Stroke Prevention Tips

স্ট্রোকের সময়ে প্রাণ বাঁচাতে পারে মাত্র ৬টি অক্ষর! কী ভাবে বুঝবেন? ব্যাখ্যা করলেন চিকিৎসক

সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টস দু’রকমের হয়, ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমার্যাজিক স্ট্রোক। দু’টিতেই তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। তবে যত ক্ষণ বোঝার ক্ষমতা থাকে, তত ক্ষণ স্ট্রোকের লক্ষণ রোগী টের পাবেন। যাঁদের বোঝার ক্ষমতা থাকে না, তখন রোগীর নিকটস্থ ব্যক্তিকেই সতর্ক হতে হবে। আর সেই বোঝার জন্য তৈরি হয়েছে ৬টি অক্ষরের শব্দ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ০৯:০২
Share:

স্ট্রোক হচ্ছে কি না, কী ভাবে বুঝবেন? —প্রতীকী চিত্র।

সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টস (সিভিএ), চলতি কথায় স্ট্রোক। বলে-কয়ে আসে না। স্ট্রোক হওয়ার পর কত ক্ষণে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে রোগী বাঁচবে কি না। সেখানে দেরি হয়ে গেলেই মুশকিল। আর তাই স্ট্রোক হচ্ছে কি না, তা বোঝা দরকার সময় মতো। আর সকলের বোঝার সুবিধার জন্য ৬টি ইংরেজি অক্ষরকে পাশাপাশি বসিয়ে শব্দবন্ধ তৈরি হয়েছে। অ্যাক্রোনিম বা সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি অক্ষরের পূর্ণরূপ রয়েছে। ‘বি’, ‘ই’, ‘এফ’, ‘এ’, ‘এস’ এবং ‘টি’। একসঙ্গে বললে, ‘বি ফাস্ট’। অর্থাৎ, ‘দ্রুত করো’। এর আগে ‘আমেরিকান স্ট্রোক সোসাইটি’ চার অক্ষরের ‘ফাস্ট’ তৈরি করেছিল। পরবর্তীকালে ‘ইন্টারমাউন্টেন হেলথকেয়ার’ সেটির সঙ্গে দু’টি অক্ষর যোগ করে।

Advertisement

স্নায়ুরোগ এবং নিউরো রিহ্যাবিলিটেশনের চিকিৎসক সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সেরিব্রোভাস্কুলার অ্যাক্সিডেন্টস দু’রকমের হয়, ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমার‌্যাজিক স্ট্রোক। দু’টিতেই তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। তবে যত ক্ষণ বোঝার ক্ষমতা থাকে, তত ক্ষণ স্ট্রোকের লক্ষণ রোগী টের পাবেন। যাঁদের বোঝার ক্ষমতা থাকে না, তখন রোগীর নিকটস্থ ব্যক্তিকেই সতর্ক হতে হবে। আর তাই জেনে নিতে হবে এই ৬টি অক্ষরের অর্থ। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘সাধারণত স্ট্রোক হয় মস্কিষ্কের একটি দিকে। তখন শরীরের অন্য দিকটি অচল হতে শুরু করে। মুখ, হাত, চোখ ইত্যাদি অংশ অবশ হতে থাকে। কোন কোন অংশে কী হতে পারে, সেগুলি জেনে নেওয়া দরকার প্রত্যেকের।’’

কোন অক্ষরের কী অর্থ, দেখে নেওয়া যাক—

Advertisement

বি বা ব্যালান্স (ভারসাম্য): হঠাৎ শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় বলে মনে হতে থাকে। যাঁর হচ্ছে, তিনিও বুঝতে পারবেন, পাশে কেউ থাকলে তিনিও রোগীর চলন দেখে বুঝতে পারবেন।

বা আইজ় (চোখ): যাঁর স্ট্রোক হচ্ছে, তিনি দেখবেন, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, ক্ষীণ হয়ে আসছে। অথবা কোনও এক চোখের দৃষ্টি চলে যাবে। পাশের মানুষ দেখবেন, চোখ বুজে আসছে।

এফ বা ফেস (মুখ): মুখের এক দিক নীচের দিকে ঝুলে পড়বে। অথবা হাসতে গেলে একটি দিক কোনও মতেই নাড়ানো যাবে না।

বা আর্মস (হাত): হাত তুলতে গেলে পড়ে যেতে পারে। এক দিকের হাত কোনও মতেই তোলা যাবে না।

এস বা স্পিচ (কথা): অস্পষ্ট হয়ে যাবে কথা। মনের মধ্যে শব্দটা তৈরি হলেও মুখ দিয়ে বেরোবে না ঠিক মতো। সঠিক শব্দ বেছে নিতেও অসুবিধা হতে পারে। গিলতে, চিবোতে অসুবিধা হতে পারে। খাবার খাওয়ার সময়ে মুখ থেকে গড়িয়ে পড়তে পারে।

টি বা টাইম (সময়): উপরের একটি লক্ষণও যদি দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে রোগীকে। ঠিক কোন সময় থেকে উপসর্গগুলি দেখা গিয়েছে, আর তার পর কতখানি সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, সবটা মাপতে থাকতে হবে। তবেই সঠিক চিকিৎসা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সময়ের বিষয়ে সুপর্ণ বলছেন, ‘‘লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরমুহূর্ত থেকে হাসপাতালে যাওয়ার সময়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। যাকে ইংরেজিতে বলে গোল্ডেন টাইম। অর্থাৎ, যে সময়ের মধ্যে চিকিৎসা শুরু হলে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। তা ছাড়া, বাঁচানো গেলেও অনেক সময়ে জটিলতা থেকে যায়। তাই আমরা বলি যত দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসবেন, ততই কম জটিলতার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা। আর সেই সময়টি হল, মাত্র ৬০ মিনিট। কিন্তু এ দেশের সুবিধা-অসুবিধার কারণে সেটি প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই সম্প্রতি এই গোল্ডেন টাইমের এই সময়টাকে বাড়িয়ে সাড়ে ৪ ঘণ্টা করা হয় সব দিক বিবেচনা করে। কিন্তু মাথায় রাখা উচিত, দ্রুত উন্নতির জন্য নিউরোরিহ্যাবিলিটেশনটা তাড়াতাড়ি শুরু করে দেওয়া উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement