কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডুর। — ফাইল চিত্র।
ইন্ডিগো বিপর্যের পর লাফিয়ে লাফিয়ে বিমান ভাড়া বাড়িয়েছিল অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলি। যাত্রীদুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। বিমান ভাড়া বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। কিন্তু সারা বছর সরকার এ ভাবে বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। উৎসবের মরসুমে বাড়বেই! শুক্রবার লোকসভায় বিমান ভাড়া নিয়ে আলোচনায় এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু।
দেশের বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব নিয়ে লোকসভায় আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী জানান, অস্থির পরিস্থিতিতে বিমান ভাড়া বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু সারা বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিমান ভাড়া বেঁধে দিতে পারে না। সাধারণত, উৎসবের মরসুমে টিকিটের দাম বেড়ে যায়।
বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার নেপথ্যে মূল কারণই ছিল এই ক্ষেত্রে আরও বেশি সংস্থা যাতে যোগ দেয়, লোকসভায় এমনই জানান কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘যদি আমরা অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রকৃত বিকাশ চাই, তবে আমাদের প্রথম এবং প্রধান প্রয়োজন এটিকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা।’’ পাশাপাশি নায়ডু জানান, তার অর্থ এই নয় যে বিমান সংস্থাগুলি পুরোপুরি স্বাধীন। প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রের। সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুবিধার্থে বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করে সরকার।
ইন্ডিগো বিপর্যয়ের পর কেন্দ্র বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। অন্য বিমানসংস্থাগুলির ভাড়া বাড়ানোর বিষয় প্রকাশ্যে আসার পরই পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। ভাড়া বেঁধে দেয়। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে সর্বোচ্চ ৭,৫০০ টাকা, ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরত্বে ভাড়া বাবদ সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা নিতে পারবে বিমান সংস্থাগুলি। ১০০০-১৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা, ১৫০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকা ভাড়া নিতে পারবে বিমান সংস্থাগুলি। যত দিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, তত দিন কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া ভাড়ার বেশি আদায় করতে পারবে না অন্য বিমান সংস্থাগুলি।
ইন্ডিগো বিপর্যয়ের পর অন্য বিমান সংস্থাগুলির ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রকে আদালত প্রশ্ন করে, ‘‘যদিও কোনও সঙ্কট দেখা দেয়, তা হলে অন্য বিমানসংস্থাগুলিকে কী ভাবে সুবিধা নেওয়ার অনুমতি দিতে পারে? কী ভাবে বিমানভাড়া ৩৫-৪০ হাজার পর্যন্ত বাড়তে পারে? কী এমন ঘটতে পারে?’’ বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রের ভূমিকার প্রশংসা করলেও কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত।