কোন কোন কৌশল জানা থাকলে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ইচ্ছাও হবে না? ছবি: ফ্রিপিক।
ভাজাভুজি দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না? আবার মিষ্টি দেখলেই মনটা চনমন করে ওঠে। ডায়েটে থেকেও মিষ্টি খাওয়ার লোভ সামলাতে পারেন না অনেকেই। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার যতই খান, মনটা সব সময় ভাজাভুজি বা ঝাল-মশলাদার খাবারের দিকেই চলে যায়। তখন সর্ব ক্ষণ মন খাই খাই করে। পেট ভর্তি থাকলেও মনের খিদে যায় না। আর এই প্রবণতার কারণেই ডায়েটেরও দফারফা হয়, আর ওজনও কমতে চায় না। এই প্রবণতা কমানোর কিছু উপায় আছে।
পুষ্টিবিদেরা বলেন, রোজের ডায়েটে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটের ভারসাম্য বজায় রাখা ভীষণ জরুরি। বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রবেশ করলে ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়ে। এর ফলে আরও কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ইচ্ছা হয়। আর যত ক্ষণ না পর্যন্ত মিষ্টি খাচ্ছেন, স্বস্তি হবে না। আরও এক কারণে এমন হতে পারে। পর্যাপ্ত না ঘুমোলে শরীরে লেপটিন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, ফলে বেশি ভাজাভুজি, মিষ্টি খাওয়ার ঝোঁক বাড়ে। এর থেকে রেহাই পাবেন কী ভাবে?
১) ভাজাভুজি দেখলেই হাত বাড়াবেন না। ঝাল কিছু খেতে ইচ্ছে হলে ছোলা বা মটর, শশা দিয়ে চাট বানিয়ে নিন। আইসক্রিমের সাধ মেটাতে পারেন ঠান্ডা ফ্রুট স্মুদি দিয়ে। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে কয়েকটি খেজুর মুখে ফেলে দিন। সঙ্গে রাখুন ড্রাই ফ্রুটস। এই ভাবে বিকল্প খাবারের অভ্যাস করতে পারলে মন আপনা থেকেই তৈরি হয়ে যাবে।
২) রোল জাতীয় কিছু থেকে ইচ্ছে হলে ফ্রিজে থাকা পাউরুটি দিয়ে উপমা তৈরি করতে পারেন। ছোটদেরও ভাল লাগবে। দ্রুত তৈরিও হয়ে যাবে। পাউরুটিগুলি চৌকো করে কেটে গাজর, পার্সলেপাতা, বিনস, গোলমরিচ, চিলিফ্লেক্সের সঙ্গে হালকা তেলে ভেজে নিন। সস্ দিয়ে খেলে এই খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।
৩) ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। ফাইবার পেটকে দীর্ঘ ক্ষণ ভর্তি রাখতে সাহায্য করে। ওট্স, বিভিন্ন ধরনের ডাল, সবুজ শাকসব্জি, ফল খেলে খিদে নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪) রোজের ডায়েটে কড়া নিয়ম না মেনে সুষম খাবার খান। যেমন ভাত খেলে এক কাপ, ডাল, সব্জি, মাছ বা মাংস ঘরে তৈরি করেই খান। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট পরিমিত পরিমাণে খেলে পেটও ভরবে, আর মনও। প্রতি দিন প্রোটিন রাখতেই হবে পাতে। চিকেন, ডিম, পনির, মাছ বা সয়াবিন খেতে হবে।
৫) ডায়েটে বেশি করে স্যুপ ও স্যালাড রাখতে হবে। এতে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হবে না এবং পেট ভর্তি থাকায় বার বার খিদে পাবে না। ডায়েট করার সময়ে মনের উপর বেশি চাপ নেওয়া ঠিক নয়। জোর করে কড়া নিয়ম মানতে গেলেই উদ্বেগ বাড়ে। আর অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তখন মুখরোচক খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে।