‘শিশুমনের মধ্যে বিকৃত ইতিহাস ঢোকানো হচ্ছে’ — দেশভাগ সম্পর্কে এনসিইআরটি’র পাঠ্যক্রম নিয়ে এ বার অভিযোগ তুলল ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস। ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস এনসিইআরটি-র নতুন দেশভাগ বিষয়ক পাঠ্যকে তীব্র সমালোচনা করেছে। ভারতীয় ইতিহাসবিদদের বড় অংশের মূল অভিযোগ, ‘যা লেখা হয়েছে, তাতে মিথ্যা তথ্য এবং সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিকৃতি’ রয়েছে। ইতিহাস কংগ্রেস মর্মে একটি প্রস্তাবও পাশ করেছে।
চলতি মাসে এনসিইআরটি কর্তৃপক্ষ ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে ভারত বিভাজন এবং পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য কংগ্রেস, মহম্মদ আলি জিন্না এবং লর্ড মাউন্টব্যাটনকে দায়ী করে একটি পরিচ্ছেদ সংযোজনের উদ্দেশ্যে মডিউল প্রকাশ করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে কংগ্রেসকে দেশভাগের জন্য দায়ী করে দেখানো হয়েছে, অথচ ব্রিটিশদের সে দায় থেকে কার্যত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস।
ইতিহাস কংগ্রেসে গৃহীত প্রস্তাবে, ১৯৩৭ সালে হিন্দু মহাসভা প্রথম ভারত বিভাজনের দাবি তুলেছিল। ১৯৪০ সালে সেই একই দাবি তোলে জিন্নার নেতৃত্বাধীন মুসলিম লিগ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের শিক্ষা মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত এনসিইআরটির নতুন পাঠ্যপুস্তকে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারত বিভাজনের জন্য অপরাধী তিনটি পক্ষ— জিন্না, যিনি দেশভাগের দাবি তুলেছিলেন। কংগ্রেস, যারা দেশভাগের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল। লর্ড মাউন্টব্যাটন, যিনি দেশভাগ কার্যকর করেছিলেন।’’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন বাক্য নতুন পাঠ্যপুস্তকে সংযোজিত করা হয়েছে বলে প্রস্তাবের সমর্থক ইতিহাসবিদদের অভিযোগ।
কাশ্মীর সমস্যাকেও দেশভাগের সঙ্গে জুড়ি দিয়ে তার জন্য জওহরলাল নেহরু এবং কংগ্রেসকে নিশানা করা হয়েছে এনসিইআরটি-র নতুন পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকে! লেখা হয়েছে, ‘‘দেশভাগের পরে কাশ্মীর একটি নতুন সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল, যা আগে কখনও ভারতে ছিল না।’’ নেহরু জমানায় ভারতের বিদেশনীতিকে ‘দিশাহীন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত সপ্তাহেই কংগ্রেসের মুখপাত্র পবনে খেড়া এনসিইআরটির নতুন পাঠ্যপুস্তককে ‘সঙ্ঘ পরিবারের পরিকল্পনার অঙ্গ’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। এ বার পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আপত্তি এল ইতিহাসবিদদের একাংশের তরফে।