India-US Trade Deal

শুল্কযুদ্ধে ৯০ দিনের বেশি ছাড় দিতে চান না ট্রাম্প! তার আগেই আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলবে মোদী সরকার?

একটি সূত্রের দাবি, ট্রাম্প নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার ঠিক এক দিন আগে, আগামী ৮ জুলাই অন্তর্বর্তিকালীন বাণিজ্যচুক্তির কথা ঘোষণা করতে পারে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ১৫:২৫
Share:

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

গত এপ্রিলে নয়া শুল্কনীতি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। তার পর আর এই সময়সীমা বৃদ্ধি করতে চান না ট্রাম্প। রবিবার নিজেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, যে দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করা সম্ভব হচ্ছে না, তাদের পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়ে দেবে আমেরিকা।

Advertisement

এই সময়সীমার মধ্যে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভারতের কৃষি এবং দুগ্ধজাত ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী আমেরিকা। কিন্তু তাতে এখনও পর্যন্ত সায় নেই নয়াদিল্লির। সোমবার প্রকাশিত ‘ফিনানসিয়াল এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, “বড় লক্ষণরেখাগুলির মধ্যে কৃষি এবং দুগ্ধজাত ক্ষেত্র রয়েছে। এই ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা নিতেই হচ্ছে।”

একটি সূত্রের দাবি, ট্রাম্পের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার ঠিক এক দিন আগে, আগামী ৮ জুলাই অন্তর্বর্তিকালীন বাণিজ্যচুক্তির কথা ঘোষণা করতে পারে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন। এই বিষয়ে কথাবার্তা চূড়ান্ত করতে ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনে পৌঁছে গিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল। সোমবার আমেরিকা গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। তাঁর সফরের নেপথ্যে কোয়াড অক্ষের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক থাকলেও বাণিজ্যচুক্তির প্রেক্ষাপটেও এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। ভারত থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া পণ্যে বনিয়াদি ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড়াও অতিরিক্ত ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। ভারত এই অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার চিনের সঙ্গে চুক্তির পরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, “আমরা সবে মাত্র চিনের সঙ্গে (বাণিজ্য) চুক্তি করলাম। সবার সঙ্গে চুক্তি করব না। তবে কিছু দারুণ চুক্তি হবে। যেমন পরেরটাই হয়তো হবে ভারতের সঙ্গে। খুব বড় চুক্তি হবে সেটা।” সেই সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, বাণিজ্যচুক্তি হলে ভারত তার বাজার খুলে দেবে আমেরিকার জন্য। যদিও সম্ভাব্য সেই চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে কিছু জানাননি তিনি। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স অবশ্য গত এপ্রিলে ভারতে এসেই ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘২০৩০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চুক্তি করব আমরা।’’

অবশ্য ভারতের পক্ষে নিজের স্বার্থরক্ষা নিশ্চিত করে বাণিজ্যচুক্তির রূপরেখা স্থির করা কঠিন বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ, এ ক্ষেত্রে বেজিংয়ের যে সুবিধা ছিল, তা নয়াদিল্লির নেই। বিরল খনিজ থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কাঁচামাল পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রে চিনের উপর নির্ভরতা রয়েছে আমেরিকার। কিন্তু নয়াদিল্লির সে সুবিধা নেই। এই অবস্থায় ৯ জুলাইয়ের আগে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হয় কি না, হলেও কোন কোন শর্তের উপরে দাঁড়িয়ে হয়, সেই দিকেই এখন নজর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement