প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মদ্যপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই আপ্তবাক্য জানা সত্ত্বেও অনেকেই মদ্যপান ত্যাগ করতে পারেন না। নেপথ্যে কাজ করে দীর্ঘ দিনের আসক্তি এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি। আবার মদ্যপান ত্যাগ করে সাধারণ জীবনে ফিরে গিয়েছেন, এ রকম মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু মদ্যপান ত্যাগ করার পর দেহে ঠিক কী কী পরিবর্তন ঘটে, তা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই।
একাধিক গবেষণা এবং সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মদ্যপান ত্যাগের পর ব্যক্তির জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। ‘পাবমেড’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, অ্যালকোহল থেকে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ৬ মাস মদ্যপান ত্যাগ করার পর তাঁদের লিভার সংক্রান্ত জটিলতা অনেকাংশে কমে গিয়েছে। অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৩ থেকে ৬ মাস মদ্যপান বন্ধ রাখলে ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, উদ্বেগ কমে এবং অবসাদ কেটে মন শান্ত থাকে। ছ’মাস মদ্যপান না করলে শরীরের একাধিক পরিবর্তন ঘটে।
প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহ: মদ্যপান ত্যাগের ১৪ দিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে ঘুমের গুণগত মানের উন্নতি হয়। চোখের নীচের ফোলা ভাব এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়। লিভারের বিভিন্ন উৎসেচকের ক্ষরণ পুনরায় বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, ‘উইথড্রয়াল সিনড্রোম’ থেকে তৈরি উদ্বেগ, ঘন ঘন ঘাম হওয়া এবং মেজাজ পরিবর্তন কমতে শুরু করে।
প্রথম মাস: মদ্যপান ত্যাগের এক মাসের মধ্যে লিভারের ফ্যাটের পরিমাণ ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমে যেতে পারে। স্থূলকায় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ওজনও কিছুটা কমে। রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যক্তির এনার্জিও অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।
তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ মাস: ঘন ঘন মদ্যপান অনেক সময়েই হজমের গোলমাল তৈরি করে। একই সঙ্গে মদ্যপানের ফলে খাওয়ার ইচ্ছে কমে যেতে পারে। কিন্তু মদ্যপান ত্যাগের তিন থেকে ছ’মাসের মধ্যে লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। ছ’মাস মদ্যপান না করলে মুখ, লিভার এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও অনেকাংশে কমে যায়। মদ্যপান ত্যাগ করলে পেশাগত কাজের প্রতিও একাগ্রতা বৃদ্ধি পায় বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়।