পঞ্চাশ হোক ক্লান্তিহীন। কোন উপায়ে তা সম্ভব? ছবি: শাটারস্টক
এক সময় দৌড়ঝাঁপ করে কাজ করেছেন। সংসার, সন্তান, চাকরি সামলেছেন। কিন্তু এখন আর শরীর যেন দেয় না। পঞ্চাশ পেরোতেই এমনই অবস্থা হয় মায়েদের। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীর অশক্ত হতে শুরু করে। ব্যথা-বেদনা, ক্লান্তির মতো নানা সমস্যা খুব স্বাভাবিক বিষয় হয়ে ওঠে। আগে যে কাজ হয়তো কয়েক ঘণ্টায় একা হাতে করেছেন, এখন সেই কাজের কথা ভাবলেই ভয় হয়।
সমাজমাধ্যম প্রভাবী ফিটনেস কোচ নবনীত রামপ্রসাদ বলছেন, ‘‘যথাযথ পুষ্টি পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষকেও চনমনে রাখতে পারে।’’ সমাজমাধ্যমে পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাদের সুস্থ এবং সবল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মনে করিয়েছেন পুষ্টির ভূমিকা। নবনীতের কথায়, ৫০ পেরোনো মায়েদের দিনভর ক্লান্তিহীন, ব্যথাবেদনাহীন দেখতে চাইলে দৈনন্দিন খাবার তালিকায় রাখা দরকার ৫ খাবার। সবচেয়ে ভাল বিষয় হল, আলাদা করে সে সব খাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে স্মুদি বানিয়ে নিলেই চলবে। খেতে হবে সকালে চা-কফি খাওয়ার আগেই।
কলা: পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ কলা রাখতে হবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়। কলা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। পেট পরিষ্কার রাখতেও ফলটি বেশ উপকারী। পায়ে টান ধরা বা ব্যথা কমাতে, পেশির জোর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এতে থাকা খনিজ এবং ভিটামিন।
খেজুর: আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবারে ভরপুর খেজুর থাকা দরকার খাদ্যতালিকায়। বেশি নয়, মাত্র দু’টি খেজুরই শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাবে, প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজের জোগান দেবে। মিষ্টি খাবারের প্রতি লোভ কমাতেও সাহায্য করবে।
গ্রিক ইয়োগার্ট: এতে থাকা প্রোটিন পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। গ্রিক ইয়োগার্টে মেলে প্রিবায়োটিক, যা ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে এবং পেটের স্বাস্থ্যরক্ষায় সাহায্য করে। বয়স বাড়লে অনেকেরই হজমক্ষমতা কমে যায়। এই খাবার পুষ্টি শোষণে, হজম ভাল রাখতে সাহায্য করবে।
দারচিনি: অস্থিসন্ধি এবং পেশির প্রদাহ কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে হেঁশেলের এই উপকরণ।
প্রোটিন পাউডার: ক্লান্তি দূর করতে, পেশি সবল রাখতে প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। দিনভর কাজের প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাবে প্রোটিন পাউডার।
স্ত্রী রোগ চিকিৎসক সুধা আস্থানার বক্তব্য, এই পাঁচ উপকরণে তৈরি স্মুদিতে পুষ্টির ভারসাম্য রয়েছে। বিশেষত, রজোনিবৃত্তির পরবর্তী সময়ে মহিলাদের হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে, যার প্রভাব পড়ে শরীরে। হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে, পেশির কর্মক্ষমতা কমে যায়, বিপাকহারেও প্রভাব পড়ে। এই সময় ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ ইয়োগার্ট, পটাশিয়াম যুক্ত কলা, প্রোটিন শরীরের জন্য খুবই উপযোগী। বয়স হলে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করলে পুষ্টিতে তার প্রভাব পড়বেই। সেই অভাব দূর করবে একটি পানীয়।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা বা বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে এই স্মুদি নিয়মিত খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন