Vitamin D and Colorectal Cancer

ভিটামিন ডি কতটা শরীরে থাকলে বিপজ্জনক কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে? হিসেব দিলেন গবেষকেরা

কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে ভিটামিন ডি। শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকলে, এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ১৭:০৩
Share:

কতটা বিপজ্জনক কোলোরেক্টাল ক্যানসার? ফাইল চিত্র।

কোলোরেক্টাল ক্যানসার। ব্লাড, লিভার বা স্তনের ক্যানসারের মতো অত পরিচিত নাম না হলেও এই ক্যানসার নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা বলছে, কোলন (বৃহদন্ত্র) এবং রেক্টাম (মলদ্বার)-এ হওয়া এই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০ সাল থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। আর ভয়ের ব্যাপার হল, এই ক্যানসার নিয়ে সচেতনতার প্রচারও কম। অনেক সময়েই মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হলে তা অর্শের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন অনেকে। ফলে ক্যানসার যত দিনে ধরা পড়ে, তত দিনে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে ভিটামিন ডি। শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকলে, এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যাবে।

Advertisement

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ভিটামিন ডি শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এই ভিটামিন নির্ধারিত মাত্রায় থাকলে, স্নায়ুর রোগের ঝুঁকি কমে, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল হয় এবং কোষের অনিয়মিত বিভাজন বা বৃদ্ধি হয় না। শরীরের কোনও অঙ্গে যদি কোষের বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায় ও নতুন রক্তজালক তৈরি হতে থাকে, তা হলে সেখানে টিউমার তৈরির আশঙ্কা বাড়ে। এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘অ্যাঞ্জিয়োজেনেসিস’। ভিটামিন ডি কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি রোধ করতে পারে।

কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজন কতটা, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩১টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ জার্নালে। সেখানে গবেষকেরা দেখিয়েছেন, ১০ হাজার জনের উপর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, যাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা প্রতি মিলিলিটারে ৮০ ন্যানোগ্রাম বা তার বেশি, তাঁদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি অন্তত ২৫ শতাংশ কম। আর যাঁদের প্রতি মিলিলিটারে ১০ ন্যানোগ্রামের কম, তাঁদের মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে তাই বলে গাদা গাদা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেয়ে ফেললে চলবে না, পরিমাণ বুঝেই ভিটামিন ডি খেতে হবে। নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়াতেও।

Advertisement

ষাটোর্ধ্বদের মধ্যে এই অসুখের ঝুঁকি বেশি দেখা গেলেও ইদানীং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বাড়তি ওজন, টাটকা খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার খাওয়া ও অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে অল্প বয়সে কোলোরেক্টাল ক্যানসার হানা দিচ্ছে মানুষের শরীরে। যদি মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যায়, ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কিছুতেই সারতে না চায়, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই ক্যানসারের উপসর্গ হিসাবে অনেক সময় মলের সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে। অর্শ রোগীদের ক্ষেত্রে যে রক্তপাত হয়, তা সাধারণত লাল। অন্য দিকে, এই ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে রক্ত কালচে রঙের হয়। তলপেটে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথা এই রোগের উপসর্গ হতে পারে। অর্শের ক্ষেত্রে কিন্তু পেটে তেমন ব্যথা অনুভূত হয় না। কোলোরেক্টাল ক্যানসারে গ্যাসের ব্যথার মতো যন্ত্রণা, পেটে মোচড় দেওয়ার মতো সমস্যাগুলি লক্ষ করা যায়। রক্তাল্পতার লক্ষণও দেখা দেয়। তাই সাবধান হতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement