Urination Frequency

দিনে কত বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক? কতটা কম বা বেশি হলে তা কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত?

সারা দিনে কত বার প্রস্রাব পায়, সে হিসেব রেখেছেন কি? কত বেশি বা কম হওয়া বিপদের ইঙ্গিত?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ০৯:০৮
Share:

দিনে কত বার প্রস্রাব হওয়া ভাল, কখন তা চিন্তার? ছবি: ফ্রিপিক।

প্রস্রাব কি ঘন ঘন হয়? না কি খুব কম হয়? দিনে কত বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক, সেই মাপকাঠিটা জানেন কি? অর্থাৎ, কতটা কম বা বেশি হলে তখন সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে, তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

ঘন ঘন প্রস্রাব বা রাতে বার বার শৌচাগারে যাওয়া— এমন উপসর্গ দেখা দিলে সকলেই শঙ্কিত হন। তার মানে কি ডায়াবিটিস হয়েছে? বয়স্কদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি। অন্তঃসত্ত্বারাও এ সমস্যায় ভোগেন। অনেকেই ভাবেন, ঘন ঘন প্রস্রাব মানেই তা ক্ষতিকর। কিন্তু ঘন ঘন বলতে তা ঠিক কতটা বা কত বার বোঝায়?

দিনে কত বার স্বাভাবিক?

Advertisement

প্রস্রাব দিনে কত বার হওয়া স্বাভাবিক, তার একটা মাপ আছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থের গবেষণাপত্র বলছে, এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে ৬ থেকে ৭ বার প্রস্রাব হওয়াকে স্বাভাবিকই বলা যায়। প্রস্রাব কত বার হবে, তা নির্ভর করে সেই ব্যক্তি কতটা জল বা তরল খাবার খাচ্ছেন, তার উপর। সে দিক থেকে দিনে ৪ থেকে ১০ বার প্রস্রাব হওয়াকে চিকিৎসকেরা স্বাভাবিকই বলে থাকেন। কিন্তু গোল বাধে এর বেশি বা কম হলে। সেটা কেমন?

ধরুন, দিনে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব হচ্ছে, আর প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর প্রস্রাবের বেগ আসছে। তখন বুঝতে হবে, কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে। আবার যদি দিনে ৪-৬ বারের কম প্রস্রাব হয়, প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা বা যন্ত্রণা হয়, তখনও সতর্ক হতে হবে।

কখন তা রোগ?

এক জন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ে ২০০ মিলিলিটার পরিমাণ প্রস্রাব জমা হলেই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হয়। সুস্থ অবস্থায় মূত্রাশয় ৩৫০ থেকে ৫৫০ মিলিলিটার মূত্র ধরে রাখতে সক্ষম। যাঁরা দীর্ঘ সময়ে প্রস্রাব চেপে রাখেন, তাঁদের সমস্যা বেশি হয়। সে ক্ষেত্রে শ্রোণিতল বা পেলভিক ফ্লোরের পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তখন মূত্রথলিতে চাপ পড়ে, সেই জায়গার পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণ বাধা পায়, ফলে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। যেমন— মূত্রনালিতে সংক্রমণ হতে পারে, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসতে পারে, হাঁচি বা কাশির সময়েও প্রস্রাব বেরিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ, প্রস্রাব ধরে রাখতেও সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষ দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার জল পান করলে ভাল। তবে রোগব্যাধি থাকলে এই পরিমাণ আলাদা হবে। চিকিৎসকেরা বলেন, দিনে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব হতে থাকলে তা অস্বাভাবিক। তখন একে বলা হবে 'পলিইউরিয়া'। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল খেলে, ক্যাফিন যুক্ত পানীয় ঘন ঘন খেতে থাকলে, অ্যালকোহল বেশি খেলে তখন এমন হতে পারে। কর্মসূত্রে অনেককেই রাত জেগে কাজ করতে হয়। রাতভর যদি ঘন ঘন চা বা কফি খেতে থাকেন, তখন এমন সমস্যা হতে পারে।

রাতে কত বার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?

রাতে শুলেই প্রস্রাব পায়, বার বার উঠতে হয়— এমন সমস্যা অনেকেরই। খেয়াল রাখতে হবে, রাতে এক বার বা নিদেনপক্ষে দু’বার প্রস্রাবের বেগ এলে তা স্বাভাবিকই ধরা হবে। কিন্তু যদি প্রতি ঘণ্টায় প্রস্রাবের বেগ আসে, তা হলে অস্বাভাবিক। এই সমস্যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘নকচুরিয়া’।কাদের হয়:

১) অ্যান্টি সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ বা কিডনির ওষুধ খেলেও প্রস্রাব বেশি পায়।

২) চল্লিশের পরে নকচুরিয়ায় ভোগেন অনেকে, বয়স্কদের সমস্যা বেশি হয়।

৩) মহিলাদের গর্ভাবস্থায় বা রজোনিবৃত্তির পরে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

৪) হার্টের অসুখ, কিডনিতে স্টোন বা প্রস্টেটের রোগ থাকলেও এমন হতে পারে।

৫) ডায়াবিটিস থাকলে এই সমস্যা হতে পারে।

৬) শরীরে থাইরয়েড হরমোন বা কর্টিসল হরমোনের আধিক্য হলেও হতে পারে।

৭) স্নায়ুর রোগ বা মূত্রথলির ক্যানসার হলেও হতে পারে।

প্রস্রাবের সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে তো যেতেই হবে, পাশাপাশি জীবনযাপনেও বদল আনা জরুরি। মদ্যপান, চা-কফি বা বেশি ক্য়াফিন যুক্ত খাবার খাওয়া ছাড়তে হবে। বেশি মশলাদার খাবার খাওয়া যাবে না। পাশাপাশি, শরীরচর্চা নিয়ম মেনে করতে হবে। হাঁটাহাঁটি, দৌড়নো, সাঁতার বা যোগব্যায়াম নিয়মিত করলে পেলভিক পেশির ব্যায়াম হবে। ফলে মূত্রথলির যে কোনও সমস্যা দূরে থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement