Uttam Kumar's 75th Lakshi Puja

নতুন চিক, লম্বা হারে দেবী যেন বিয়ের কনে! উত্তমকুমারের ৭৫ বছরের লক্ষ্মীপুজোয় আর কী হচ্ছে?

“এ বছর বৌদি দেবলীনা কুমার দাদুর মতো বাড়িতে ভিয়েন বসাচ্ছে। গরম গরম জিলিপি তৈরি হবে”, বললেন চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুই কন্যা নবমিতা, মৌমিতা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৫১
Share:

উত্তমকুমারের ৭৫ বছরের লক্ষ্মীপুজোয় জমকালো আয়োজন। নিজস্ব চিত্র।

রেড রোডের পুজো কার্নিভালে দেবলীনা কুমার, নবমিতা এবং মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়— তিনজনেই যোগ দিয়েছিলেন। সেই উদ্‌যাপন মিটতেই সোমবার সকাল থেকে ভবানীপুরের চট্টোপাধ্যায় বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় ব্যস্ত তাঁরা। এই পুজো উত্তমকুমারের পুজো নামে খ্যাত। আনন্দবাজার ডট কম-কে নবমিতা এবং মৌমিতা জানিয়েছেন, এ বছর তাঁদের দাদুর পুজোর ৭৫ বছর। সেই উপলক্ষে বাড়িতে ভিয়েন বসাচ্ছেন উত্তমকুমারের নাতবৌ দেবলীনা। চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতে উপস্থিত ছিলেন কোয়েল মল্লিক।

Advertisement

মৌমিতার কথায়, “দাদুর আমলে এ রকম ভিয়েন বসত, আমরা শুনেছি। সেই পুজোর ৭৫ বছর বলে, বৌদি নিজের দায়িত্বে সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনছে।” চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর নেপথ্যে গল্প আছে। উত্তমকুমারের নাকি ‘দেবীদর্শন’ হয়েছিল! পুজোর কিছু আগে ছাদে একটি ছোট্ট মেয়েকে পা ঝুলিয়ে বসে থাকতে দেখেছিলেন। সেই বাড়িতে বাচ্চা মেয়ে বলতে রত্না বন্দ্যোপাধ্যায় (উত্তমকুমারের ভাইঝি), যাঁকে ‘মাঈ’ বলে ডাকতেন উত্তমকুমার। অভিনেতা নাকি ছাদে ও ভাবে ভাইঝিকে পা ঝুলিয়ে বসতে দেখে বৌদির কাছে গিয়ে বলেন, ‘‘বৌদি, মাঈ ছাদে পা ঝুলিয়ে বসে। পড়ে যাবে। ওকে দেখো।’’ মা বলেছিলেন, ‘‘মাঈ তো ঘুমোচ্ছে!’’

এই ঘটনার রেশ কাটার আগেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দু’দিন আগে থেকে নাকি রোজ একটি লক্ষ্মীপেঁচা উত্তমকুমারের বাড়িতে আসতে আরম্ভ করল। দেখতে দেখতে তাঁর নাম, যশ, অর্থ বেড়ে চারগুণ। সেই থেকেই নাকি তাঁর বাড়িতে ঘটা করে শুরু হল লক্ষ্মীপুজো। সেই যে শুরু হল, কোনও বছর ফাঁক পড়েনি পুজোয়।

Advertisement

প্রথম দিন থেকে প্রতিমার মুখ অভিনেতার স্ত্রী গৌরী দেবীর আদলে তৈরি। এখনও সেই ধারা বজায় রেখেছেন নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়। দাদু নেই। তাই তাঁর আসনে সংকল্পে বসেন উত্তমকুমারের নাতি। এইদিন দেবলীনা সেজেছিলেন বেগনি পাড়ের সাদা কাঞ্জিভরম শাড়িতে।

৭৫-এর পুজোর আর কী বিশেষত্ব? নবমিতা-মৌমিতা একযোগে বললেন, “প্রতি বছরের মতো এ বছরেও মায়ের নতুন গয়না হয়েছে। চিক আর সোনার হারে দেবী যেন বিয়ের কনে! মাথার মুকুট থেকে পায়ের গয়না— সব সোনার। আর নতুন বেনারসি।” যৌথ পরিবারের পুজো। প্রত্যেক বছর কারও না কারও মানত থাকেই। এ বছর যেন উত্তমকুমারের মেজ ভাই বরুণ কুমারের মেয়ের ঘরের নাতি অনির্বাণ দত্তের পালা। তিনি ঘিয়ে রঙের জমিনে লাল পাড়ের জমকালো বেনারসি দিয়েছেন।

ভোগ ছাড়া কি দেবীর পুজো সম্পূর্ণ হয়! খিচুড়ি, ভাজা, তরকারি, চাটনি, পায়েস, ফল, মিষ্টি— সাজিয়ে দেওয়া হয় প্রতিমার সামনে। আমন্ত্রিতদের জন্য এই ভোগের পাশাপাশি থাকে পোলাও, আলুর দম, বেগুনি। এ বার বাড়তি সংযোজন দেবলীনার ভিয়েনের জিলিপি।

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় রাতজাগার চল প্রাচীন কালের। “শুনেছি, দাদু বাড়িতে পর্দা টাঙিয়ে নিজের ছবি দেখাতেন। আমারও সিনেমা দেখে রাত জাগি। তবে ল্যাপটপে”, হাসতে হাসতে বললেন দুই বোন। উত্তমকুমার নয়, পুজোর নতুন ছবি বা সিরিজ় দেখতেই এখন ভালবাসেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারের এই প্রজন্ম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement