চিনের সেই সেনাশিবির। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
অভিযোগ উঠেছিল আগেই। উপগ্রহচিত্রে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং হ্রদের তীরবর্তী এলাকায় চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র শিবির, বাঙ্কার ও সুড়ঙ্গ নির্মাণের প্রমাণও মিলেছিল উপগ্রহচিত্রে। এ বার দেখা গেল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-র সেই এলাকায় রেডার বসিয়েছে চিনা ফৌজ। মজুত করছে ক্ষেপণাস্ত্র-সহ নানা ভারী অস্ত্রশস্ত্র এবং রসদ!
গালওয়ান উপত্যকার প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে প্যাংগং হ্রদের পূর্ব অংশে চিনা ফৌজের ওই ‘তৎপরতা’ উপগ্রহচিত্র সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই লালফৌজের শিবিরে রেডার এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসানো হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকেন্দ্র এবং বিশাল অস্ত্রগার। যা দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রস্তুতির অংশ বলেই মনে করছেন সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
২০২০-র এপ্রিলে প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার এরিয়া-৮ থেকে অনুপ্রবেশ করেছিল চিনা ফৌজ। চলে এসেছিল ফিঙ্গার এরিয়া-৪-এর কাছে। সে বছরের ১৫ জুন মাসে গালওয়ান উপত্যতায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা শুরু হয়। তারই মধ্যে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে হেলমেট টপ থেকে রেচিন লা বেশ কিছু উঁচু এলাকায় দখল নেয় ভারতীয় সেনার ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’। দফায় দফায় আলোচনার পরে ফেব্রুয়ারিতে দু’পক্ষের সেনাই মুখোমুখি অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে যায়।
এর পরে গত বছরের অক্টোবরে এলএসি-তে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র কাজ শেষ বলে জানিয়েছিল নয়াদিল্লি এবং বেজিং। তবে লাদাখের ফিঙ্গার পয়েন্ট, তবে ডেপসাং, ডেমচকের মতো কিছু ‘সংঘর্ষবিন্দুতে’ এখনও ভারতীয় এলাকার অদূরে চিনা ফৌজ ঘাঁটি গড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। এর ফলে ভারতীয় সেনা আগের মতো এরিয়া-৮ পর্যন্ত টহল দিতে পারছে না বলে অভিযোগ। বছর কয়েক আগে কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস’ যে নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ’ প্রকাশ করেছে তাতে অরুণাচল প্রদেশের পাশাপাশি লাদাখের পুরো আকসাই চিন এলাকাকেই ‘চিনা ভূখণ্ড’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।