National Command Authority of Pakistan

পাক পরমাণু অস্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির বৈঠক ডাকলেন শরিফ! এ বার কি চূড়ান্ত আঘাতের প্রস্তুতি?

পাকিস্তানের সামরিক এবং অসামরিক শীর্ষকর্তাদের নিয়ে গঠিত এই কমিটির হাতেই রয়েছে পরমাণু অস্ত্র এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ১০:০৪
Share:

(বাঁদিকে) শাহবাজ শরিফ এবং জেনারেল আসিম মুনির খান (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।

পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্ব শনিবার সে দেশের ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটি (এনসিএ)-র বৈঠক হতে চলেছে। সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং আল জাজ়িরা জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আবহে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার উদ্দেশেই এই বৈঠক।

Advertisement

পাকিস্তানের সামরিক এবং অসামরিক শীর্ষকর্তাদের নিয়ে গঠিত এই কমিটির হাতেই রয়েছে পরমাণু অস্ত্র এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ়ের নেতৃত্বাধীন এই কমিটিতে তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মন্ত্রিসভার পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য (অর্থ, বিদেশ, প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র এবং শিল্প ও প্রতিরক্ষা উৎপাদন) ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার (স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা) প্রধান রয়েছেন। রয়েছেন, পাক সশস্ত্র বাহিনীর ‘জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফস কমিটি’র চেয়ারম্যান, ‘স্ট্র্যাটেজ়িক প্ল্যানস ডিভিশন’ (কৌশলগত পরমাণু হামলা সংক্রান্ত গবেষণা এবং পরমাণু অস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত)-এর প্রধান এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর ডিরেক্টর।

পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, শুক্রবার রাতে তাদের অন্তত দু’টি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় সেনা ‘ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আঘাত হানার চেষ্টা করেছে’। এই আবহে প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিতেই শাহবাজ এনসিএ-র বৈঠক ডেকেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটে ধ্বস্ত ইসলামাবাদের পক্ষে নয়াদিল্লির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক সংঘাতে যাওয়া সম্ভব নয়। আর তা বুঝেই পরমাণু অস্ত্রকে ‘তুরুপের তাস’ করছে পাকিস্তান। তাদের লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক ‘নজর’ কেড়ে আপাতত সংঘাতে ইতি টেনে মুখরক্ষা।

Advertisement

কোণঠাসা ইসলামাবাদের সামনে যে অন্য কোনও বিকল্প খোলা নেই পাক উপপ্রধানমন্ত্রী (তথা বিদেশমন্ত্রী) ইশাক দারের মন্তব্যেও তা স্পষ্ট হয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের পর নয়াদিল্লির সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটতে যে তাঁরা কার্যত বাধ্য হয়েছেন, সে কথা কবুল করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছি। ভারতের সামরিক পদক্ষেপের পর আমাদের সামনে প্রতিশোধ নেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল না।’’

তাঁর কথায়, ‘‘নুর খান বায়ু সেনা ঘাঁটিতে ভারতের হামলার পর আমাদের সামনে আর কোনও বিকল্প ছিল না। যে কারণেই সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ওদের প্রত্যুত্তর দিচ্ছি।’’ একই সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘আমরা যথেষ্ট ধৈর্য ধরেছি। কিন্তু সহ্যেরও একটা সীমা থাকে। বিশেষ করে ভণ্ডামি এবং দ্বৈত সত্তার পরিচয় যে দেশ দেয়, তাদের জন্য খুব বেশি ধৈর্য ধরা যায় না। এখনও পর্যন্ত আমরা স্বল্প এবং পরিমিত প্রত্যাঘাত করেছি। প্রয়োজনে আরও বেশি প্রত্যাঘাতের জন্য সেনা প্রস্তুত।’’

সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের এই পরমাণু-তৎপরতায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। ভারতকে পরমাণু অস্ত্রের জুজু পাকিস্তান বহু বার দেখিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের নেতা-মন্ত্রী-সেনাকর্তারা মুখে যা-ই বলুন, তাঁরাও জানেন কোনটা সম্ভব, আর কোনটা নয়। সত্যিই পরমাণু যুদ্ধ হলে পাকিস্তানের জন্য তার ফলাফল কী হতে পারে, তা ইসলামাবাদের নিয়ন্ত্রকদের অজানা নয়। তবে ভারত সরকার বা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে সতর্ক হতে হবে পাকিস্তানের বদলে যাওয়া কৌশলের কথা মাথায় রেখে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement