রোজ ক’টা সিঁড়ি ভাঙলে মেদ ঝরবে দ্রুত? ছবি: সংগৃহীত।
অনেকেরই ধারণা, জিমে গিয়ে ওয়েট লিফ্টিং করা অথবা ট্রেডমিলে দৌড়ে ঘাম ঝরানোই আদতে শরীরচর্চা। কিন্তু শরীরের গড়ন ধরে রাখা, বাড়তি মেদ ছেঁটে ফেলার একমাত্র উপায় শুধু জিম নয়। সুস্থ-সবল শরীর চাইলে নানা ধরনের শারীরিক কসরতই উপায়। হাঁটা, জগিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা তার মধ্যে অন্যতম। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার অভ্যাস শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে, মাংশপেশির সুগঠনে এবং ভারসাম্য দৃঢ় করতে খুবই কার্যকর। বেশি ক্যালোরি ঝরানো এবং পেশির টোনিংয়ে সাহায্য করে এই কসরত। লিফ্ট ব্যবহার না করে দিনের মধ্যে বার কয়েক খুব সাধারণ এই কসরত করলে হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়ে। হাঁটু সংলগ্ন মাংসপেশি মজবুত হয়।
ওজন ঝরানোর জন্য সিঁড়ি ভাঙার মতো ব্যায়াম ভাল কেন?
শরীরচর্চার বিভিন্ন পর্যায় এবং ধরন রয়েছে। জিমে গিয়ে যদি ‘হাই-ইনটেনসিটি এক্সারসাইজ়’ করার সময় না থাকে, সে ক্ষেত্রে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করাই যায়। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, সমতল, সোজা রাস্তায় হাঁটার তুলনায় তা অনেক ভাল। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে ক্যালোরি পোড়ে বেশি। কোয়াড্রিসেপ্স, হ্যামস্ট্রিং, কাফ মাস্ল-এর বিশেষ উপকার হয়। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময়ে যেহেতু হার্ট রেট বেড়ে যায়, তাই ক্যালোরিও পোড়ে দ্রুত। প্রশিক্ষকেরা বলছেন, নিয়ম মেনে, সঠিক পদ্ধতিতে সিঁড়ি ভাঙলে মিনিটে প্রায় ৮ থেকে ১১ ক্যালোরি পোড়ানো সম্ভব।
সারা দিনে কতগুলি সিঁড়ি চড়া উচিত?
প্রশিক্ষকেরা বলছেন, তেমন কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে সারা দিনে অন্ততপক্ষে আধ ঘণ্টা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা যেতেই পারে। পায়ের হিসাবে গুনলে যা প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ ধাপের মতো। তবে প্রথমেই খুব বেশি বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা না করে ধীরে ধীরে স্টেপের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। মনের মতো ফল পেতে ধারাবাহিকতাও বজায় রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার অভ্যাস করতে হবে। কিন্তু তাতেই যে তফাত নজরে পড়বে, এমন নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। কার শরীরে সিঁড়ি ভাঙার ফল কেমন হবে, তা সেই ব্যক্তির দেহের ওজন, সিঁড়ির প্রকৃতি এবং সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার গতির উপরেও নির্ভর করে।
মানতে হবে সঠিক নিয়ম
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় আপনার ভঙ্গিমা যেন ঠিক থাকে। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন, সামনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। শুরুতেই তাড়াহুড়ো নয়। ধীরে ধারে শুরু করুন এবং পরে সময়সীমা বাড়ান। এই কসরতের জন্য সঠিক স্পোর্টস শু-এর প্রয়োজন। যে কোনও জুতো পরে এই কসরত করলে পায়ে টান ধরা বা চোট লাগার আশঙ্কা থেকে যায়। যদি হাঁটাচলায় সমস্যা বা বাতের সমস্যা থাকে, তবে এই কসরত করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।