর পছন্দের খাবারগুলির মধ্যে লঙ্কা মুরগি ছিল অন্যতম।
এই পদটি মূলত উত্তম কুমারের বাড়িতেই তৈরি হত। এটি এমন একটি রেসিপি, যা বাঙালির চিরন্তন রান্নার ঘরোয়া স্বাদ বহন করে। অতিরিক্ত মশলার বদলে কেবল কাঁচা লঙ্কার ঝাল এবং মুরগির নিজস্ব স্বাদই এই পদের মূল আকর্ষণ। অভিনেতা তাঁর কাজের ফাঁকে বা ছুটির দিনে এই পদটি খুব উপভোগ করতেন।
উত্তম কুমারের শতবর্ষ পূর্তির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আপনি চাইলে সহজেই এ বার পুজোর ভোজের পাতে এই লঙ্কা মুরগি রাখতে পারেন। কারণ, এই রেসিপিটি খুবই সহজ এবং তুলনামূলক ভাবে কম উপকরণে তৈরি করা যায়।
উপকরণ: মুরগির মাংস (হাড় ছাড়া) – ৫০০ গ্রাম, ছোট টুকরো করে কাটা, পেঁয়াজ কুচি – ২-৩টি (বড়), রসুন বাটা – ১ চামচ, আদা বাটা – ১ চামচ, কাঁচা লঙ্কা – ৮-১০টি (ঝাল অনুযায়ী কম-বেশি করা যেতে পারে), হলুদ গুঁড়ো – ১ চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো – ১ চামচ, জিরে গুঁড়ো – ১ চামচ, গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চামচ, সর্ষের তেল – ৪-৫ চামচ, নুন – স্বাদ মতো, চিনি – ১/২ চামচ ।
প্রস্তুত প্রণালী: ১. প্রথমে মুরগির মাংসের টুকরোগুলি নুন, হলুদ গুঁড়ো এবং সামান্য লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মেখে ৩০ মিনিট রেখে দিন।
২. কাঁচা লঙ্কাগুলি মাঝখান থেকে চিরে রাখুন।
৩. কড়ায় সর্ষের তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সোনালি রং ধরা পর্যন্ত ভাজুন।
৪. পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে আদা বাটা ও রসুন বাটা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন, যত ক্ষণ না তার কাঁচা গন্ধ চলে যায়।
৫. এ বার মশলার মধ্যে জিরে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো এবং সামান্য জল দিয়ে আরও কিছু ক্ষণ কষান।
৬. মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে ম্যারিনেট করা মাংস দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মাঝারি আঁচে ১০-১৫ মিনিট কষান।
৭. এর পরে চিরে রাখা কাঁচা লঙ্কা এবং স্বাদ অনুযায়ী নুন ও চিনি দিয়ে দিন।
৮. কড়া ঢেকে দিন এবং আঁচ একদম কমিয়ে দিন। মাংস থেকে জল বার হবে, তাতেই তা সেদ্ধ হবে। যদি মনে হয় জল কম, তা হলে সামান্য গরম জল দিতে পারেন।
৯. মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে এবং ঝোল ঘন হয়ে এলে গরম মশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে নামিয়ে নিন।
গরম ভাত, রুটি বা পরোটার সঙ্গে এই লঙ্কা মুরগি পরিবেশন করুন। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।