Bangladesh India Relation

বাংলাদেশ সেনার দফতরে ১৬ বছর আগের হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত! দাবি তদন্ত-রিপোর্টে, চাওয়া হতে পারে দিল্লির জবাব

২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বাংলাদেশ সেনার সদর দফতরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। নিহত হয়েছিলেন ৫৭ জন সেনা আধিকারিক-সহ মোট ৭৪ জন। নতুন তদন্ত কমিশন গত ১১ মাস ধরে এই ঘটনার তদন্ত করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:১১
Share:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশ সেনার সদর দফতরে ১৬ বছর আগের হত্যাকাণ্ডে ভারতের যোগ রয়েছে বলে দাবি করল সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের তৈরি তদন্ত কমিশন। ১১ মাস ধরে তদন্ত করে রবিবার তারা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ২০০৯ সালে পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেল্‌স-এর সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। সেনার ৫৭ জন কর্তা নিহত হয়েছিলেন। ইউনূসের তদন্ত কমিশনের দাবি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবুজ সঙ্কেতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সঙ্গে যোগ রয়েছে ভারতেরও।

Advertisement

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্তমান নাম বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)। আগে তা বাংলাদেশ রাইফেল্‌স বা বিডিআর হিসাবে পরিচিত ছিল। ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তাদের সদর দফতরে হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন বিডিআর-এর তৎকালীন প্রধান (মহাপরিচালক) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ-সহ মোট ৫৭ জন সেনা আধিকারিক। তাঁদের পরিবারকেও ছাড়া হয়নি। ওই ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৪। ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। ১১ মাস ধরে তাদের তদন্ত চলেছে। রিপোর্টে দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। হাসিনার সবুজ সঙ্কেত পেয়েই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। রবিবার ইউনূসের কাছে গিয়ে তদন্ত কমিশনের সদস্যেরা রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। পরে সাংবাদিক বৈঠক করেও তদন্তের মূল বিষয়গুলি তাঁরা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, এই কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আলম ফজলুর রহমান।

ভারতের যোগ কোথায়?

Advertisement

তদন্ত কমিশনের দাবি, বাংলাদেশ সেনাকে দুর্বল করে দিতে চেয়েছিল ভারত। তাতে তারা লাভবান হয়েছে। ফজলুর বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সময় ৯২১ জন ভারতীয় বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার মধ্যে ৬৭ জনের কোনও হিসাব নেই। তাঁরা কোন দিক দিয়ে এসেছিলেন, কোথা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, জানা যাচ্ছে না। আমরা জানতে পেরেছি, প্রতিবেশী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল ভারত। সেনাবাহিনী ও বিজিবি-কে দুর্বল করতে চেয়েছিল।’’

এ বিষয়ে ভারতের কাছে জবাব চাওয়া হতে পারে। তদন্ত কমিশন ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে সেই সুপারিশ করেছে। ফজলুরের কথায়, ‘‘ভারত থেকে আসা সেই ৬৭ জন কোথায়, কেন তাঁরা এলেন, কোথায় গেলেন, তা খুঁজে বার করার জন্য সরকারকে আমরা সুপারিশ করেছি। বিষয়টি ভারতের কাছে জানতে চাওয়ার পরামর্শও দিয়েছি।’’ তবে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ২০০৯ সালের ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে কোনও চিঠি ঢাকা দেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে কমিশন। পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ব্যর্থতাও ছিল বলে দাবি। এ ছাড়া, কিছু সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্বের অভিযোগ তোলা হয়েছে তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে। বলা হয়েছে, সেনা সদর দফতরের হত্যাকাণ্ড ছিল পরিকল্পিত। তার প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন তাপস। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার নামও উঠে এসেছে তদন্তে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement