প্রোটিন ডায়েট করেও ওজন কমছে না, কোথায় ভুল হচ্ছে? ছবি: ফ্রিপিক।
ভাত, রুটি অর্থাৎ, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে শুধু প্রোটিন, যেমন মাছ, মাংস বা ডিম খেয়ে পেট ভরানোর নতুন ধারা শুরু হয়েছে। ওজন কমাতে শুধু মাছ বা মাংস খেয়ে থাকার এই ডায়েটের নাম প্রোটিন ডায়েট, যা নিয়ে এখন চর্চা বেশি। লোকজনের বিশ্বাস, এ ভাবে খেলে তাড়াতাড়ি ওজন কমতে পারে। তা কমছেও অনেকের। তবে সমস্যা হল অনেকের দাবি, শুধু মাছ-মাংস খেয়ে থেকেও ওজন কমছে না। অর্থাৎ, প্রোটিন ডায়েট বিফলে যাচ্ছে। আর শরীরও দুর্বল হচ্ছে। তা হলে কি এই ডায়েটে লাভ বেশি হয় না, না কি খাওয়ার ভুলেই ওজন কমছে না?
পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রোটিন ডায়েট ঠিকমতো করলে ওজন কমবে। তবে শুধু মাছ বা মাংস খেয়ে থাকতে গিয়ে যে ভুলগুলি হচ্ছে, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কী কী ভুল হচ্ছে?
১) ভাত বা রুটি বাদ দিয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবার, যেমন মাছ, মাংস বা সয়াবিন, পনির খেয়ে পেট ভরান ঠিকই, তবে শাকসব্জি একেবারে বাদ দিলে চলবে না। সব্জিতেও প্রোটিন থাকে, আর থাকে ফাইবার, যা শরীরের জন্য জরুরি। কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়ায় যে খামতি তৈরি হয় শরীরে, তা পূরণ করতে পারে ফাইবার।
২) প্রোটিন খেতে হলে সঠিক খাবার নির্বাচন করাও জরুরি। লিন ফ্যাট (চর্বি ছাড়া মাংস)-এর বদলে যদি বেশি চর্বিযুক্ত মাংস, রেড মিট বা তৈলাক্ত মাছ খেতে থাকেন, তা হলে ক্যালোরি পোড়ার চেয়ে বরং বৃদ্ধি পাবে।
৩) অনেক খাবারকে 'হাই প্রোটিন' মনে হলেও, তাতে আসলে ফ্যাট বা কার্বোহাইড্রেট থেকে বেশি ক্যালোরি আসে। যেমন, পিনাট বাটার, পনির, কিনোয়াতে প্রোটিনের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটও থাকে।
৪) প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে সস বা নানা রকম ড্রেসিং (বারবিকিউ সস, মেয়োনিজ় ইত্যাদি) বা টপিংসে প্রচুর পরিমাণে চিনি ব্যবহার করলে, তার থেকেও ক্যালোরি চড়চড় করে বৃদ্ধি পাবে।
৫) শুধু মাছ বা মাংস খেলেই হবে না, তার সঙ্গে শরীরের পুষ্টির জন্য ভিটামিন ও খনিজ উপাদানগুলিও জরুরি। তার জন্য নানা রকম মরসুমি ফলও খেতে হবে। খনিজ উপাদানগুলির ঘাটতি হলে প্রোটিন ডায়েটে কোনও লাভই হবে না।
৬) খাওয়ার পাশাপাশি শরীরচর্চাও জরুরি। প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন মেপে খেতে হবে, তেমনই শরীরচর্চাও নিয়ম করে করতে হবে। তাতেই ওজন কমবে।
৭) প্রোটিন বিপাকের জন্য প্রচুর জল লাগে। তাই রোজ পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা জরুরি। না হলে শরীরে জলের ঘাটতি হবে, হজমের সমস্যাও হবে। এতে ওজন কমাতে গিয়ে উল্টে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। তাতে ওজনও বাড়তে থাকবে।