Jagannath Dham

নিশানায় দিঘা? ‘জগন্নাথধাম’, ‘মহাপ্রসাদ’ নাম ব্যবহারে স্বত্ব পেতে আইনি পথে আবেদন করতে চান পুরী মন্দির কর্তৃপক্ষ

পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় সম্প্রতি জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে। ওই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘার মন্দিরের নামে কেন ‘ধাম’ জুড়ে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে ওড়িশা সরকার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ ১০:৩০
Share:

‘জগন্নাথধাম’ নিয়ে ওড়িশার মোহনচরণ মাঝির সরকার আগেও প্রশ্ন তুলেছিল বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উদ্দেশে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের তৈরির পর ‘জগন্নাথধাম’ নাম ব্যবহারের উপর একচ্ছত্র অধিকার পেতে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে পুরীর মন্দিরে। ওই শব্দটির উপর স্বত্ব চেয়ে আবেদন জানাতে চলেছেন পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। শুধু ‘জগন্নাথধাম’-ই নয়, ‘মহাপ্রসাদ’, ‘শ্রীমন্দির’, ‘শ্রীক্ষেত্র’, ‘পুরুষোত্তমধাম’— এই নামগুলির উপরেও স্বত্ব চাইবেন তাঁরা। শ্রীমন্দিরের চিহ্ন (লোগো)-র উপরেও স্বত্ব আবেদন জানানো হবে। সোমবার পুরীর জগন্নাথ মন্দির পরিচালন কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত ওই মন্দিরটির দ্বারোদ্ঘাটন করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, দিঘায় মন্দির তৈরি হওয়ার এক মাসের মধ্যেই ‘জগন্নাথধাম’ নাম ব্যবহারের স্বত্ব পাওয়ার তৎপরতা শুরু হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে।

পুরীর ‘শ্রীজগন্নাথ মন্দির প্রশাসনে’র মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাধি জানান, সোমবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই নামগুলির উপর স্বত্বের আবেদনের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জগন্নাথ মন্দিরের পবিত্রতা, ঐতিহ্য এবং এর অনন্য পরিচিতিকে সংরক্ষণ করতে এই আইনি ব্যবস্থার জন্য মন্দির-সম্পর্কিত শব্দগুলির স্বত্বের আবেদন করা হবে। জগন্নাথদেবের সঙ্গে সম্পর্কিত এই পবিত্র শব্দগুলিকে বাছবিচারহীন ভাবে ব্যবহার করা আটকাতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।”

Advertisement

গত মাসে অক্ষয়তৃতীয়ায় দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হয়। সেখানেও ‘ধাম’ শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। দিঘায় নবনির্মিত মন্দিরকে কেন ‘জগন্নাথধাম’ বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছিল ওড়িশা সরকারের তরফে। ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন জানিয়েছিলেন, দিঘার মন্দিরের নাম থেকে ‘জগন্নাথধাম’ কথাটি সরানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করবে ওড়িশা সরকার। হিন্দু পরম্পরা অনুযায়ী যে চারটি সর্বোচ্চ ধর্মীয় পীঠস্থান ‘ধাম’ হিসেবে চিহ্নিত, পুরী তার মধ্যে একটি। তাই দিঘার মন্দিরের নামকরণে ‘ধাম’ শব্দের ব্যবহার ভক্তদের মনে আঘাত দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন হরিচন্দন।

বস্তুত, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ার পর থেকেই ‘ধাম’ শব্দের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এমনকি পুরীর এক সেবায়েত দাবি করেছিলেন, পুরীতে জগন্নাথের নবকলেবর নির্মাণের পরে যে নিমকাঠ উদ্বৃত্ত ছিল, সেই কাঠ দিয়েই দিঘার মন্দিরের জন্য বিগ্রহ তৈরি হয়েছে। বিতর্কে ঘৃতাহুতি দেয় ওই মন্তব্য। পরে অবশ্য ওড়িশা সরকার স্পষ্ট করেছিল, এমন কিছুই ঘটেনি। ‘শ্রীজগন্নাথ মন্দির প্রশাসনে’র রিপোর্ট পাওয়ার পরে ওড়িশার মন্ত্রী হরিচন্দন জানান, নবেকলেবরে উদ্বৃত্ত হওয়া নিমকাঠ দিয়ে দিঘার মন্দিরের বিগ্রহ নির্মিত হয়নি। কেন প্রথমে এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার নামে বদনাম করলেন কেন? তা হলে কত টাকা ফাইন হওয়া উচিত?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement