ভোটব্যাঙ্ক নন, কৃষকেরা অন্নদাতা, ফের ‘কল্পতরু’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে এলপিজি-র চাহিদা মেটাতে পারাদ্বীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ দিন বালেশ্বর-হলদিয়া-দুর্গাপুর পাইপলাইনের উদ্বোধন করে মোদী বলেন— ‘‘এটাও জাতির উদ্দেশে উপহার।’’ 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৩
Share:

পলামুতে প্রধানমন্ত্রী। এএফপি

ঝাড়খণ্ডে বাঁধ ও সেচ প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি জানালেন— কৃষকেরা তাঁর সরকারে ভোটব্যাঙ্ক নন, অন্নদাতা। আর ওড়িশায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঘোষণা করে বললেন, ‘‘এটা আমার তরফে আপনাদের জন্য নতুন বছরের উন্নয়ন-উপহার।’’ এক দিনে দুই রাজ্যে, আজ ফের ‘কল্পতরু’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে এলপিজি-র চাহিদা মেটাতে পারাদ্বীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ দিন বালেশ্বর-হলদিয়া-দুর্গাপুর পাইপলাইনের উদ্বোধন করে মোদী বলেন— ‘‘এটাও জাতির উদ্দেশে উপহার।’’

এর আগে, ২৪ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরে এসেছিলেন মোদী। সে বার সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। এর ১২ দিনের মধ্যে তাই ফের তাঁর ওড়িশা সফরের পিছনে ভোটের অঙ্কই দেখছেন বিরোধীরা। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই যে এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা! রাজনীতিক মহলের একাংশের জল্পনা, বারাণসীর বদলে এ বার পুরী থেকেও লোকসভা ভোট লড়তে পারেন মোদী। এ দিন মোদী ওড়িশায় সড়ক পরিবহণ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র, এলপিজি ও প্রাকৃতিক গ্যাসের লাইন-সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ঘোষণা করেন, রাজ্যের তিনটি প্রধান জাতীয় সড়ককে চার লেনের করা হবে। ভদ্রক, কটক, ঢেঙ্কানলের মতো ছ’টি প্রধান শহরে ডাকঘরের সঙ্গেই সমান্তরাল ভাবে চলবে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কেন্দ্র।

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশবাসী প্রশ্ন তুলুন রাফাল নিয়ে, ডাক রাহুলের

ওড়িশার মতো উনিশে বিধানসভা ভোট রয়েছে ঝাড়খণ্ডেও। সে রাজ্যের পলামু জেলার ডালটনগঞ্জের এক জনসভায় ‘কৃষক-বন্ধু’ হওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোদী নিশানা করেন কেন্দ্রে প্রাক্তন ইউপিএ সরকারকেও। কোয়েল নদীর উত্তর অংশে মণ্ডল বাঁধ ও পাঁচটি সেচ প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘মণ্ডল বাঁধ তৈরির প্রকল্প দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে আটকে। প্রকল্পের বাস্তবায়নে এত সময় লাগার কথা নয়। কংগ্রেসের এই গাফিলতি অপরাধের সমান।’’

আরও পড়ুন: জোট ঘোষণার মুখেই সিবিআইয়ের খাঁড়ার মুখে পড়তে পারেন অখিলেশ!

তাঁর দাবি, মণ্ডল বাঁধ তৈরি হলে ঝাড়খণ্ডের গঢ়বা ও পলামু জেলার কৃষকদের পাশাপাশি উপকৃত হবেন বিহারের ঔরঙ্গাবাদ ও গয়ার কৃষকেরাও। ২০২০-র মধ্যে এই বাঁধ তৈরি হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদী জানিয়েছিলেন, ঋণ মকুব কখনওই স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। আজ ডালটনগঞ্জেও ফের সে কথা বলে তিনি একহাত নেন কংগ্রেসকে। তাঁর মতে, কংগ্রেস আমলে চাষাবাদের কোনও পরিকাঠামো ছিল না বলেই চাষিরা ঋণে জর্জরিত হয়েছেন।, আজ ফের সে কথা জানান তিনি।

তাই মণ্ডল বাঁধের মতো প্রকল্প হলেই কৃষকদের আগামী কয়েকটি প্রজন্মও উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মোদী জানান, গত ৪০ বছর কৃষিকাজে জরুরি ৯৯টি প্রকল্প আটকে ছিল। তাঁর সরকার ৯০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেই সব প্রকল্প শেষ করছে। একই সঙ্গে, এ দিন ২০২২-এর মধ্যে সবার জন্য পাকা বাড়িরও প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

কংগ্রেসের কটাক্ষ ‘চৌকিদার হি চোর হ্যায়’-এর জবাবে তিনি এ দিন জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘এক জনকে তো চৌকিদারের কাজ করতেই হবে। আমি সেটাই করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন