সতর্ক না হলে প্রতিদিনের খাবারে চিনির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
অতিরিক্ত শর্করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। মেদ ঝরাতে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় চিনিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবেই বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা। কিন্তু চাইলেও অনেকেই খাবারে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে সহজ কতগুলো পদ্ধতি অনুসরণ করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি থেকে ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগ হতে পারে। আবার মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে সময়ের সঙ্গে দাঁতেরও ক্ষতি হয়। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় শর্করার মাত্রা কমাতে ‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন’ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে।
১) দিনে এক চা চামচ চিনি কম খাওয়া মানে তা ৯০ দিনে ১৪৪০ ক্যালোরির সমান। অর্থাৎ, তা ছ’টি প্রমাণ আকৃতির চকোলেট বারের সমান।
২) সারা দিনে পানীয়ের মাধ্যমে দেহে শর্করা প্রবেশ করে। এ ক্ষেত্রে মিষ্টি পানীয়ের অবদান রয়েছে। তাই মিষ্টি পানীয়ের ‘ডায়েট’ সংস্করণ পানা করা যেতে পারে। চা এবং কফিতে চিনির পরিবর্তে মধু বা কোকোনাট সুগার ব্যবহার করা যেতে পারে। পানীয়ের মধ্যে চিনি না ব্যবহার করে মাসে প্রায় ১ কেজি চিনি কম খাওয়া সম্ভব।
৩) প্রাতরাশের ক্ষেত্রে মিষ্টি যুক্ত কর্নফ্লেক্স, পাউরুটি, জ্যাম, জেলি খাওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে খাবারের সঙ্গে মিষ্টির জন্য প্রাকৃতিক মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে তিন মাসে প্রাতরাশ থেকে প্রায় ২১০ চা চামচ সমান চিনি বাদ দেওয়া সম্ভব।
৪) স্ন্যাকস্ বা ডেজ়ার্টের ক্ষেত্রে চিনি কমাতে চকোলেট, আইসক্রিম, মিষ্টি এবং বেকারিজাত খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত। কোনও ডেজ়ার্টে মিষ্টির প্রয়োজন হলে ব্রাউন সুগার বা অরগ্যানিক ম্যাপল সিরাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রতি দিন কতটা চিনি?
ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজ়েশন (হু)-এর পরামর্শ অনুযায়ী, খাবারে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ক্যালোরির ১০ শতাংশের কম চিনি থাকা উচিত। প্রতি দিনের খাবারে চিনির পরিমাণ ৫ শতাংশের কম হলে সবচেয়ে ভাল। উদাহরণস্বরূপ, ২০০০ ক্যালোরির দৈনন্দিন ডায়েটে ২৫ গ্রামের (৬ চা চামচ) থেকে কম চিনি থাকা উচিত।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইএ)-এর মতে, প্রতি দিনের ডায়েটে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৬ গ্রাম (৯ চা চামচ) এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রাম (৬ চা চামচ) চিনি থাকা উচিত। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাদের নির্ধারিত প্রাত্যহিক ডায়েটে চিনির মাত্রা ২৫ গ্রামের (৬ চা চামচ) কম হওয়া উচিত।