Coffee for Metabolism Boost

বিপাকের হার বাড়িয়ে ওজন কমাতে পারে ব্ল্যাক কফি! কিন্তু কখন আর কতটা খাবেন?

গবেষণা বলছে কফি খেয়ে ওজন কমার সবচেয়ে বড় কারণ হল এটি শরীরের বিপাকের হার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর বিপাকের হার বাড়লে শরীরের ফ্যাট ভাঙে সহজে। বাড়তি মেদ জমতে পারে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ব্ল্যাক কফি খেলে রোগা হওয়া যায়, এমনটা অনেকেই শুনে থাকবেন। কিন্ত তা কেন ওজন কমাতে সাহায্য করে জানেন কি? গবেষণা বলছে কফি খেয়ে ওজন কমার সবচেয়ে বড় কারণ হল এটি শরীরের বিপাকের হার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর বিপাকের হার বাড়লে শরীরের ফ্যাট ভাঙে সহজে। বাড়তি মেদ জমতে পারে না।

Advertisement

কী ভাবে কফি বিপাকের হার বৃদ্ধি করে?

কানাডার আলবের্তা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইরানের তেহরানের ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিটি নিউট্রিশনের মিলিত গবেষণা কফি থেকে বিপাকের হার বৃদ্ধির মূলত তিনটি কারণ জানিয়েছে।

Advertisement

১। ক্যাফেইন : স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে ক্যাফেইন। যা শরীরের বিপাকের হার বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে বিশ্রামরত অবস্থাতেও শরীর দ্রুত ক্যালোরি ঝরাতে থাকে।

২। হরমোন : ক্যাফেইন অ্যাড্রেনালিন হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে, যা ফ্যাটসেলগুলি রক্তে ছড়িয়ে দেয়। শরীর তখন ওই ফ্যাটকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

৩। থার্মোজেনেসিস : কফি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা সাময়িকভাবে সামান্য বৃদ্ধি পায়। এই প্রক্রিয়াকে থার্মোজেনেসিস বলা হয়, যা তাপ উৎপাদনের জন্য ক্যালোরি খরচ করে।

ওজন কমাতে হলে কফি কী ভাবে আর কখন খাওয়া উচিত?

তারকা পুষ্টিবিদ রায়ান ফার্নান্দো জানাচ্ছেন, শুধু কফি খেয়ে রোগা হওয়া মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। তবে রোগা হওয়ার প্রক্রিয়ায় সাহায্য় করার জন্য যদি কেউ কফি খেতে চান, তবে কয়েকটি নিয়ম মেনে খেলে কাজ হবে বেশি।

১। দুধ-চিনি বাদ

কফিতে দুধ, চিনি, ক্রিম বা অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত অ্যাডিটিভস না মিশিয়ে খান। কারণ, এ সবে ক্যালোরির মাত্রা বেড়ে যায়। ক্যাফেইন যে সামান্য ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করবে, তার থেকে বেশি ক্যালোরি ঢুকবে শরীরে।

২। সঠিক সময়ে পান করুন

ক্যাফেইনের প্রভাব সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে সঠিক সময়ে ব্ল্যাক কফি পান করুন।

শরীরচর্চার ৩০-৬০ মিনিট আগে: কফিতে থাকা ক্যাফেইন অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ফ্যাট কোষ থেকে ফ্যাটি অ্যাসিড ভেঙে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরচর্চা করার সময়ে বেশি শক্তি পাওয়া যায়। তাতে ক্যালোরিও ঝরে দ্রুত।

প্রাতরাশের পরে : দিনের শুরুতে ব্ল্যাক কফি পান করলে তা সাময়িকভাবে বিপাকের হারকে ৩-১১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে দিনের শুরুতে অনেক বেশি সক্রিয় থাকা যায়।

দুপুরের খাবারের আগে: এটি খিদে কমাতে সাহায্য করে। ফলে আগে ব্ল্যাক কফি খেয়ে নিলে দুপুরের খাবারে বেশি খেয়ে ফেলার আশঙ্কা কমে। শরীরে ক্যালোরিও কম যায়। যা পরোক্ষে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৩। কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে

কফির বিপাক বৃদ্ধির গুণকে আরও বাড়িয়ে নিতে হলে তাতে মেশাতে পারেন কিছু মশলা বা স্বাদ বর্ধক।

দারচিনি : কফিতে এক চিমটে দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে তা হজমশক্তি এবং বিপাক হার বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

লেবুর রস : দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে খেলে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যাফেইনের সঙ্গে মিশে বিপাক হার আরও বাড়িয়ে দেয়।

গোলমরিচ : কফিতে সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো মেশালেও বিপাক বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

খেয়াল রাখুন

১। দিনে ৩-৪ কাপের বেশি কফি পান না করাই ভালো। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা, এবং ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমাতে বাধা দিতে পারে।

২। শুধুমাত্র ব্ল্যাক কফি খেয়েই উল্লেখযোগ্য ওজন কমানো যায় না। সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়াম এর সঙ্গে এটি একটি সহায়ক পানীয় হিসেবে কাজ করে।

৩। ঘুমনোর ৬ ঘণ্টা আগে কফি না খাওয়াই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement