Infectious Disease in India

দেশে সংক্রামক ব্যাধি বাড়ছে! ৫ ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক করল আইসিএমআর

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতেই দেখা গিয়েছে, দেশে সংক্রমণের হার ক্রমে বেড়েই চলেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৪
Share:

কোন পাঁচ ভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি? ছবি : এআই সহায়তায় প্রণীত।

সংক্রামক অসুখ অর্থাৎ যা এক জনের শরীর থেকে সংক্রমিত হয়ে বাসা বাঁধে অন্যের শরীরে। বাধায় নানা রকমের রোগব্যাধি। স্পর্শ, নিঃশ্বাস, লালারসের মাধ্যমে এবং আরও নানা ভাবে নিকটবর্তী মানুষজনের থেকে ওই রোগে আক্রান্ত হন একের পর এক মানুষ। যার ‘ভয়াবহ’ উদাহরণ এ পৃথিবী দেখেছিল কোভিড অতিমারির সময়ে। গবেষকেরা বলছেন, তেমনই সংক্রামক ব্যাধির হার ক্রমশ বাড়ছে ভারতে।

Advertisement

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত সমীক্ষা চালিয়েছিল। প্রায় সাড়ে চার লক্ষ রোগীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তারা গবেষণাগারে পরীক্ষা করিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভাইরাল ইনফেকশন জনস্বাস্থ্যে কতটা প্রভাব ফেলছে, তা দেখা। তাতে দেখা গিয়েছে, সাড়ে চার লক্ষ রোগীর মধ্যে ১১.১ শতাংশ মানুষই নানা ভাবে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া অথবা ছত্রাকজনিক সংক্রামক রোগে ভুগছেন। অর্থাৎ প্রতি ৯ জনে এক জন মানুষ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত। শুধু তা-ই নয়, ওই সংক্রমণের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গত বছরের থেকে খানিকটা বেড়েই বছরের শুরুর দিকে সংক্রামক ব্যাধির হার হয়েছিল ১০.৭ শতাংশ। আইসিএমআর জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৮৫৬ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে ওই ফল হাতে পায়। পরবর্তী তিন মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুনের পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই হার বেড়ে হয়েছে ১১.৫ শতাংশ। অর্থাৎ কেবল তিন মাসে ০.৮ শতাংশ বেড়েছে সংক্রমণের হার। গবেষকেরা বলছেন, ‘‘এই হারে যদি সংক্রামক ব্যাধি বাড়তে থাকে। তবে অবিলম্বে সতর্ক হওয়া দরকার। না হলে আবার কখনও কোনও অতিমারি এসে আমাদের ধরাশায়ী করে দিতে পারে।’’

Advertisement

প্রতি ৯ জনের মধ্যে ১ জনের শরীরে সংক্রামক রোগ! বলছে আইসিএমআর ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

মূলত পাঁচ রকমের ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি দেখা গিয়েছে পরীক্ষিত নমুনাগুলির মধ্যে—

১। ইনফ্লুয়েঞ্জা এ: যা দেখা গিয়েছে মূলত ফুসফুসে সংক্রমণের রোগে।

২। ডেঙ্গি ভাইরাস: অ্যাকিউট ফিভার এবং হেমারেজিক ফিভারের রোগীর শরীরে।

৩। হেপাটাইটিস এ: মূলত জন্ডিসের রোগীদের ক্ষেত্রে।

৪। নোরোভাইরাস: অ্যাকিউট ডায়েরিয়া রোগে।

৫। হারপিস সিম্প্লেক্স ভাইরাস: অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম।

আইসিএমআরের তরফে ওই গবেষণা করেছে ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিজ় (ভিআরডিএল)। গবেষণাকারী এক বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, আপাতদৃষ্টিতে এই সব ভাইরাসের সংক্রমণের যে বৃদ্ধি, তা নামমাত্র বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই বিচার করা উচিত। কারণ, এ থেকে বিভিন্ন ঋতুতে হওয়া রোগভোগ থেকে সাবধান হওয়া যায়। সংক্রমণ থেকেও বাঁচা যায়।

আইসিএমআরের দেওয়া তথ্য বলছে, বছরের মাঝামাঝি করা সমীক্ষা থেকে যে সমস্ত রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল মাম্পস, হাম, রুবেলা, ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, রোটোভাইরাস, নোরো ভাইরাস, ভারিসেলা জোস্টার ভাইরাস, এপস্টেন বার ভাইরাস এবং অ্যাস্ট্রোভাইরাস জনিত রোগ। আর বছরের শুরুতে ওই সমস্ত রোগের পাশাপাশি বেড়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, লেপোটোস্পিরা এবং এসটিআই বা সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকসনস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement