নিজস্ব চিত্র।
ভরা বর্ষায়, ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টার। একটানা বর্ষণের ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৈরি হতে পারে বন্যা পরিস্থিতি। তাই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, ওএমআর শিট নিয়ে বিশেষ সতর্ক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এ বছর থেকে এমন ভাবে প্রশ্নপত্র ‘ওয়াটার প্রুফ প্যাকেজিং’ করা হচ্ছ, যাতে জলে ভিজে গেলেও তার কোনও ক্ষতি না হয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর শিট-এর যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সে জন্য বিশেষ ভাবে ‘ওয়াটার প্রুফিং প্যাকিং’-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে বৃষ্টির জল পড়লেও এগুলি সুরক্ষিত থাকে।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, এ বার থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টার মিলিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হবে। তাই তৃতীয় সেমেস্টার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পড়ুয়াদের কাছে। বর্ষার স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার প্রবেশ ঘটে ১০ জুন। এবং খাতায়-কলমে বর্ষা বিদায় নেয় ১০ অক্টোবরের পরে। আর উত্তরবঙ্গে ৬ জুনের মধ্যে বর্ষার প্রবেশ ঘটে।
এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলবে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তখন সারা রাজ্যে বর্ষার বৃষ্টি চলবে বলে ইতিমধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাই বিভিন্ন জেলা বৈঠকে আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখছে শিক্ষা সংসদ। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিবর্তন এবং পরীক্ষার্থীদের আগে থেকেই ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য।
অতীতে দেখা গিয়েছে সেপ্টেম্বরে রাজ্যের বহু এলাকায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে তারা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পরিকল্পনা করে ফেলেছে। জেলার প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
চিরঞ্জীব বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা বন্যাপ্রবণ জেলা প্রশাসনগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেছি। বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলায় বৈঠক করা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক, জেলা স্কুল পরিদর্শকেরাও। সিদ্ধান্ত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্র এবং প্রশ্নপত্র রাখার জায়গা এমন এলাকায় করতে হবে, যেখানে বন্যার কোনও ইতিহাস নেই। কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে শেষ মুহূর্তে কেন্দ্র পাল্টানো হবে। তবে কেন্দ্র বদলের ক্ষেত্রে শিক্ষা সংসদের অনুমতি বাধ্যতামূলক।”
শুধু তাই নয় পরীক্ষাকেন্দ্র একজন ছাত্র বা ছাত্রীর বাড়ি থেকে যাতে খুব দূর না হয়, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। যাতে অতিরিক্ত বর্ষার কারণে পৌঁছতে অসুবিধা না হয়।
হাওড়া উদয়নারায়নপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, হুগলির আরামবাগ, উত্তরবঙ্গের যে সমস্ত জেলা প্রায়ই বন্যা কবলে পরে, সেখানে পরীক্ষার্থীদের জন্য ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হবে, তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং জেলা প্রশাসন ঠিক করবে বলে জানাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
শুধু বন্যা নয়, বর্ষাকালে বহু এলাকায় বন্যপ্রাণীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। তাতে যাতে পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে বনদফতরকেও আলাদা করে সতর্ক করেছে শিক্ষা সংসদ। শিক্ষা সংসদের এক কর্তা জানিয়েছেন, বর্ষা চললেও তৃতীয় সেমেস্টারের দিন ক্ষণ পিছনো যাবে না। তেমন হলে আবার চতুর্থ সেমেস্টার-এর জন্য সময় কম পাবে পড়ুয়ারা। ফলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরোতেও দেরি হবে।