প্রতীকী চিত্র।
কালীপুজোর রাতে প্রকাশিত হল আইন কলেজগুলিতে প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষার মেধাতালিকা। ২০ অক্টোবর ৩৮২৩ জন পরীক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। চার জন পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাঁদের ফলপ্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্লাস শুরু হবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই।
চলতি বছর এই পরীক্ষা হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে প্রায় তিন মাস পরে। ফলে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে। পাঁচ বছরের বিএ-এলএলবি শিক্ষাক্রমের প্রবেশিকা পরীক্ষা আয়োজন করা হয় গত ১৪ অক্টোবর। ৭ দিনের মাথায় ফলপ্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি প্রক্রিয়া মিটিয়ে ক্লাসও শুরু করা হবে তড়িঘড়ি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, “স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য এ বছর সম্পূর্ণ কম্পিউটার পরিচালিত ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস শুরু হবে।” এ বার সেক্টর ফাইভ, বারুইপুর, তারাতলা, কল্যাণী ও মধ্যমগ্রাম— এই পাঁচটি জায়গায় পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছিল। বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় বসার জন্য এ বছর আবেদন করেছিলেন ৪১৩৫ জন। তবে উপস্থিত ছিলেন ৩৮২৭জন, প্রায় ৯৩ শতাংশ। সাধারণত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রবেশিকা আয়োজিত হয় জুলাই মাসে। কিন্তু বার কাউন্সিলের অনুমোদন ও দুর্নীতির কারণে তা পিছিয়ে যায়।
সোমবার রাতে ফল প্রকাশের পর মঙ্গলবার কলেজভিত্তিক আসনবিন্যাসও প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছরই প্রথম প্রকাশ করা হবে ১৪টি কলেজের বেতন পরিকাঠামো। এর মধ্যে চারটি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। মোট আসন ২১৭০টি। জানা গিয়েছে, ভাইফোঁটার পরই অনলাইনে মেধাতালিকায় থাকা পরীক্ষার্থীরা নিজেদের চয়েস ফিলিং করতে পারবে র্যাঙ্ক অনুযায়ী।
চলতি বছর নানা কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত আইন কলেজগুলি। গত জুনে কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসেই ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক প্রাক্তনী তথা ওই কলেজের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। তিনি আবার শাসকদলের নেতা বলে পরিচিত। তার পরই উঠে আসে আইন কলেজগুলিতে নানা বেনিয়মের প্রসঙ্গ।
জানা যায়, বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার অনুমতি ছাড়াই প্রায় এক দশক ধরে চলছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ ১৪টি আইন কলেজ। অভিযোগ, কাউন্সিলকে দেও ৩৫ লক্ষ টাকা বাকি রেখেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। গত সেপ্টেম্বরে সেই জট কাটে।
পাশপাশি ওঠে প্রবেশিকা পরীক্ষায় স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি অভিযোগও। কসবা কলেজে ভর্তি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে তার তদন্ত চালাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বছর হাজরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগকে দূরে রেখে প্রবেশিকার প্রশ্নপত্র স্থির করেন।