Anjaneyasana Benefits

হাঁটুর ব্যথা নিয়ে সিঁড়ি ভাঙতে কষ্ট হয়? অঞ্জনেয়াসন অভ্যাস করলেই মুশকিল আসান হবে

রামায়ণ অনুযায়ী অঞ্জনা (মতান্তের অঞ্জনি) ছিলেন হনুমানের মা। মনে করা হয়, সেখান থেকেই এই ভঙ্গির নামকরণ করা হয়েছে। এই আসনের ভঙ্গি দেখতে অনেকটা ত্রয়োদশীর চাঁদের মতো, তাই অনেকে এই আসনকে ‘ক্রিসেন্ট মুন পোজ়’ নামেও চেনেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৩
Share:

কী ভাবে করবেন অঞ্জনেয়াসন? চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।

হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসতে অসুবিধা হয়। তাই বাড়িতে বেশির ভাগ কাজ দাঁড়িয়েই করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু অফিসে তো সারা দিন দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। চেয়ারে বসতে হয়, হাঁটাচলা করতে হয়, আবার কখনও সিঁড়িও ভাঙতে হয়। তাই বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে ‘নি ক্যাপ’ পরতে ভোলেন না। এই জিনিসটি হাঁটুতে থাকলে ব্যথা-বেদনা টেরই পাওয়া যায় না। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা ‘নি ক্যাপ’ পরেই বা থাকবেন কী করে?

Advertisement

বাড়ি ফিরে হাঁটুর উপরের সেই ‘বর্ম’টি খুলে ফেলতে হয়। তখন আর হাঁটু মুড়তে পারেন না। সিঁড়ি ভাঙতেও বেজায় কষ্ট হয়। হাঁটুর এই ধরনের ব্যথা বশে রাখতে সেঁক কিংবা ব্যথা কমানোর ওষুধের উপর ভরসা করেন অনেকে। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, নিয়মিত অঞ্জনেয়াসন অভ্যাস করলে এই ধরনের কষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।

রামায়ণ অনুযায়ী অঞ্জনা (মতান্তের অঞ্জনি) ছিলেন হনুমানের মা। মনে করা হয়, সেখান থেকেই এই ভঙ্গির নামকরণ করা হয়েছে। এই আসনের ভঙ্গি দেখতে অনেকটা ত্রয়োদশীর চাঁদের মতো, তাই অনেকে এই আসনকে ‘ক্রিসেন্ট মুন পোজ়’ নামেও চেনেন। আবার অনেকের কাছে এটিই ‘লো লাঞ্জ পোজ়’ নামে পরিচিত।

Advertisement

কী ভাবে করবেন?

· প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। দু’পায়ের মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান রাখতে হবে। দুই হাত রাখুন কোমরে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন।

· এ বার প্রথমে ডান পায়ের পাতাটি শরীরের ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি কোণ করে রাখুন। গোটা শরীরটাকেই ধীরে ধীরে ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন।

· ডান হাঁটু ধীরে ধীরে ভাঁজ করে শরীরটাকে মাটির কাছাকাছি নিয়ে আসুন। ডান পায়ের পাতা থাকবে মাটিতে।

· শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাঁ পা প্রসারিত করতে হবে। তবে পিছন দিকে। বাঁ পায়ের উপরের অংশ মাটি স্পর্শ করে থাকবে। পায়ের পাতাটি তাক করা থাকবে ঘরের ছাদের দিকে।

· শ্বাস নিতে নিতে দু’হাত মাথার উপরের দিকে তুলুন। দু’টি হাতের তালু একসঙ্গে প্রণামের ভঙ্গিতে রাখুন মাথার ঠিক উপরে।

· শরীরের উপরিভাগ যতটা সম্ভব হেলিয়ে দিন পিছনের দিকে। অর্থাৎ, দেহের ভার বেশির ভাগটাই থাকবে বাঁ পায়ের উপর। এই অবস্থানে থাকতে হবে ৩০ সেকেন্ড। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হবে স্বাভাবিক ভাবেই।

· তার পর আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার উল্টো দিকের, অর্থাৎ, বাঁ পায়ে একই ভাবে অভ্যাস করতে হবে এই আসন।

কেন করবেন?

এই আসনটি একাগ্রতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। উদ্বেগ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সায়াটিকা স্নায়ুর ব্যথা উপশম করে। মেরুদণ্ডের নমনীয়তা রক্ষা করে। দেহের নিম্নাংশ সচল রাখতে এবং পেশিগুলি মজবুত রাখতে সাহায্য করে। মহিলাদের ঋতুচক্রজনিত ব্যথা-যন্ত্রণা অনেকটা লাঘব করে। বিপাকক্রিয়া উন্নত হয়। টান টান থাকে হ্যামস্ট্রিং। নিয়মিত এই আসন অভ্যাস করলে দেহের ভারসাম্য ধরে রাখাও সহজ হয়।

সতর্কতা:

শরীরের যে কোনও অংশের পেশিতে টান লেগে যেতে পারে। অস্থিসন্ধিতে চোট, আঘাত বা ব্যথা থাকলে এই আসন না করাই ভাল। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে এই আসন অভ্যাস করতে যাবেন না। তাতে ব্যালান্স হারিয়ে ফেলার ভয় থাকে। কোমরে বা হাঁটুতে চোট, আঘাত লেগে থাকলে অঞ্জনেয়াসন অভ্যাস করতে যাবেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement