ছবি: পিটিআই।
জল খানিক কমেছে। তবে এখনও বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে যমুনা। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ পুরনো রেলওয়ে ব্রিজের কাছে যমুনার জলস্তর ২০৭.৪৮ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। যার জেরে বুধবার ভোর সাড়ে ৬টা থেকে বাতিল করতে হয়েছে অন্তত ৪০টি ট্রেন। গোটা দিল্লি-এনসিআর ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে বন্যার সতর্কতা জারি হয়েছে। প্লাবিত ঘরবাড়ি, চাষজমি। কোথাও বন্যার জলে ভেসে গিয়েছে আশ্রয়শিবিরই! আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ঘরছাড়া বহু মানুষ।
অবিরাম বৃষ্টির জেরে গত দিনকয়েক ধরেই ফুঁসছে যমুনা নদী। সঙ্গে হরিয়ানার হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। ফলে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলিতে ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার যমুনা বাজার এবং লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বন্যার জল। বেশির ভাগ এলাকাতেই জল কোমর ছুঁয়েছে। ইতিমধ্যে ময়ূরবিহারের কাছে নির্মিত আশ্রয়শিবিরটিও বন্যার জলে প্লাবিত হয়ে গিয়েছে। দিল্লির প্রাচীনতম শ্মশান নিগমবোধ ঘাট কার্যত জলের তলায়। নয়ডাতেও বন্যার জলে ডুবে গিয়েছে বহু কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি। রাজস্ব বিভাগ সূত্রে খবর, ৮,০১৮ জনকে নিরাপদ তাঁবুতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ২,০৩০ জনকে ১৩টি স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালেই বিপদসীমা (২০৫.৩৩ মিটার) ছুঁয়ে ফেলেছিল যমুনার জল। বৃহস্পতিবার সকালে তা ২০৭.৪৮ মিটার রেকর্ড হয়েছে। এ ভাবে জল বাড়তে থাকলে অচিরেই ২০২৩ সালের রেকর্ড (২০৮.৬৬ মিটার) ভেঙে ফেলবে যমুনা। জল এখনও বিপদসীমার উপর থাকায় বুধবার থেকেই পুরনো রেলব্রিজ অঞ্চলে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বাতিল করতে হয়েছে ৪০টি ট্রেন। ৩৪টি ট্রেন ঘুরপথে চালানো হয়েছে, এবং ২৫টি ট্রেন সংক্ষিপ্ত পথে চলেছে বলে খবর। বৃহস্পতিবারও দিল্লি জুড়ে ধুঁকছে রেল পরিষেবা।
তবে এখনই কমছে না দুর্ভোগ। বৃহস্পতিবারও নয়াদিল্লিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। শুধু দিল্লি-এনসিআরই নয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীরেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পরিস্থিতি খুব খারাপ হরিয়ানা ও পঞ্জাবেও। গুরুগ্রামে ভারী বৃষ্টিতে বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে পঞ্জাব। সেখানে ২৩টি জেলা মিলিয়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত তিন দশকে এমন বন্যা দেখেননি পঞ্জাববাসী। বৃহস্পতিবারও সেখানে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।