শিশুর চোখের সমস্যায় দেরি নয়, যা যা করবেন বাবা-মায়েরা ছবি: এআই।
বর্ষার সময়ে কনজাঙ্কটিভাইটিসের সংক্রমণ বাড়ে। ছোটরা চোখের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত, ভাইরাস, ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণে চোখের নানা অসুখ দেখা দেয়। বাবা-মায়েরা খেয়াল করবেন, শিশু যদি বলে, চোখ জ্বালা করছে বা চোখ দিয়ে জল পড়ছে, অথবা যদি দেখেন চোখ লাল হয়ে ফুলে উঠেছে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। অনেক সময়ে ঘাম জমে ও হাতের ধুলোময়লা লেগে নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে চোখে। সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির কারণেও চোখ জ্বালা করে, লাল হয়ে যায়, চোখের পাতা ফুলে যায়।
কোন লক্ষণগুলি দেখলে সতর্ক হবেন?
১) চোখ ফুলে যাওয়া, চোখ চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ থেকে অনবরত জল পড়া।
২) চোখে আলো পড়লে অস্বস্তি বা যন্ত্রণা হওয়া। সংক্রমণের কারণে চোখ ঝাপসা দেখার মতো উপসর্গ দেখা যায়।
৩) চোখে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পিচুটি তৈরি হওয়া। পিচুটির জন্য চোখের পাতা আটকে যেতে পারে।
শিশুর চোখের যত্ন কী ভাবে নেবেন?
১) রোদচশমা পরাতেই হবে। ইউভি-এ ও ইউভি-বি রশ্মি প্রতিহত করতে পারে, এমন সানগ্লাস কিনতে হবে।
২) শিশুকে শেখাতে হবে, হাত না ধুয়ে যেন বার বার চোখে হাত না দেয়। নরম সুতির রুমাল রেখে দেবেন শিশুর স্কুলব্যাগে। রুমাল দিয়ে মুখ ও চোখ মোছা শেখাবেন।
৩) চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতি দিন চোখ জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।
৪) শিশু কি সাঁতার শেখে? সুইমিং পুলের জল থেকেও ঘটতে পারে সংক্রমণ। সাঁতার কাটার সময় যেন সে চশমা পরে থাকে, সে বিষয় নজর রাখুন। খুব প্রয়োজন না পড়লে এই সময়ে সাঁতারে না পাঠানোই ভাল।
৫) শিশুর চোখে হালকা লালচে ভাব দেখলে অনেক অভিভাবকই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে স্টেরয়েড জাতীয় আই ড্রপ দিয়ে দেন তাদের চোখে। এই ভুল করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও আই ড্রপ ব্যবহার করা যাবে না।
৬) ধুলো-ধোঁয়ায়, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় চোখের অ্যালার্জি হতে পারে ছোটদের। শিশু যদি ঠিকমতো বোর্ড দেখতে পাচ্ছে না বলে, বার বার চোখ রগড়ায়, চোখ থেকে জল গড়ানোর মতো সমস্যা থাকে, তখনই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
৭) চোখ ফুলে গেলে সেখানে ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। পরিষ্কার সুতির কাপড়ে কয়েকটি বরফের টুকরো ভাল করে মুড়ে নিয়ে ফোলা জায়গায় দিতে হবে। ঠান্ডা সেঁক দিলে প্রথমে সেই জায়গার রক্তনালিগুলি সঙ্কুচিত হবে, তার পর ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে রক্ত চলাচল শুরু হবে। এতে ফোলা ভাব খুব দ্রুত মিলিয়ে যাবে। চোখের যন্ত্রণা, চুলকানিও কমে যাবে।