প্রতীকী চিত্র।
ডায়াবেটিসের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। আট থেকে আশি সকলেই জর্জরিত অসুস্থতায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের ৩৫ মিলিয়ন শিশু (পাঁচ বছরের কম বয়সি) স্থূলকায়।
এ বার পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ‘অয়েল বোর্ড’ চালু করতে চলেছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)। গত মে মাসেই সিবিএসই-র তরফে নির্দেশিকা জারি করে স্কুলগুলিতে ‘সুগার বোর্ড’ লাগাতে বলা হয়েছিল। দু’মাস যেতে না যেতেই আরও এক নির্দেশিকা এসেছে। বোর্ড জানিয়েছে, যে ভাবে দেশে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতার পরিমাণ বাড়ছে, তা উদ্বেগের। সচেতনতামূলক পদক্ষেপ হিসাবেই এই বোর্ড লাগানো প্রয়োজন।
বর্তমানে প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন এসেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাজারজাত এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা। কখনও অ্যাপের মাধ্যমে আবার কখনও স্কুল প্রাঙ্গনে সহজলভ্য পিৎজা, বার্গার, পাস্তার মতো চর্বি এবং তেলযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার ঝোঁক বাড়ছে ছোটদের। আর তাতেই অসুস্থতার শিকার হচ্ছে তারা।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (২০১৯-’২১)-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শহরাঞ্চলে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন স্থূলকায়। এমনকি, ল্যানসেট-এর সাম্প্রতি গবেষণাতেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে দেশে স্থূলকায় ব্যক্তির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বর্তমান জীবনধারায় ফ্যাট এবং শর্করাজাতীয় খাওয়ার পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে শরীরচর্চার অভ্যাসও কমেছে। আর তাতেই বিভিন্ন অসুখে জর্জরিত প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শিশুরা।
জীবনযাত্রা আরও স্বাস্থ্যকর করতে তাই সিবিএসই অধীনস্থ স্কুলগুলিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হবে।
কী ভাবে কার্যকর হবে এই নয়া পদক্ষেপ?
১। স্কুলগুলির ক্যাফেটেরিয়া, হলঘর, কমনরুমে ডিজিটাল অথবা হাতে লেখা ‘অয়েল বোর্ড’ লাগাতে হবে। বোর্ডে উল্লেখ করা থাকবে কী ভাবে উচ্চফ্যাটযুক্ত খাবার শরীরের উপর প্রভাব ফেলে।
২। স্কুলের বিভিন্ন খাম, চিঠি, নোটবুক, স্কুল ডায়েরি বা ফোল্ডারে স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কিত কিছু লেখা রাখা হবে। যাতে ক্রমাগত স্থূলতা রোখার জন্য পড়ুয়াদের সতর্ক করা সম্ভব হয়।
৩। স্কুল প্রাঙ্গনে যাতে পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যায়, তার সুবন্দোবস্ত করতে হবে। স্কুলে যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং শর্করাজাতীয় পানীয় বিক্রি কমানো যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪। পড়ুয়ারা যাতে স্কুলের ভিতরে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করে, শরীরচর্চা করে, হাঁটাচলা বেশি করে, সে দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
এ ছাড়া, স্কুলের বিভিন্ন প্রকল্পে পড়ুয়াদের ‘অয়েল বোর্ড’ ডিজ়াইন করা, স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা 'প্রোজেক্ট' তৈরির কাজেও যুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্কুলগুলি ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি (এফএসএসএআই)-এর ইয়ুটিউব চ্যানেলে এ বিষয়ে যে শিক্ষামূলক ভিডিয়ো আছে, তার সাহায্য নিতে পারে বলে নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।