Skin Damage due to Air Pollution

বায়ুদূষণ কী ভাবে ত্বকের ক্ষতি করে? শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় কী ভাবে তা থেকে বাঁচবেন?

যে কোনও সমস্যারই সমাধানের জন্য সমস্যাটিকে বোঝা সবার আগে জরুরি। তাই শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ুদূষণ থেকে হওয়া ত্বকের ক্ষতি কী ভাবে আটকাবেন, তা জানতে হলে বুঝতে হবে ক্ষতিটা হয় কী ভাবে?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:১৪
Share:

দূষিত বাতাস ত্বকের কতটা ক্ষতি করে? ছবি : সংগৃহীত।

রোদ থেকে ত্বককে বাঁচানোর নানা চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ত্বকের ক্ষতি শুধু সূর্যের আলো থেকে হয় না। এই শীতে বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়ে। সেই দূষিত বাতাসও নানা ভাবে ক্ষতি করে ত্বকের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার মাত্রা সূর্যের আলোর থেকে হওয়া ক্ষতির থেকেও বেশি!

Advertisement

যে কোনও সমস্যারই সমাধানের জন্য সমস্যাটিকে বোঝা সবার আগে জরুরি। তাই শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বায়ুদূষণ থেকে হওয়া ত্বকের ক্ষতি কী ভাবে আটকাবেন, তা জানতে হলে বুঝতে হবে ক্ষতিটা হয় কী ভাবে?

১। নানা ভাবে ত্বকের রন্ধ্রপথের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। বাতাসে ভাসমান ধুলোকণা, ধোঁয়া এবং দূষিত পদার্থ ত্বকের উপর জমে। ত্বক থেকে নিঃসৃত সিবাম, ঘামের সঙ্গে মিশে ত্বকের রন্ধ্রপথে জমা হয়। ফলে ব্রণ, ফুস্কুড়ি, ব্ল্যাকহেডসের মতো সমস্যা হতে পারে।

Advertisement

২। ত্বকে বয়সের ছাপও পড়তে পারে। কারণ দূষিত বাতাসে থাকা ধুলোকণা ত্বকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালসের জন্ম দেয়। যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার প্রোটিন কোলাজেনকে নষ্ট করে। নষ্ট করে ইলাস্টিনও। ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে, চামড়া ঝুলে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক, অনুজ্জ্বল।

৩। ত্বকের প্রদাহ বাড়িয়ে নানা ধরনের চর্মরোগেরও জন্ম দিতে পারে দূষিত বাতাস। এগজ়িমা, সোরিয়াসিস, রসাসিয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে।

৪। ত্বকের উপরিভাগে একটি প্রাকৃতিক রক্ষক-স্তর থাকে। যা বাতাসের দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তবে ক্রমাগত তাতে ধুলো-ধোঁয়ায় ভরা বাতাস লাগতে থাকলে ওই স্তরও দুর্বল হয়ে পরে। এর উপরে যদি শরীরে জলাভাব থাকে (যা শীতে হওয়াটা খুব স্বাভাবিক), তবে ওই স্তর সহজেই ভেঙে যায়। ফলে ত্বকে নানা ধরনের সংক্রমণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৫। ত্বকে কালচে ছোপ পড়ার সমস্যাও হতে পারে দূষিত বাতাসের জন্য। কারণ বাতাসের ধুলো, ধোঁয়া ত্বকের সংস্পর্শে এসে মেলানিনের উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। যা থেকে ত্বকে কালচে ছোপ পড়তে পারে কিংবা মুখের বিভিন্ন অংশে ত্বকের রঙের তারতম্য ঘটতে পারে।

৬। ক্রমাগত ধুলো-ধোঁয়ায় মাখা পরিবেশে থাকলে ত্বকের যে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, তার ক্ষতি হতে পারে। ভিটামিন ই ত্বককে এই ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। সেই ভিটামিন ই-র মাত্রাও কমে যেতে পারে।

৭। ত্বককে অতি সংবেদনশীল করে তুলতে পারে দূষিত বাতাস। কারণ শহরে, শহরতলিতে ওই ধরনের বাতাসে থাকে বিভিন্ন কলকারখানা এবং গাড়ির ধোঁয়া থেকে বেরনো ক্ষতিকর গ্যাস। যেমন নাইট্রোজেন ডি অক্সাইড, সালফার ডি অক্সাইড ইত্যাদি। এগুলিও ত্বকের সংস্পর্শে এলে ত্বকে লালচে ভাব, র‌্যাশ, ফুস্কুড়ি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ত্বক অতি সংবেদনশীল হয়ে যাওয়ায় নানা ধরনের সংক্রমণও হতে পারে।

কী ভাবে ক্ষতি কমাবেন?

১। বাইরে থেকে ঘরে ঢোকার পরে অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। নিয়ম করে দিনে অন্তত দু’বার ভাল ভাবে মুখ পরিষ্কার করুন। সম্ভব হলে প্রথমে তৈলাক্ত ক্লিনজ়ার এবং তার পরে জলে ধোয়ার ক্লিনজ়ার দিয়ে ডবল ক্লিনজ়িং করুন।

২। মুখে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ সেরাম বা লোশন মাখুন। বা ঠান্ডা গ্রিন টিও লাগাতে পারেন।

৩। প্রতি বার মুখ পরিষ্কার করার পরে ভাল ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিন মুখে। এতে ত্বককে দূষণ থেকে বাঁচানোর রক্ষক-স্তর ভাল থাকে।

৪। বাইরে বেরনোর আগে অবশ্যই এসপিএফ ৩০ ক্ষমতা সম্পন্ন সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। কারণ দূষণ থেকে হওয়া ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে অতিবেগনি রশ্মি।

৫। সপ্তাহে অন্তত ১-২ বার ত্বককে মৃতকোষ মুক্ত করুন। তা ঘরোয়া পদ্ধতিতে হতে পারে কিংবা দোকান থেকে কিনতে পাওয়া যায় এমন এক্সফলিয়েটিং স্ক্রাব দিয়েও করা যেতে পারে।

৬। বাতাসের দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচাতে মাস্ক কাজে লাগতে পারে।

৭। জল বেশি করে খেতে হবে। খেতে হবে ভিটামিন এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর খাবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement