প্রতীকী ছবি।
বিজেপির ৭০ শতাংশ বিধায়কই মন থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মন থেকে মানতে পারছেন না বলে দাবি করল অগপ নেতৃত্ব। অগপর সাধারণ সম্পাদক সত্যব্রত কলিতার বক্তব্য, ‘‘এমন কী মুখ্যমন্ত্রী নিজেও মনোকষ্টে আছেন।’’ কিন্তু প্রাক্তন শরিক দলের এই দাবির পরেও বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎ দাস ও অন্য মুখপাত্রদের মুখে কুলুপ। সম্প্রতি পদ্ম হাজরিকা, ঋতুপর্ণ বরুয়ার মতো বিজেপির একাধিক বিধায়ক বিল বিরোধী মন্তব্য করেছেন। এক মুখপাত্র দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ নিয়ে মন্তব্যও করেন। তারই জেরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রামমাধবকে গুয়াহাটি আসতে হয়। দলীয় সভায় সকলকে সতর্ক করে সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলতে তিনি নিষেধ করেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
অন্য দিকে, কংগ্রেসের বিলকে কেন্দ্র করে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেসের বরাক ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার নেতারা। আজ তারই প্রতিফলন ঘটেছে বরাকের হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেসের সভাপতির স্বপদে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনায়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল রায় বরাকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা গৌতম রায়ের ছেলে। বাবা আগেই দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে বিলকে সমর্থন করেছিলেন। এ বার ছেলে দলীয় পদ ছেড়ে প্রতিবাদ জানালেন। পদত্যাগ পত্রে রাহুল লিখেছেন, বাঙালি হিন্দু হয়ে নিজের জনগোষ্ঠীর বিরোধিতা করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই জেলা সভাপতি পদে ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ দিকে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ও অসম চুক্তি নিয়ে দেখা দেওয়া জটিলতা নিয়ে আসু উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্যের সঙ্গে ফোনে আজ কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু সমুজ্জ্বলের দাবি, তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অসম চুক্তি বিরোধী বিলের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। আসুর প্রশ্ন, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি মণিপুরে এন বীরেন সিংহ ও তাঁর মন্ত্রিসভা বিলের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব নিতে পারে, যদি মেঘালয়, মিজোরামের নেডা শরিক মুখ্যমন্ত্রীরা বিলের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে পারেন, তাহলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী কেন তা করছেন না?
রাজ্যে বিল বিরোধী আন্দোলন চলছে। আজও রঞ্জিৎ দাসকে কলিয়াবরে কালো পতাকা দেখায় আসু। তেজপুরে অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ অর্ধ উলঙ্গ হয়ে প্রতিবাদ জানায়। গুয়াহাটিতে অসম সাহিত্য সভার উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা হয়। সভাপতি পরমানন্দ রাজবংশী বলেন, কেন্দ্রের চাপ অগ্রাহ্য করে গোপীনাথ বরদলৈ, বিষ্ণুরাম মেধিরা রাজ্যবাসীর অধিকার আদায় করেছিলেন। সর্বানন্দ সোনোয়ালেরও উচিত জনমত মেনে বিল সমর্থন না করা। গুয়াহাটির বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও আজ আন্দোলনে শামিল হন।