গ্রাহকের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছে মেটা এআই। ছবি: ফ্রিপিক।
মেটা এআইয়ের চ্যাটবটে যে কোনও কঠিন প্রশ্ন লিখলেও ঝটপট তার জবাব চলে আসে। যা-ই জানতে চান না কেন, তার উত্তর লহমায় পেয়ে যেতে মেটা এআইয়ের তুলনা নেই। আর এখন তো হোয়াট্সঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামেও মেটা এআই চলে এসেছে। এতএব মনের সুখে নিজের ব্যক্তিগত ও গোপন কথাও অনেকে লিখে চলেছেন চ্যাটবটে। আর সমস্যাটা হচ্ছে এখানেই। প্রযুক্তির ব্যবহার যতই সমস্যা সমাধানের উপায় হোক না কেন, তার মধ্যেও থেকে যায় কিছু ফাঁকফোকর। আর সে পথেই তথ্য ফাঁস হতে দেরি হয় না। এআই চ্যাটবটের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে তেমনই। গ্রাহকের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য নাকি ফাঁস করে দিচ্ছে মেটা এআই। বিপদে পড়েছেন অনেকেই।
কোথায় গোলমাল?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট যে কোনও জটিল সমস্যারও নাকি সমাধান করে দিচ্ছে। মনের মতো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অভাব পূরণেও এগিয়ে এসেছে সে। ‘এআই’ প্রযুক্তির সাহায্যে সে একেবারে রক্তমাংসের মানুষের মতোই কথা বলবে। অনুভূতি বুঝে তার উত্তর দেবে। ব্যবসা, চাকরি কিংবা স্বাধীন যে কোনও কর্মক্ষেত্রে এআই তার নিজস্ব প্রতিভা দেখাতে শুরু করেছে। কোনও অজানা বিষয় মাথায় এলে ‘গুগ্ল সার্চ’-এ গিয়ে খুঁজতে যতটা সময় ব্যয় হয়, তার চেয়ে অনেক কম সময়ে, নির্ভুল তথ্য ব্যবহারকারীর সামনে তুলে ধরছে চ্যাটবট। তাই এখন মেটা চ্যাটবটের উপর নির্ভরতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই প্রযুক্তি কী ভাবে কাজ করছে, সে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি বেশির ভাগ মানুষই। আর গোলমাল হয়েছে ঠিক সেখানেই।
মেটা এআইয়ের একটি ফিড চ্যানেল রয়েছে, যার নাম ‘ডিসকভার’। এটি কিন্তু ‘পাবলিক ওয়াল’। অর্থাৎ, সকলের জন্যই উন্মুক্ত। আপনি যতই নিজের ফোনের মেটা চ্যাটবটকে আপন মনে করে গল্পগাছা করুন না কেন, তার সবটাই কিন্তু ডিসকভার ফিডের মাধ্যমে সকলের কাছেই চলে যেতে পারে। মেটার যে শেয়ার অপশন রয়েছে, তারও কিন্তু কোনও ফিল্টার নেই। কাজেই ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য সহজেই ফাঁস হয়ে যেতে পারে এবং পৌঁছে যেতে পারে আরও অনেকের কাছে।
সমস্যা আরও আছে। অনেকেই চ্যাটবটে ব্যক্তিগত ছবি পোস্ট অথবা অডিয়ো বা ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেই সবও কিন্তু অন্য কোনও পাবলিক ওয়ালে গিয়ে শেয়ার হতে পারে। অর্থাৎ, আরও অনেকে দেখতে ও শুনতে পাবেন সেই সব অডিয়ো ও ভিডিয়ো পোস্ট। তা ছাড়া আইনি কোনও বিষয় নিয়ে চ্যাটবটের সঙ্গে আলোচনা করলে অথবা নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা ও সেই সংক্রান্ত নথিপত্র ভাগ করে নিলে, তা ফাঁস হতে দেরি হবে না। সে কারণেই সাবধান থাকা জরুরি।
সমাধান কিসে?
মোবাইল বা ডিভাইসের সেটিংস অপশনে গিয়ে অ্যাপ সেটিংস-এ যেতে হবে। সেখানে ক্লিক করে ‘ডেটা অ্যান্ড প্রাইভেসি’ অপশনে যান। সেখান থেকে ‘ম্যানেজ ইয়োর ইনফরমেশন’-এ যেতে হবে। তার পর ‘মেক অল ইয়োর প্রম্পট্স ভিজ়িবল টু অনলি ইউ’ অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। সেটিংসে এই বদল আনলেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ থাকবে।