ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের বেআইনি পরীক্ষা করার অভিযোগে গ্রেফতার। —প্রতীকী চিত্র।
চিকিৎসক সেজে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের বেআইনি পরীক্ষা করার অভিযোগ উঠল মধ্যপ্রদেশের মোরেনায়। অভিযুক্ত ওই ভুয়ো চিকিৎসককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মোরেনায় হানা দেয় মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর। ওই অভিযানে হাতেনাতে ধরা পড়েন অভিযুক্ত। ধৃতের নাম সঞ্জু শর্মা। ৩০ বছর বয়সি ওই অভিযুক্ত সে রাজ্যেরই শিক্ষা দফতরে কাজ করতেন। অভিযোগ, দফতর থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) হওয়ার পরে এই বেআইনি কাজকর্ম শুরু করেন তিনি।
মধ্যপ্রদেশের যে জেলাগুলিতে নারী-পুরুষ অনুপাত সবচেয়ে খারাপ, তার মধ্যে অন্যতম মোরেনা। ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে অন্যতম উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গোপন সূত্রে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা খবর পান, মোরেনার গাদোরাপুরা এলাকায় ভুয়ো পরিচয়ে একটি ক্লিনিক চালানো হচ্ছে। সেই খবর পেয়েই ফাঁদ পাতেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আগাম পরিকল্পনা করে এক প্রসূতিকে ওই ক্লিনিকে পাঠান তাঁরা। মহিলার সঙ্গে সাদা পোশাকের এক মহিলা কনস্টেবলকেও পাঠানো হয়। সেখানে প্রসূতির ভ্রণের লিঙ্গ পরীক্ষা করতে গিয়েই হাতেনাতে ধরা পড়ে যান অভিযুক্ত।
ওই ক্লিনিক থেকে একটি ছোট আলট্রাসাউন্ড যন্ত্রও বাজেয়াপ্ত করেছেন আধিকারিকেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্জু শিক্ষা দফতরের কর্মী ছিলেন। মোরেনার একটি স্কুলেই পিওন হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। কিন্তু বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগ ওঠায় গত বছরের নভেম্বরে চাকরি থেকে নিলম্বিত করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, তার পর থেকেই ভুয়ো চিকিৎসক সেজে ক্লিনিক খুলে বসেছিলেন তিনি। সেখানে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের বেআইনি পরীক্ষাও করা হত।
পরীক্ষায় কন্যা-ভ্রূণ পাওয়া গেলে, গর্ভপাত করানোর জন্য মোটা টাকা দাবি করা হত বলে অভিযোগ। এমনকি এই অভিযুক্ত তাঁর শাগরেদদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের ব্যবস্থাও চালু করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০০১ সালের আদমসুমারি অনুসারে, মোরেনায় প্রতি ১০০০ জন পুরুষ পিছু ৮২২ জন মহিলা ছিলেন। ২০১১ সালে নারী-পুরুষ অনুমাত কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৮৪০। আধিকারিক সূত্রে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, মোরেনার কিছু কিছু গ্রামে নারী-পুরুষ অনুপাত ৫৪১ পর্যন্তও নেমে গিয়েছে। যদিও আধিকারিকদের দাবি, বর্তমানে জেলায় নারী-পুরুষ অনুপাত বৃদ্ধি পেয়ে ৯২২ হয়েছে।