কোন কোন ব্যায়াম করলে দ্রুত ওজন কমবে? ছবি: ফ্রিপিক।
রোজের ব্যস্ততায় জিমে গিয়ে ট্রেডমিলে দৌড়নোর সময় যদি না হয়, তা হলেও চিন্তা নেই। ওজন কমানো ও শরীরের গড়ন ধরে রাখার জন্য জিমই একমাত্র উপায় নয়। ব্যায়ামের আরও অনেক পদ্ধতি আছে, যা খুব তাড়াতাড়ি শরীরের বাড়তি মেদ ছেঁটে ফেলতে পারে। অনেকেই ভাবেন ব্যায়াম মানেই হল ভারী ওজন তোলা বা খুব কঠিন কিছু পদ্ধতি। তা একেবারেই নয়। বিরতি নিয়ে সহজ কিছু ব্যায়াম করলেও সারা শরীরের কসরত হয়। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, মাত্র ২ মিনিটের কিছু ব্যায়াম আছে, যা করলে মেদও ঝরবে, শরীরও সুস্থ থাকবে। পিঠে-কোমরে ব্যথা-বেদনা থাকলে তা কমে যাবে, প্রদাহজনিত সমস্যা থাকলে তা-ও কমবে। শুধু তা-ই নয়, গ্যাস-অম্বল, বদহজমের সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।
কোন কোন ব্যায়াম করবেন?
সিঁড়ি ভাঙা
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করাও ভাল ব্যায়াম। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামার সময়ে শরীরের ভঙ্গিমা যেন সঠিক থাকে। কখনও ঝুঁকে সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন না। মেরুদণ্ড সোজা, শরীর টান টান রাখতে হবে। কোনও রকম শরীরচর্চা করার অভ্যাস না থাকলে, শুরুতেই তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন না। ধীরেসুস্থে শুরু করুন। আগে কিছু ক্ষণ হাঁটাহাঁটি বা স্পট জগিং করে নিতে পারেন, এতে পেশির সক্রিয়তা বাড়বে। প্রথমে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় রাখুন ওঠানামার জন্য। সন্তাহে তিন দিন এই কসরত করুন। তার পর অভ্যাস হয়ে গেলে, ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে দেখুন। ওঠানামার সময়ে শ্বাসপ্রশ্বাসের হার স্বাভাবিক রাখতে হবে।
বারপি
শরীরের ক্লান্তি, ব্যথা-বেদনা দূর করতে বারপির মতো ব্যায়াম খুবই উপকারী। এই ব্যায়াম করতে গেলে প্রথমে হাঁটু মুড়ে পিঠ সোজা করে দুই হাত সামনে নমস্কারের ভঙ্গিতে রেখে দাঁড়াতে হবে। তার পর মাটিতে ঝুঁকে ডন-বৈঠকের মতো পজ়িশনে আসতে হবে। শরীর টানটান থাকবে, বুক ও ঊরু মাটি স্পর্শ করবে। একটা বৈঠকের পরেই আবার উঠে আগের অবস্থানে আসতে হবে। মাটি থেকে অল্প লাফিয়েই পরবর্তী বারপি শুরু করতে হবে।
জাম্পিং জ্যাক
দুই পায়ের মাঝে দূরত্ব রেখে সোজা দাঁড়িয়ে থাকুন। হাত দুটো রাখুন মাথার উপরে। এই অবস্থাতেই লাফাতে হবে। লাফানোর সময় দুই হাত ও দুই পায়ের মধ্যে দূরত্ব কমে কাছাকাছি আসবে। অনেকে ছন্দ মেলাতে হাত জড়ো করার সময় তালিও দেন। কোনও সরঞ্জাম ছাড়াই যে কোনও জায়গায় করা যায় এই ব্যায়াম। মিনিট দুয়েক সময় হাতে পেলেই হবে। শুরুতে রোজ ১০টি করে জাম্পিং জ্যাক করতে পারেন। এতে কার্ডিয়ো ও স্ট্রেংথ ট্রেনিংয়ের মতোই কসরত হবে। অভ্যাস হয়ে গেলে দিনে ২৫টি করে করলে উপকার হবে।
জাম্প স্কোয়াট
পায়ের জোর বাড়াতে এবং টোনিংয়ের জন্য স্কোয়াটের বিকল্প নেই। কমবয়সিরা তো বটেই, চল্লিশের বেশি বয়সিদের জন্যও স্কোয়াট উপকারী। অনেক ধরনের স্কোয়াট হয়। বয়স এবং শরীরের ক্ষমতা অনুযায়ী যা করা যায়। এক-একটি স্কোয়াটে শরীরের আলাদা অংশের উপরে চাপ পড়ে। বেসিক স্কোয়াটে দু’টি পা অল্প ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। তার পর চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গি করতে হবে। কাঁধ সোজা থাকবে। আর জাম্প স্কোয়াটের ক্ষেত্রে বেসিক পজ়িশন থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময়ে লাফাতে হবে। এতে শরীরের সমস্ত পেশির ব্যায়াম হবে। তবে হাঁটুতে ব্যথা বা আর্থ্রাইটিসের সমস্যা থাকলে এই ব্যায়াম করা যাবে না।
বেসিক পুশ আপ
পুশআপ করার সময়ে গোটা শরীর একটি সরলরেখা বরাবর থাকবে। অনেকেই পুশআপ করতে গিয়ে নীচে নামার সময়ে নিতম্ব ঝুঁকিয়ে ফেলেন। এই পদ্ধতিটি ঠিক নয়। এই ব্যায়াম করার সময় একেবারে কাঁধ বরাবর সোজাসুজি হাত রাখতে হবে। হাতের তালু থাকবে মাটির উপরে। নইলে ব্যায়ামের পুরো উপকারিতা পাবেন না।