ঘুষ মামলায় সিবিআইয়ের জালে পঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মাসিক বেতন ছিল ২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা। কিন্তু পঞ্জাব পুলিশের ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লারের চণ্ডীগড়ের বাড়িতে (যার নাম সার্মালা ফার্মহাউস) হানা দিয়ে সম্পদ আর বৈভবের নজির দেখে অবাক হয়েছেন তদন্তকারীরা! ঘুষকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া ওই পুলিশকর্তা যে ভাবে আয়-বহির্ভূত সম্পত্তি লুকোনোর চেষ্টা করেছেন, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে কালোবাজারি ব্যবসায়ী বা দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের দৃশ্য।
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ভুল্লারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ পাঁচ কোটি টাকা, দেড় কেজি সোনা, দামি ঘড়ি, বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং আরও অনেক সম্পত্তির হদিস মিলেছে। টাকা লুকোনোর জন্য ভুল্লার ব্যবহার করেছিলেন বিছানার তোশক আর সোফার গদি। তার ভিতরে নগদ ভরে সেলাই করা হয়েছিল নিপুণ ভাবে। বাসন-কোসন রাখার দেরাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সোনার গয়না। দামি বিদেশি ঘড়ি, প্রসাধনী, বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের পাশাপাশি সার্মালা ফার্মহাউস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১০৮ বোতল বিদেশি মদ! সিবিআই সূত্রের খবর, অধিকাংশ বোতলের দামই ৫০ হাজার টাকার বেশি!
রোপার রেঞ্জের ডিআইজি ভুল্লারের তোলাবাজির এজেন্ট কৃষ্ণকেও এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার মান্ডি গোবিন্দগড়ের বাতিল জিনিসপত্রের ব্যবসায়ী আকাশ বাত্রার কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় কৃষ্ণকে প্রথমে সেক্টর-২১-এ গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরার পর হানা দেওয়া হয় ভুল্লারের বাড়িতে। সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্যতম দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচয় ছিল ভুল্লারের। মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো, সংগঠিত অপরাধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ভুল্লারের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। ‘অপরাধীদের যম’ হিসাবে তিনি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দক্ষ অফিসার যে আড়ালে নিজেই সংগঠিত অপরাধে জড়িয়ে ছিলেন, তা কেউ আঁচ করতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায়েরও অভিযোগও এনেছে সিবিআই। তল্লাশি অভিযানে লালরঙা একটি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। তাতে কাদের নাম রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে পঞ্জাবে।