Dipankar Dey's Birthday Special

আমার কোষ্ঠী দেখে বলেছিলেন, এ ছক ইন্দিরা গান্ধীরও হতে পারত! এখন আর জ্যোতিষে বিশ্বাসই করেন না টিটোদা

“বিনোদন দুনিয়াও অনেক বদলে গিয়েছে। আমারই কেমন অস্বস্তি হয়। টিটোদার নিশ্চয়ই আরও বেশি হয়! আগে তবু কিছু মুখ ফুটে বলতেন। এখন কিচ্ছু বলেন না। কাজ পেলে মানিয়ে নিয়ে কাজ করেন। নইলে বাড়িতেই থাকেন।”

Advertisement

দোলন রায়

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১২:০৫
Share:

দীপঙ্কর দে-কে নিয়ে কলমে দোলন রায়। ছবি: ফেসবুক।

আমাদের পড়ার ঘরে এখন শুধুই বিজ্ঞানী নিউটন আর আইনস্টাইনের বই! আপাতত এতেই মন আপনাদের দীপঙ্কর দে-র। সারা দিন ঘুরেফিরে এই বইয়ে ডুবে থাকছেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেক বদলে গিয়েছেন আমার টিটোদা। প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না। ফলে, আমাদের ঝগড়াটুকুও বন্ধ! আমি তো ভেবেই উঠতে পারি না, কোন বিষয় নিয়ে কথা বললে টিটোদা একটু হাঁকডাক করবেন। কেবল একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে একটু-আধটু কথা কাটাকাটি হয়— ওঁর খাওয়া নিয়ে। এখনও ভালমন্দ খেতে খুব ভালবাসেন। বিশেষ করে ডাক্তারবাবু যা যা নিষেধ করেছেন, সেগুলি খেতেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। সে সব খেতে চাইলেই হাঁ-হাঁ করে উঠি। কখনও চুপচাপ মেনে নেন। কখনও প্রতিবাদ করেন।

Advertisement

জন্মদিন টিটোদার ‘চিট ডে’। এ দিন সকাল হয়েছে লুচি, পায়েস দিয়ে। এ বার জন্মদিন পড়েছে শনিবারে, নিরামিষ খাই আমি। টিটোদা এ সব মানেন না। সব খান। দুপুরে পোলাও, পনির করেছি। আর আইসক্রিম খেতে ভালবাসেন। তাই একটা আইস কেকের অর্ডার দিয়েছি। বিকেলে কয়েক জন বন্ধু আসবেন। সকলে মিলে আড্ডা দেব। আগে নিয়ম করে নতুন জামা কিনে দিতাম। এখন কিছুতেই নিতে চান না। একটা আলমারি নতুন জামায় ভর্তি। পোশাকের ট্যাগ পর্যন্ত ছেড়া হয়নি!

এ রকম আরও বদল ঘটেছে টিটোদার জীবনে। টিটোদা জ্যোতিষচর্চা ছেড়ে দিয়েছেন বহু কাল। আর এ সবে বিশ্বাস নেই। নিজে জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করে ডিগ্রি পেয়েছিলেন। সেই তিনিই বলেন, সব ভুয়ো! উনি অবশ্য কারও হাত দেখেন না। কোষ্ঠী বিচার করতেন। মনে আছে, আমার ছক দেখে বলেছিলেন, ‘কী ভাল কোষ্ঠী! এই ছক ইন্দিরা গান্ধীরও হতে পারত। কেবল একটি বিষয় ছাড়া...!’ মিঠুন চক্রবর্তী আর টিটোদা একসঙ্গে অনেক ছবি করছেন। কোনও একটি ছবির সেটে সুযোগ পেলেই মিঠুনদা ছেলের কোষ্ঠী নিয়ে বসে পড়তেন টিটোদার কাছে। উনি এ সব খুব বিশ্বাস করেন। মিঠুনদার অনুরোধে টিটোদা ওঁর বড় ছেলে মিমোর কোষ্ঠী বিচার করেছিলেন। ওঁর বলা অনেক কথা শুনেছি মিলে গিয়েছিল। এখন কেবল বাইরে বেরোনোর সময় নক্ষত্র ইত্যাদি মিলিয়ে দেখেন। তার পর বেরোনোর দিন ঠিক করেন। কয়েক বার আমরা বেরিয়ে বিপদে পড়েছিলাম, তাই।

Advertisement

সে সব অতীত। সম্প্রতি, টিটোদার নামে ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে, খুব অসুস্থ নাকি! আর কাজ করতে পারেন না। ফলে, কেউ আর ডাকেনও না! সত্যিই যদি তাই হবে তা হলে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সিরিজ়, ‘লজ্জা’ সিরি়জ় বা পথিকৃৎ বসুর ‘দাবাড়ু’ ছবিতে কী করে ওঁর অভিনয় প্রশংসা পেল? এখন বিনোদন দুনিয়াও অনেক বদলে গিয়েছে। আমারই কেমন অস্বস্তি হয়। টিটোদার নিশ্চয়ই আরও বেশি হয়! আগে তবু মুখ ফুটে কিছু বলতেন। এখন কিচ্ছু বলেন না। কাজ পেলে মানিয়ে নিয়ে কাজ করেন। নইলে বাড়িতেই।

কখনও মনোযোগী পড়ুয়া। কখনও ইজ়িচেয়ারে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে সেতার শোনেন। ঘরে মৃদু স্বরে বাজতে থাকে রাগ ভৈরব কিংবা খম্বাজ। তা-ও যখন ভাল লাগে না, বারান্দায় বসে থাকেন। দৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ে পথের দিকে। দীপঙ্কর দে তখন শুধুই নীরব দ্রষ্টা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement