Perfect Study Time

ঘুমের আগে পড়াশোনা, না কি জেগে উঠে? কোন সময়ে লেখাপড়া করলে মস্তিষ্ক তুখোড় হবে আপনার

ঘুমোতে যাওয়ার আগে পড়া ভাল, না কি ঘুম ভাঙার পর পড়া উচিত? কোন সময়ে পড়াশোনা করলে মনে থাকে বেশি? গবেষকেরা বলছেন, দু’ধরনের সময়ের আলাদা আলাদা উপকারিতা রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৩৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

পড়াশোনার সময় বেছে নিতে পারছে না আপনার সন্তান? অথবা আপনিও কি কাজের জন্য পড়াশোনার মধ্যে রয়েছেন? সে ক্ষেত্রে আপনিও সেই চিরচেনা প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন— ঘুমোতে যাওয়ার আগে পড়া ভাল, না কি ঘুম ভাঙার পর পড়া উচিত? কোন সময়ে পড়াশোনা করলে মনে থাকে বেশি? গবেষকেরা বলছেন, দু’ধরনের সময়ের আলাদা আলাদা উপকারিতা রয়েছে।

Advertisement

১. ঘুমের আগে পড়া

দিনভর ক্লান্তি। তার পর রাতে পড়াশোনা করতে বসেছে আপনার সন্তান। এই সময়ে চোখে নেমে আসতে পারে ঘুম। মাথা ভার হয়ে থাকলে মনে রাখা কষ্টকর হতে পারে। উপরন্তু পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। তবে এ সময়ে মস্তিষ্ক নতুন তথ্য সহজে ধরে রাখতে পারে। একটু কঠিন বিষয় ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য এই সময়টি উপযুক্ত। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক সেই তথ্যগুলিকেই সাজিয়ে নিয়ে স্মৃতিতে গেঁথে নেয়। অর্থাৎ শোয়ার আগে পড়াশোনা করলে বিষয়টি মনে রাখার জন্য সহায়ক হতে পারে।

Advertisement

২. ঘুম ভাঙার পর পড়া

ভোরের সময় মস্তিষ্ক একেবারে সতেজ থাকে। তখন মনোযোগ, বিশ্লেষণ ক্ষমতা ও সৃজনশীল চিন্তা করা সম্ভব। তাই নতুন বিষয় বোঝা, জটিল সমস্যার সমাধান করা বা পরীক্ষার জন্য কঠিন অধ্যায় পড়ার ক্ষেত্রে ভোর বা সকালের সময়টি সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তবে যদি রাতে ঘুম ভাল না হয়, তা হলে পড়া মাথায় ঢুকবে না। তা ছাড়া যাঁরা স্বভাবে নিশাচর, অর্থাৎ রাত জাগায় অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য সকালের সময়টি উপযুক্ত না-ও হতে পারে। এ ছাড়া ঘুম থেকে পুরোপুরি জেগে উঠতে সময় লাগে অনেকের। সে ক্ষেত্রেও পড়ার বইয়ে গভীর ভাবে মনোযোগ দেওয়ার জন্য অনেকখানি সময় ব্যয় হয়ে যায়।

সে ক্ষেত্রে কোন সময়টি পড়াশোনা করার জন্য ভাল? উত্তর দিলেন মনোবিদ আত্রেয়ী ভট্টাচার্য।

মনোবিদ জানাচ্ছেন, স্মৃতি এবং ঘুমের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। ঘুমের আগে যদি মস্তিষ্কে তথ্য ভরে দেওয়া হয়, তা হলে দীর্ঘ কালের জন্য তা মাথায় গেঁথে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ঘুমের সাধারণত দু’ধরনের সাইক্‌ল হয়। ঘুমিয়ে পড়ার পর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে নন-রেম (র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট) স্লিপ, অর্থাৎ এই চোখের মণি বেশি নড়াচড়া করে না। এই সময়ে মানুষ দ্রুত গভীর ঘুমে চলে যায়। ৯০ মিনিটের মতো এই ঘুমটা স্থায়ী হয়। দেখা যায়, যা যা পড়া হয়েছে খানিক আগে, তা সংরক্ষিত থাকে মস্তিষ্কে। আত্রেয়ী বলছেন, ‘‘তার মূল কারণ, ঘুমের মধ্যে আমরা আর পাঁচটা বিষয় নিয়ে ভাবি না। বৌদ্ধিক ভাবে আমরা অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত নেই। আরামে ঘুমোতে পারে লোকে এই সময়ে।’’

এর পর রেম স্লিপের পালা। এ সময়ে চোখের মণি খুব নড়াচড়া করতে দেখা যায়। তখন দেখা গিয়েছে, এই সময়টি জেগে ওঠার সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। ঘুমের গভীরতা কমতে থাকে। এত ক্ষণ ধরে যা যা পড়া হয়েছে, সেগুলি গ্রথিত হয়েছে নন-রেম স্লিপের সময়ে। স্মৃতিতে ধরে রাখার ক্ষমতাও বেশি থাকে। নন-রেম স্লিপের চারটি পর্যায় রয়েছে আর রেম স্লিপের দুটটি পর্যায়। এই চারটি থেকে ৬টি পর্যায়ের মধ্যে এক একটি সাইক্‌ল চলে। মনোবিদ বললেন, ‘‘এক একটি পর্যায় ১১০ মিনিট মতো স্থায়ী হয়। রোজের ঘুমে প্রায় ৪টি সাইক্‌ল আমরা পূরণ করি। তা ছাড়া ঘুমের সময়ে শারীরবৃত্তীয় কারণে যেহেতু আমাদের বৌদ্ধিক ক্রিয়া অনেকটাই স্তিমিত থাকে, আমরা তখন একই সঙ্গে অনেক কাজে নিয়োজিত থাকি। তাই রেম এবং নন-রেম স্লিপের কারণে পড়াশোনা মাথায় থাকে বেশি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement