(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কেনায় রুষ্ট আমেরিকা। বুধবার তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন শক্তিসচিব ক্রিস রাইটের বক্তব্য, আমেরিকা ভারতকে শাস্তি দিতে চায় না। কিন্তু বিশ্বে এত দেশ থাকতে কেন রাশিয়া থেকেই ভারত তেল কেনে, তা নিয়ে প্রশ্ন রাইটের। আমেরিকাও যে তেল বিক্রি করে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর ‘জরিমানা’ বাবদ অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। বর্তমানে আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক কার্যকর রয়েছে। যদিও জ্বালানি তেল কেনার বিষয়ে ভারতের অবস্থান শুরু থেকেই স্পষ্ট। ভারত যেখানে বেশি সুবিধা পাবে, কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকলে সেখান থেকেই তেল কেনা হবে— এ কথা সাম্প্রতিক সময়ে বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
তবে ট্রাম্পদের দাবি, ভারতকে তেল বিক্রি রাশিয়া যে অর্থ পাচ্ছে, তা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মস্কোর অর্থের জোগান বন্ধ করতেই ভারতের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছে বলে দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের। বুধবার রাইট বলেন, “আমরা ভারতকে শাস্তি দিতে চাই না। আমরা যুদ্ধ থামাতে চাই। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও বৃদ্ধি করতে চাই আমরা।”
একই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, “বিশ্বে অনেক দেশ তেল রফতানি করে। রাশিয়া থেকে তেল কেনার কোনও দরকার নেই ভারতের। রাশিয়া থেকে তেল কেনে ভারত, কারণ সেটা সস্তায় পায়। কেউ রাশিয়া থেকে তেল কিনতে চায় না। তাই ওরা ছাড় দিয়ে সস্তায় তেল বিক্রি করে।” নাম না-করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও নিশানা করেন ট্রাম্পের শক্তিসচিব। তাঁর বক্তব্য, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারত এমন একজনের হাতে অর্থ তুলে দিচ্ছে, যিনি প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছেন।
ট্রাম্পের শক্তিসচিবের কথায়, “আমরা চাই ভারত আমাদের কাছ থেকেও (তেল) কিনুক। আপনারা চাইলে বিশ্বের প্রতিটি দেশ থেকে তেল কিনতে পারেন, শুধু রাশিয়া থেকে নয়। এটাই আমাদের অবস্থান। অন্য দেশগুলির মতো আমেরিকাও তেল বিক্রি করে।”
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ থামাতে নিজের মধ্যস্থতার দাবি করেছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, তাঁর হস্তক্ষেপের সাতটি সংঘর্ষ থেমেছে। এর জন্য তাঁর নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত বলে নিজেই দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করে গেলেও, এখনও সফল হননি তিনি। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু বিবদমান দুই দেশের নেতাকে এখনও পর্যন্ত এক টেবিলে বসিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।